×

অর্থনীতি

মানুষের জীবন রক্ষাই প্রধান চ্যালেঞ্জ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২০, ১১:৩৪ এএম

মানুষের জীবন রক্ষাই প্রধান চ্যালেঞ্জ

মোস্তফা সোহরাব টিটু সভাপতি, রংপুর চেম্বার

মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু সভাপতি রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ
রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু মনে করেন, প্রবৃদ্ধি কত হলো, আগামীতে কত হবে, এসব বিতর্কের চাইতে মানুষের জীবন রক্ষাই এখন প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। পাশাপাশি অর্থনীতির চলমান সংকট থেকে উত্তরণে বাস্তবমুখী পরিকল্পনা নিতে হবে। টিকে থাকাই আমাদের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয় করে পদক্ষেপ নিতে হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাজেটের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ অর্জনের নিমিত্তে বেসরকারি বিনিয়োগে প্রাণ ফেরানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখাসহ আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসনে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা, পন্থা, অর্থের সুষম বণ্টন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক কর্মসূচি ও কৌশল এমনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে যাতে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে ইতিবাচক সুফল বয়ে আনতে পারে। বাজেট পরবর্তী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রংপুর চেম্বার সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া রংপুর অঞ্চলের দারিদ্র নিরসন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে রংপুর বিভাগের জন্য পোশাক ও কৃষিভিত্তিক শিল্প জোন গড়ে তোলার পাশাপাশি উন্নয়ন বৈষম্য দূরীকরণে রংপুর বিভাগের আট জেলার উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ রাখার পাশাপাশি এ বিভাগের শিল্পায়নে আলাদা ঋণ, কর ও ভ্যাট নীতি প্রণয়ন, রংপুরে প্রস্তাবিত স্পেশাল ইকোনমিক জোন ও আইটি পার্ক স্থাপন, উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের স্বার্থে ‘নর্থ বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট মিনিস্ট্রি’ গঠনের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত ছিল। তাই পিছিয়ে পড়া রংপুর অঞ্চলের দারিদ্র্য নিরসন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়ার যে প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে মন্তব্য করে চেম্বার সভাপতি ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বৈদেশিক উৎস, অবকাঠামো তহবিল, অবকাঠামো বন্ড ও অন্যান্য আর্থিক উপাদানের ওপর জোর দেওয়ার অনুরোধ জানান। কেননা, বেসরকারি খাত বাধাগ্রস্ত হলে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হচ্ছে। এ তহবিল হতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিদের কৃষি, মৎস্য, ডেইরি এবং পোল্ট্রি খাতে ৪ শতাংশ সুদহারে ঋণ প্রদান করা হবে। এ ছাড়া কৃষির ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, সরকারের কৃষি ভর্তুকির সুবিধা থেকে মাঠ পর্যায়ের ভুক্তভোগী ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা বরাবরই বঞ্চিত থাকে। এসব সুবিধা ভোগ করে থাকে কতিপয় মুখচেনা মানুষের হাতে। করোনাজনিত আর্থিক স্থবিরতা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা যেন প্রস্তাবিত বাজেটের সুফল পায় সেদিকে সরকারকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি। এ ছাড়া বাজেটে অ-ফসলি কৃষি পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণের জন্য বিশেষ কর্মসূচিতে অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন ছিল। কৃষির বিকাশে ই-কমার্স ইতোমধ্যেই কাজে লাগানো হয়েছে। যারা স্টার্টআপ ই-কমার্সের মাধ্যমে কৃষির বিকাশে ভূমিকা রাখছে তাদের দিকেও সরকারের মনোযোগ আকর্ষণ করছি। এ ছাড়া রংপুর বিভাগের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। তাই সংশোধিত বাজেটে রংপুর বিভাগে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প জোন স্থাপনের ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি। প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের ব্যক্তিমালিকানাধীন (প্রপ্রাইটরশিপ) যেসব ব্যবসায় বছরে তিন কোটি টাকা বা তার বেশি পণ্য বিক্রি হয়, তাদের ওপর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ ন্যূনতম আয়কর আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে লাভ- লোকসান যাই হোক, ব্যবসায়ীদের এই কর দিতে হবে। এটা কোনো স্বাধীন দেশে থাকা উচিত নয়। অর্থাৎ আপনার ব্যবসায় যদি বড় লোকসানও হয়, তবু আপনাকে আয়কর দিতে হবে। এতে বিপাকে পড়বেন মূলত বড় দোকানদার, পাইকারি ব্যবসায়ী, কোম্পানির পরিবেশক ও উৎপাদনশীল খাতের ব্যক্তিমালিকানাধীন কারখানার মালিকরা। তাই সংশোধিত বাজেটে আরোপিত শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ ন্যূনতম আয়কর রহিতকরণের আহ্বান জানান সভাপতি টিটু চৌধুরী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App