×

মুক্তচিন্তা

জোনভিত্তিক লকডাউন বাস্তবায়নে সমন্বয় জরুরি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২০, ০৭:১২ পিএম

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে এলাকাভিত্তিক যে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তা কার্যকর জরুরি। জনসংখ্যা এবং সংক্রমণের হার বিবেচনা করে রেড, ইয়েলো এবং গ্রিন জোনে ভাগ করে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলেছেন, ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটির টার্গেট ব্যর্থ হওয়ার পর এখন এলাকাভিত্তিক লকডাউন কতটা ফল দেবে তা নিয়ে তাদের সন্দেহ রয়েছে। সন্দেহের যথাযথ কারণও রয়েছে। মাঠপর্যায়ে রয়েছে দায়িত্বশীলদের সমন্বয়হীনতার অভাব। জোনভিত্তিক লকডাউন বাস্তবায়ন করতে এই বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের মূলমন্ত্র নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করে আইসোলেশন করা। নির্দিষ্ট এলাকায় সংক্রমণ অধিক মাত্রায় ছড়ালে কার্যকর লকডাউন করে ওই এলাকায় চলাচল নিষিদ্ধ করে দেয়া। অর্থাৎ ওই এলাকা থেকে কেউ বাইরে বের কিংবা প্রবেশ করতে পারবেন না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী, ন্যূনতম ২১ দিন সেই অবস্থা স্থায়ী রাখতে হবে। এই সময়ে ওই এলাকার সব মানুষের নমুনা পরীক্ষা করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশন ও তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন করতে হবে। প্রয়োজন হলে তাদের সরকার নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা দিতে হবে। বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত সফল হওয়া দেশগুলো এই পদ্ধতিই অবলম্বন করেছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অবলম্বন না করায় আমাদের দেশে ভাইরাসটি ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত সারাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ হাজার ৮৬৫ জন। প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার মানুষ। এই ভাইরাস মোকাবিলায় সরকার নানা পদ্ধতি অবলম্বন করছে। এলাকাভিত্তিক লকডাউনে প্রথম পর্যায়ে রাজধানীর রাজাবাজার ও ওয়ারী ‘রেড জোন’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদীর কয়েকটি অঞ্চলেও কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর হচ্ছে। ঢাকার পর এই জেলাগুলোতেই আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কীভাবে এই জোনগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব সে সম্পর্কে সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মানার পাশাপাশি কার্যকর লকডাউন না হওয়ায় ভাইরাসটি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে মানুষের জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি সবকিছুই চালু হয়ে গেছে। চালু হয়েছে গণপরিবহনও। এ অবস্থায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধ কীভাবে সম্ভব হবে তা নিয়ে মোটাদাগে প্রশ্ন উঠছে। আমরা মনে করি, টোলারবাগ ও মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় লকডাউন যথাযথভাবে কার্যকর করায় ওই দুই স্থানে সংক্রমণ বাড়েনি। সুতরাং টোলারবাগ ও শিবচরকে মডেল ধরে সারাদেশে এই প্রক্রিয়া চালু করা গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা এখনো সম্ভব। বিশেষ করে রেড জোনের সব বাসিন্দাকে পরীক্ষার অভিযানের আওতায় আনতে হবে। নতুন এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হলে সাপোর্টিং ম্যানেজমেন্ট যেমন- খাবার, বাজার, ব্যাংকসহ প্রয়োজনীয় বিষয় মাথায় রেখে করতে হবে। তাহলে এলাকাভিত্তিক লকডাউনের সুফল পাওয়া যাবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App