×

প্রবাস

লন্ডন হাইকমিশনে ‘মুজিববর্ষ ছয় দফা দিবসের’ আলোচনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২০, ১০:০৮ এএম

লন্ডন হাইকমিশনে ‘মুজিববর্ষ ছয় দফা দিবসের’ আলোচনা

ছয় দফা দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডনের ভার্চ্যুয়াল আলোচনা

বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডনে ‘মুজিববর্ষ ছয় দফা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে করোনা সংকট সাহসের সঙ্গে মোকাবেলার এবং বাংলাদেশের সম্মৃিদ্ধ ও প্রগতির ধারা অব্যাহত রাখার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমের সভপাতিত্বে এই বিশেষ ভার্চ্যুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য থেকে অংশ নেন মহান একুশের অমর সঙ্গীতের রচয়িতা বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতিনিধি সুলতান মাহমুদ শরীফ ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক এবং বাংলাদেশ থেকে অংশ গ্রহন করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও দি অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক, ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত। সভপাতির বক্তব্যে হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সম্মৃদ্ধ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফারই বাস্তবায়ন করেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শেই বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। বর্তমানে করোনার মহামারীর সময়েও তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবনের সাহসী ও সংগ্রামী আদর্শ নিয়েই শতাব্দীর এই ভয়াবহতম সংকট মোকাবেলা করছেন।” তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বের ফলেই করোনা সংকটের সময়েও বিশ্বখ্যাত ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিন বাংলাদেশকে বিশ্বের ৬৬টি প্রাগ্রসর অর্থনীতির মধ্যে নবম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শুধু তা-ই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে বর্তমান বিশ্বব্যাপী লক-ডাউনের মধ্যেও আমাদের কঠোর পরিশ্রমী ও দেশপ্রেমী প্রবাসী ভাই ও বোনেরা দেশে রেকর্ড পরিমাণে রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন যার ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভেও সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে। হাই কমিশনার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার প্রকৃত ইতিহাস ও এর অর্নিহিত আদর্শ সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশবাংলাদেশিদের আরো সচেতন করতে বেশী করে প্রচার ও গবেষণা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহবান জানান। তিনি ছয় দফা দিবসে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। মহান একুশের অমর সংগীতের রচয়িতা বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী ছয় দফা আন্দোলনের ঐতিহাসিক পটভূমি তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা ঘোষণা করার পরই বাঙ্গালির স্বাধীকার আন্দোলন জোরদার হয়ে ওঠে। ছয় দফাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুক্তিকামী মানুষের স্বাধীনতা সনদের সাথে তুলনা করে তিনি বলেন, পাকিস্তানী শাসকরা ছয় দফা ভিত্তিক আন্দোলনকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন হিসাবে চিহ্নিত করে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তিনি আরো বলেন, এ ছয় দফার প্রচন্ড বিরোধিতা করে তৎকালীন পাকিস্তানী শাসক আইয়ূব খান বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশে বলেছিলেন I’ll face Mujib with the language of weapons। জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন I’ll respond to the attack with the language of movements’। আইয়ূব খান পরবর্তীতে অস্ত্রের মাধ্যমে ছয় দফা-ভিত্তিক স্বাধীকার আন্দোলন দমনের ব্যর্থ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু আপোষহীন স্বাধীকার আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষের জন্য স্বাধীনতা এনেছেন, বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেন, আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কারোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবের ফলে সে অগ্রগতি ব্যাহত হয়েছে। কিন্তু আমরা আশাবাদি, বঙ্গবন্ধুর অকুতোভয় রাজনৈতিক আদর্শে লালিত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ করোনা সংকটও সফলভাবে মোকাবেলা করবে। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতিনিধি সুলতান মাহমুদ শরীফ বলেন, বঙ্গবন্ধু ছয় দফা আন্দোলন বাংলাদেশে শুরু করার পরই যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বব্যাপী বাঙ্গালির স্বাধীকার আন্দোলন জোরদার হয়ে ওঠে। সবাই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে যার ফলশ্রুতি ৭১-এর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও দি অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ৭ জুন ছয় দফা দিবস শুধুমাত্র একটি দিন নয় এটি আমাদের মুক্তির সনদ ঘোষণারও দিন। তিনি ছয় দফাকে বাঙ্গালির Magna Carta হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, ছয় দফা আন্দোলনের রক্তাক্ত পথ ধরেই ৭১-এ মুক্তিসংগ্রাম হয়েছে। আর আজ জাতির পিতার ছয় দফার আদর্শ ও চেতনা নিয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ সব ধরনের সংকট মোকাবেলা করে এবং দেশের সব সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি উন্নত দেশ গড়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশিষ্ট সাংবাদিক, ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ছয় দফার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালি জাতির মনে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের যে গভীর আকাংখা জাগিয়ে তুলেছিলেন তারই ফলশ্রুতি হচ্ছে আজকের বাংলাদেশ। তিনি ছয় দফাসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রকতৃ ইতিহাস দেশে ও বিদেশের নতুন প্রজন্মকে জানাতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান। আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য থেকে কমিউনিটি ব্যক্তিত্বদের মধ্যে আরো অংশ গ্রহণ করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। হাই কমিশনরের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে ছয় দফা দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিখিত ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত বিশেষ নিবন্ধ নিয়ে আলোচনা করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App