×

অর্থনীতি

ইতিহাসের স্বল্পতম সময়ের বাজেট অধিবেশন কাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২০, ০১:৩০ পিএম

ইতিহাসের স্বল্পতম সময়ের বাজেট অধিবেশন কাল

ফাইল ছবি

মাত্র ৮ কার্যদিবসে ১২-১৪ ঘন্টা আলোচনা করোনা প্রতিরোধে থাকছে কঠোর বিধিনিষেধ ইতিহাসের স্বল্পতম সময়ে পাশ হবে বাজেটটি প্রতিদিন রোস্টার ভিত্তিক ৭০-৮০ এমপির উপস্থিতি কালো টাকা সাদাকরাসহ থাকছে নানান সুবিধা
একাদশ জাতীয় সংসদের ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে আগামীকাল ১০ জুন বিকেল ৫ টায়। এ অধিবেশনকে ঘিরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে যথাসম্ভব জনসমাগম এড়ানোর বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন রোস্টার ভিত্তিতে কোরাম সংকট এড়াতে মাত্র ৭০-৮০ জন এমপিকে নিয়ে অধিবেশন চলবে। মাত্র ৮ দিনে মোট ১২-১৪ ঘন্টার আলোচনায় পাশ হয়ে এ বাজেট অধিবেশনটি স্বল্পতম দিন ও সময়ে পাশ হয়ে নাম লেখাবে ইতিহাসের পাতায়। এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

আর সংসদ সচিবালয়ের যথা সম্ভব কম কর্মকর্তা কর্মী এ অধিবেশন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। অধিবেশনে হাজির থাকবেন এমন প্রায় সব কর্মী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের করোনা টেস্ট করানো হয়েছে বলে সচিবালয় জানিয়েছে।আর এ বাজেটে করোনায় ধ্বংস নামা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কালো টাকা সাদা করাসহ নানা সুযোগ দেয়া হবে। ঘাটতির বাজেট হিসেবে এটা যেতে পারে শীর্ষে।

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশ নেবেন। তাদের সংস্পর্শে আসতে পারেন এমন ব্যক্তিদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার নেগেটিভ রেজাল্ট থাকতে হবে। পরীক্ষার পর থেকে তাদের কোয়ারেন্টাইনেও রাখা হয়েছে।

এবারের বাজেট অধিবেশনে সংসদ ভবনে উপস্থিত হয়ে কভারেজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না সাংবাদিকরা। করোনাভাইরাসের কারণে তাদের সংসদ টেলিভিশন দেখে সংবাদ সংগ্রহের জন্য বলেছে সংসদ সচিবালয়। কোন বিদেশি অতিথি বা কোনো ভিজিটর পাশ ইস্যু করা হচ্ছে না।

আগামী ১০ জুন বিকেলে বাজেট অধিবেশনটি শুরু হয়ে ঢাকা-৫ আসনের প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনার পর মুলতবি হবে। পরের দিন অর্থাৎ ১১ জুন বিকেল ৩টায় ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্থফা কামাল। এট পাস হবে ৩০ জুন। এ উপলক্ষে সংসদ সচিবালয় একটি দিনপঞ্জী প্রকাশ করেছে, তা থেকে জানা গেছে মোট ৮ কার্যদিবসের আলোচনায় বাজেটটি পাশ হবে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বল্পতম দিন ও আলোচনার স্বল্পতম সময়ের রেকর্ড তৈরি করবে।

এ বিষয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমনের মধ্যে বাজেট অধিবেশন শুরু হতে চলেছে। এ অধিবেশনে রোস্টার পদ্ধতিতে স্বল্প সংখ্যক মন্ত্রী এমপিকে আসার জন্য চিপ হুইপ বলেছেন। সে অনুযায়ী প্রতিদিন ৭০-৮০ জন এমপি উপস্থিথ থাকবেন। এছাড়া করোনা সংক্রমনের ঝুকি যাতে না থাকে সে জন্য বাছাই করা কর্মী ও কর্মকর্তারা এ অধিবেশনে ডিউটি করবেন। অধিবেশনটি স্বল্প দিনের হবে। আলোচনাও কম সময়ের হতে পারে। তবে সংবিধান বা বিধি মোতাবেক বাজেট পাশ করতে যা করা প্রয়োজন তা করা হবে। ১০ ও ১১ জুন বাদে বাকি দিনগুলোতে সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অধিবেশন চলবে। অধিবেশনের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এটি মুলতবি দিয়ে আগামী ৭ বা ৮ জুলাই পর্যন্ত চলবে।

এ বিষয়ে সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, বাজেট অধিবেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন। তাই আমাদের অনেক চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে যত দ্রুত সম্ভব অভিবেশন শেষ করার চেষ্টা করা হবে।

সংসদ সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে, এই অধিবেশনের মাধ্যমে যাতে করোনাভাইরাস না ছড়ায় এজন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের ১২টি সুপারিশ বা প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে প্রেরিত ১৩ দফা সুপারিশমালাও এসেছে। সেগুলোও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া মন্ত্রী এমপিদের তাদের পিএস বা এপিএসকে না নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। গাড়ি রাখার জন্য দাগ কেটে নিদ্দিষ্ট দুরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। ড্রাইভারদের নিজ নিজ গাড়িতে অবস্থান করতে হবে।

সংসদের আইন শাখা সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের বাজেট অধিবেশন ২১ কার্যদিবস চলে। মোট ২৬৯ জন সংসদ সদস্য বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে ৫৫ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট আলোচনা করেন। এর আগে এত এমপি এত সময় ধরে বাজেটের ওপর আলোচনা করার সুযোগ পাননি। আর ২০১৮ সালের বাজেট অধিবেশনের কার্যদিবস ছিল ২৫টি। ওই অধিবেশনে সম্পূরক বাজেটসহ মোট বাজেটের আলোচনায় ২২৩ জন এমপি অংশ নেন। তারা মোট ৫৫ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট আলোচনা করেন। বাজেট পাস ছাড়াও এ অধিবেশনে ১৪টি বিল পাস হয়। এবার সে সুযোগ থাকছে না। এবারের বাজেট স্বল্প দিন ও সময়ে পাশ হয়ে স্থান নিতে পারে ইতিহাসের পাতায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App