×

জাতীয়

কোটালিপাড়ায় এএসআইয়ের মারধরে যুবক নিহত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২০, ০৩:৩০ এএম

কোটালিপাড়ায় এএসআইয়ের মারধরে যুবক নিহত

নিহত নিখিলের স্বজনদের আহজারি

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল গ্রামে নিখিল তালুকদার (৩২) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২ জুন) সকালে গ্রামের রাস্তার পাশে বসে তাস খেলার সময় তাকে বেদম মারধর করা হয়।

পরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করাতে ব্যর্থ হয়ে শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। পরদিন বুধবার (৬ জুন) বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালেই তিনি মারা যান। নিখিল রামশীল গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বী নীলকান্ত তালুকদারের ছেলে। এ ঘটনায় তার পরিবারে কান্নার রোল থামছে না।

বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন গ্রামের রাস্তার পাশে তাস খেলার সময় নিখিলকে বেদম প্রহার করেছিলেন কোটালীপাড়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শামিম হোসেন। পুলিশের প্রহারে নিখিল খুন হওয়ার সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি মহল।

তবে শনিবার (৬ জুন) বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের পক্ষে অ্যাড রবীন্দ্র ঘোষ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আইজিপি/ডিআইজি/এসপি /ডিসিসহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মাইনরিটি ওয়াচের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি ও সনাতন টিভি (এসটিভি) নামে ফেসবুক পেইজে দেয়া তথ্যমতে, নিখিলকে মারধরের সময় তার ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। প্রথমে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে পুলিশ সংশ্লিষ্ট বিষয় দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ফিরিয়ে দেয়।

এরপর গুরুতর আহত নিখিলকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার কারণে তাকে অবশেষে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। তবে সেখান থেকেও যেন ফেরত আসতে না হয় সেজন্য পুলিশ কেস না বলে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নিখিল আহত হয়েছে বলে জানানো হয়। এতে কাজ হলে তাকে ঢামেকে ভর্তি করে নেয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, ঢামেকে নিখিলকে পরীক্ষা করে দেখা যায় মারধরের কারণে তার মেরুদণ্ডের হার ভেঙে গেছে। বিষয়টি কোটালিপাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানানো হলে আহতের চিকিৎসায় পাঁচ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে চান। তবে নিখিলের পরিবার তা পরিবার তা গ্রহণ করেনি। পরদিন বুধবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়।

এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, তিনি শুনেছেন কিছু লোক জুয়া খেলছিলেন। পুলিশ দেখে তারা দৌড়াতে থাকে। এরমধ্যে পুলিশ নিখিলকে ধরে ফেলে। তবে পুলিশ তাকে মারধর করেছে কিনা তা তিনি জানেন না।

কোটালিপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমান জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তকারী দল যে রিপোর্ট দেবে তার ওপর ভিত্তি করেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, পুলিশের মারধরে প্রাণহানির ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ। সেই সঙ্গে দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা ব্যাপারে শক্তিশালী তদন্ত টিম গঠন করে শাস্তির পদক্ষেপ নেবার দাবি জানিয়েছে। এছাড়া নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়াও দাবি জানানো হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App