করোনা মহামারির মধ্যে আম ব্যবসায়ীদের সবিধার্থে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী-ঢাকা রুটে চালু হলো ‘ম্যাংগো স্পেশাল’ ট্রেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে আমসহ অন্যান্য পার্সেল পরিবহনের জন্য ট্রেনটি চালু করা হয় শুক্রবার (৫ জুন) বিকেল থেকে।

পশ্চিম রেলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকশি) ফুয়াদ হোসেন আনন্দ জানান, ট্রেনটিতে মোট ছয়টি ওয়াগনের প্রতিটি ওয়াগনে ৪৫ হাজার কেজি আম বহন করা হচ্ছে। তবে শুধু আম নয়, সব ধরনের শাক-সবজি, ফলমূল, ডিমসহ কৃষি পণ্য, বাড়ির ফার্নিচার এবং রেল আইনে পার্সেল হিসেবে বহনযোগ্য সবসামগ্রী বহন করা হবে বলে জানান তিনি ।

ফুয়াদ হোসেন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যখন ঢাকা যাবে তখন ট্রেনটির নাম হবে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন-২’। আর ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফেরার পথে নাম হবে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন-১’। ট্রেনটিতে রাজশাহী স্টেশন থেকে এক কেজি আম ঢাকার বিমানবন্দর, তেজগাঁও বা কমলাপুরে নিতে খরচ পড়বে ১ টাকা ১৮ পয়সা। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এক কেজি আমের ভাড়া লাগবে ১ টাকা ৩০ পয়সা। রেলের নিয়ম অনুযায়ী ট্রেন ছাড়ার আগে যে কেউ তাদের মালামাল বুকিং দিতে পারবেন। তিনি বলেন, ট্রেনটি সপ্তাহে প্রতিদিন চলাচল করবে। প্রতিদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসবে বিকাল ৪টায়। রাজশাহী পৌঁছবে ৫টা ২০ মিনিটে। এখানে ৩০ মিনিট থেমে ৫টা ৫০ মিনিটে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করবে। এরপর ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছবে রাত ১টায়। সেখানে আম নামানোর পরে ঢাকা থেকে ট্রেনটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে আসবে। রাজশাহী পৌঁছবে সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে। এখানে ২০ মিনিট থেমে ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। পৌঁছবে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে এসে ট্রেনটি আমনূরা বাইপাস, কাঁকনহাট, রাজশাহী, সরদহ, আড়ানি ও আব্দুলপুর বাইপাস স্টেশনে থামে। এসব স্থানে আমসহ পার্সেল পণ্য ট্রেনে তোলা হয়। আমসহ এসব পণ্য টাঙ্গাইল, মির্জাপুর, কালিয়াকৈর, জয়দেবপুর, টঙ্গি, বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও এবং কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনটি থেকে নামান হবে। ফেরার পথে ট্রেনটি তেজগাঁও, টঙ্গি, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, চাটমোহর এবং রাজশাহী স্টেশনে থামবে। তবে যাত্রাপথে কোথাও সাধারণ যাত্রী এ ট্রেনে তোলা হবে না।

এর আগে করোনার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আম, লিচু ও অন্যান্য মৌসুমী ফল বিপণন এবং কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ বিষয়ে গত ১৬ মে ভিডিও কনফারেন্সে চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। সেদিনই ট্রেনে আম পরিবহনের কথা ওঠে। এর পর রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পশ্চিমাঞ্চল রেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। যার প্রেক্ষিতে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি চালু হলো।