×

জাতীয়

ঝুঁকি নিয়েই ফিরছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২০, ০৯:০৩ এএম

করোনা সংক্রমণের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামনে আরো ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে। সব জেনে বুঝেই আমরা বিপদের পথে পা বাড়াচ্ছি। আজ রবিবার (৩১ মে) থেকে খুলছে অফিস আদালত। শঙ্কার মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে মানুষ। সরকার অবশ্য স্বাস্থ্যবিধি ঠিক করে দিয়েছে। কিন্তু এতেই শেষ রক্ষা হবে কিনা সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন নিজের সুরক্ষার দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। এজন্য সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী শফিকুল ইসলাম বলেন, 'এমনিতেই আমরা অনেক ভয়ে আছি। এরপর আবার অফিস খুলে দিলো সরকার। দায়িত্বের প্রয়োজনে অফিসে তো যেতেই হবে। কিন্তু করোনা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবো কিনা, পাশাপাশি পরিবারের অন্য সদস্যদের রক্ষা করা যাবে কিনা তা নিয়েই শঙ্কায় আছি’।

গত ২৫ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। ওই দিন দেশে নতুন করে কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। ২৫ মার্চ যে ব্রিফিং করেছিল আইইডিসিআর সেখানে বলা হয়েছিল, ২৫ মার্চ কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। তবে আগে আক্রান্ত একজন মারা গেছেন। ওই দিন পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৯ জন। এখন সবকিছু খুলে দেওয়ার আগের দু’দিন অর্থাৎ ২৯ মে দেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক দুই হাজার ৫২৯ জন এবং ৩০ মে দেশে ১ হাজার ৭৬৪ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হন। ৩০ মে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৮ জন মারা গেছেন। রেকর্ড আক্রান্ত এর রেকর্ড মৃত্যুর মধ্যেই সব কিছু খুলে দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) লকডাউন তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে যেসব শর্ত পূরণের কথা বলেছিল তার একটিও পূরণ করার আগেই সব কিছু খুলে দেওয়াতে শঙ্কা আরও বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে মানুষকে অবশ্যই ব্যক্তিগত সুরক্ষার কথা চিন্তা করতে হবে। যেহেতু ঘরের বাইরে যেতে হচ্ছে তাই আক্রান্ত হলেই ভড়কে গেলে চলবে না। শরীরে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রচুর প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে সঙ্গে ভিটামিন সি খেতে হবে। যাতে করে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে।

ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ ‍মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা.এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে প্রতিটি জায়গায় আমাদের সাবধান থাকতে হবে। দরজা, দরজার হাতল, লিফটের বাটন, সিঁড়ির রেলিং এইগুলো থেকে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই এইগুলোর কোনও কিছুতে হাত দিলে অবশ্যই হাত ধুতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়ে প্রতিদিনই সরকার জানাচ্ছে কী কী করতে হবে। সে অনুযায়ী চলা খুব জরুরি। যানবাহনে, লিফটে এবং অফিসে যতটা সম্ভব দূরত্ব রেখে দাঁড়ানো, বসতে হবে। কোথাও খেতে গেলেও মানতে হবে এই দূরত্ব। মাস্ক ব্যবহার করতে হবে অবশ্যই। সব সময় সম্ভব হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা ভালো।

এদিকে শনিবার (৩০ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১২ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। এসব নির্দেশনা মেনে চলতে সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে এতে করোনা থেকে সুরক্ষা মিলবে। এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে বিশেষ প্রচার প্রচারণাও চালাচ্ছে সরকার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অফিস-আদালত খুলে যাওয়ার পাশাপাশি গণপরিবহন খুলে দেওয়ায় মানুষের যাতায়াত বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা মানুষের যাতায়াত আর সীমিত রাখা যাবে না। এটিই করোনা বিস্তারের সব থেকে বড় মাধ্যম। করোনার বিস্তার রোধে মানুষের যোগাযোগ সীমিত রাখার ওপর সব থেকে বেশি জোর দেওয়া হয়। তবে সরকার বলছে স্বাস্থ্যবিধি ঠিক রেখে চলবে গণপরিবহন। তবে সীমিত সাধ্যের মধ্যে অতিরিক্ত মানুষের ভিড় সামাল দেওয়া খুব সহজ বিষয় হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App