×

সারাদেশ

হাওরাঞ্চলে বন্ধ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২০, ০৬:৪১ পিএম

হাওরাঞ্চলে বন্ধ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল

করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব ও সঙ্কটকালীন হাওর অধ্যুষিত ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জের দুর্গম হাওরাঞ্চল ধর্মপাশা উপজেলায় গত একমাস ধরে বন্ধ রয়েছে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। এতে উপজেলার ১০ ইউনিয়নের আট হাজারের বেশি পরিবার গেল একমাস ধরে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে। তবে প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে, উপকারভোগীদের তালিকা হালনাগাদ করার কারণে সময় লাগছে।

উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ও দক্ষিণ, চামরদানী, মধ্যনগর, পাইকুরাটি, সেলবরষ, ধর্মপাশা, জয়শ্রী, সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ও দক্ষিণ এই দশটি ইউনিয়নে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগী পরিবার রয়েছে ৮ হাজার ১৭৬টি। এসব পরিবারের সদস্যদের দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে।

বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের গাবী গ্রামের রেজিয়া বানু, মঞ্জিলের মা অভিযোগ করে বলেন, ‘করোনা না বরুনা কয় এইডা আওয়ার ফরে এমনেই কষ্ট কইরা দিন খাডাইতাছি, এর মাঝে এই চাউলও দিছে বন্ধ কইর‌্যা। কোনাখানো কামকাজও করতে যাইতোও ফারিনা। কি মছিবতো যে ফরছি আল্লাহ্ ছাড়া খেউ জানে না’। (করোনা আসার পর থেকে এমনিতেই দিনকাল খুব খারাপ যাচ্ছে। কোথাও কাজেও যেতে পারিনা। পরিবারের লোকজন নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। এর মধ্যে গত মাসখানেক ধরে ১০টাকা কেজির চালও পাচ্ছি না। এ যেন মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ)।

অপরদিকে, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের রাসেল, আনোয়ারসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আমরা হাওরবাসীর বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন বোরো ফসল। যাদের জমি রয়েছে তারা এবছর ভালো ফসল পেয়েছে। আমাদের মতো যাদের জমি জমা নেই তাদের হাওরে মাছ ধরা ছাড়া বিকল্প কোনো কিছু নেই। কয়েক বছর ধরে হাওরে মাছও কমে গেছে। তাছাড়া এখন প্রশাসনের নজরদারির কারণে হাওরের মাঝখানে গিয়ে মাছ ধরা যায় না। এর মধ্যে করোনার ভয়ে সব ধরণের কাজ কাম বন্ধ হয়ে গেছে।

রাসেল, আনোয়াররা বলেন, দশ টাকা কেজির চালটা পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কোনোরকমে দিন চালিয়ে যাচ্ছিলাম। এটা বন্ধ হওয়ায় এখন খুবই কষ্টে আছি ভাই। যদি পারেন লেখা লেখি করে এটা চালু করার ব্যবস্থা করেন।

জানতে চাইলে বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার আয়ুব আলী জানান, এই কর্মসূচির আওতায় বছরে দুইবারে পাঁচ মাস সহায়তা দেয়া হয়। বছরের প্রথমটা ইতোমধ্যে দেয়া হয়ে গেছে। এরপরেও করোনা পরিস্থিতিতে দিতে পারলে হাওর এলাকার হতদারিদ্র পরিবারের লোকজন উপকৃত হতো। ডিলার আয়ুব আলী বলেন, অনেকেই বারবার যোগাযোগ করে জানতে চান আবার কবে এই কার্যক্রম শুরু হবে।

এ ব্যাপারে বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন জানান, এই মুহূর্তে কোনো খাদ্য সঙ্কট না থাকলেও কর্মসূচিটি চালু করলে এলাকার হতদরিদ্র লোকজন উপকৃত হতো।

ধরমপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনতাসির হাসান পলাশ জানান, উপকারভোগীদের তালিকা হালনাগাদ করার কার্যক্রম চলছে। প্রক্রিয়া শেষ হলেই কর্মসূচি আবারো চালু হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App