×

সম্পাদকীয়

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ যেন উপেক্ষিত না হয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২০, ০৮:৩২ পিএম

করোনা ভাইরাসের কারণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। এ ভাইরাসের উপসর্গের সঙ্গে মিল না থাকলেও রোগী ভর্তি অথবা চিকিৎসাসেবা দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিনিয়ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সাধারণ রোগীর মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি। দুঃখজনক। এমন অবস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই বিষয়ে বারবার হাসপাতালগুলোকে মৌখিকভাবে বলে আসছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীও অনুরোধ করেছেন যেন সাধারণ রোগীরা চিকিৎসাসেবা পান। কিছুতেই যেন কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করছেন না। বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে করোনাসহ সব ধরনের রোগীকে আলাদা ইউনিটে চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে এই চিঠি দেয়া হয়েছে। একইভাবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের সংগঠনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। চরম সংকটে এই নির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে হাসপাতালগুলোর আন্তরিকতার দরকার, পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও মানবিক আচরণ আমরা দেখতে চাই। জানা গেছে, দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ডায়ালাইসিসসহ চিকিৎসা গ্রহণ করা রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। হৃদরোগ কিংবা কিডনি রোগে ভুগলেও মিলছে না চিকিৎসা। এমন পরিস্থিতিতে অনেক রোগী এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছোটাছুটি করতেই প্রাণ হারাচ্ছেন। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য মতে, দেশে সরকারি হাসপাতাল রয়েছে ৬৫৪টি এবং এসব হাসপাতালে মোট শয্যার সংখ্যা ৫১ হাজার ৩১৬টি। আর বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে ৫ হাজার ৫৫টি, যেখানে মোট শয্যার সংখ্যা ৯০ হাজার ৫৮৭টি। বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে অনুমিত জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৪৬ লাখ। সেই হিসাবে প্রতি ১ হাজার ১৫৯ জন ব্যক্তির জন্য হাসপাতালে একটি শয্যা রয়েছে। দেশের চরম সংকটে এসব হাসপাতালের ভ‚মিকা কী তা প্রশ্ন জাগছে আমাদের মনে। চিকিৎসা পেশাটি রাষ্ট্রের অন্যান্য পেশার তুলনায় অনেক বেশি সম্মানের। এটা পেশা হলেও, চিকিৎসকরা মানুষের জীবন রক্ষায় কাজ করেন বলে এটি মানবসেবার একটি অংশও বটে। কিন্তু আজকাল এ পেশার চিকিৎসকের আচরণে মানবিকতার বলাই নেই বললে চলে। চিকিৎসকদের মাঝে নীতিনিষ্ঠা, মানবিকতা, সদাচার, কর্তব্যপরায়ণতা এসব গুণের বেশি জারি হওয়ার কথা। এ দেশের অনেক চিকিৎসক এমনটাই। কিন্তু করোনা আতঙ্কে চিকিৎসক ও নার্সদের একটি বড় অংশ সব ধরনের চিকিৎসাসেবা থেকে নিজেদের বিরত রেখেছেন। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) স্বল্পতা এবং সাধারণ রোগীরা যে করোনা আক্রান্ত নন, তা নিশ্চিত না হওয়ার কারণেই মূলত হাসপাতালগুলোতে এমন সংকট সৃষ্টি হয়েছে এমনটি মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নার্স-চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর বিষয়ে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের এই সংকটে রোগীদের প্রতি মানবিক হবেন এমনটাই প্রত্যাশা রাখছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App