×

সারাদেশ

করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর ওরা!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২০, ০৬:১৭ পিএম

করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর ওরা!

সেলিনা আক্তার ঘর থেকে দেখতে পাচ্ছেন সবকিছু। বের হতে পারছেন না। ছবি: প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার বাক্তা বাজারে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন শিক্ষক ইউছুফ আলীর পরিবার। পরিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের কারণে তার পরিবারকে গৃহবন্দী করা হয়েছে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। কেটে দেয়া হয়েছে পানি ও বিদ্যুতের সংযোগ। বাসায় পানি নেই, প্রাকৃতিক কর্ম সারার কোনোও ব্যবস্থা নেই। শোবার ঘরেই প্রাকৃতিক কর্ম সারতে হচ্ছে তাদের।

ইউছুফ আলীর স্ত্রী সেলিনা আক্তার জানান, দুদিন ধরে চাচাতো ভাই-বোনেরা আমাকে ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছে না। তারা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। বাসায় পানি নেই। প্রস্রাব-পায়খানা করার কোনো ব্যবস্থা নেই। ঘরেই প্রস্রাব-পায়খানা করতে হচ্ছে।

সেলিনা আক্তার আরো অভিযোগ করেন, আমার কাছে তারা কাউকে আসতে দিচ্ছে না। আমাকে তারা বের হয়ে চলে যেতে বলে। কিন্তু এখান থেকে বের হলেই তারা বাসা দখল করে নেবে। আমার দুটি সন্তান তারা আমার জন্য কান্নাকাটি করছে। কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।

স্থানীয়রা জানান, বাক্তা বাজারের মৃত সাহেব আলী মাস্টারের ৫ মেয়ের একজন সেলিনা আক্তার। বাবা মারা যাওয়ার পর পরই পাঁচ বোন তাদের হিৎস্যা অনুযায়ী পাওনা বুঝে নেন। তাদেরই একজন সেলিনা তার বাবার পৈত্রিক সম্পত্তিতে ফাউন্ডেশন দিয়ে ঘর তৈরি করেন। এখন প্রথম তলার কাজ শেষ করে। এই সময়ে এসে তার জ্যাঠা, চাচা ও তাদের সন্তানেরা মিলে তার কাজে বাধা দিচ্ছেন।

সেলিনা আক্তার জানান, স্থানীয়ভাবে মিমাংসা না হওয়ায় সেটি মামলা পর্যন্ত গড়ায়। মামলায় একজন আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে ওই আসামিসহ বাকিরা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালায়। তবে স্থানীয়রা জানান, সেলিনা আক্তারের দাবি যৌক্তিক। পারিবারিকভাবে যারা বাধা দিচ্ছি, তারা বেআইনিভাবে সেলিনা আক্তারকে ঘরে বন্দি করে রেখেছে। দুদিন ধরে তাকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে ওই শিক্ষক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

অনেকেই বলছেন, করোনার কারণে এমনিতেই মানুষ ঘরবন্দী। তার ওপর এভাবে নিজ পরিবারের কাউকে এভাবে বন্দী করে কষ্ট দেয়া অমানবিক। ওরা তো করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর।

সেলিনা আক্তারকে গৃহবন্দী করা তার চাচাতো ভাইবোনের প্রশ্ন, চাচার সম্পত্তির ভাগ কন্যারা পেলে, আমরা (চাচাতো ভাই-বোন) কেন পাবো না? জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি মুঞ্জুরুল হক মুঞ্জু বলেন, বিষয়টি আমরা স্থানীয়ভাবে সমাধান করার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।

ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) শেখ জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, গৃহবন্দীর ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App