×

জাতীয়

সিনিয়র ডাক্তাররা লাপাত্তা, বিধ্বস্ত চিকিসাব্যবস্থা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২০, ০৭:১৯ পিএম

সিনিয়র ডাক্তাররা লাপাত্তা, বিধ্বস্ত চিকিসাব্যবস্থা

মহানগর হাসপাতাল

সিনিয়র ডাক্তাররা লাপাত্তা, বিধ্বস্ত চিকিসাব্যবস্থা

ফাইল ছবি।

করোনা আক্রান্ত হয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশন চালিত ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতালের বেশ কয়েকজন নবীন চিকিৎসক।

হাসপাতালের জুনিয়র নার্স ও স্টাফদের অভিযোগ, হাসপাতালে ৮ জন মেডিকেল অফিসারসহ মোট ১৪ জন চিকিৎসক। হাসপাতালের সিনিয়র তিনজন মেডিকেল অফিসার, আবাসিক চিকিৎসক ও পরার্মশক ঠিকভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছেন না। মাত্র ৫ জন জুনিয়র মেডিকেল অফিসার গত দুইমাস ধরে ৮০ ভাগ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিল। যদিও এই করোনা মহামারির সময় সকল মেডিকেল অফিসারের নিরাপত্তার স্বার্থে সকলের সমান সংখ্যক ডিউটি করার নির্দেশনা ছিল। টানা প্রায় ১৮-২০ ঘন্টা হিসাবে মাসে প্রায় ২১/২২ টা ডিউটি পালন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন চিকিৎসকেরা। অনেকে করোনায় আক্রান্তও হয়েছেন।

হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ২১ মে মহানগর জেনারেল হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। পরে আবস্থার অবনতি হলে ২২ মে কুয়েত মৈত্রী তে ভর্তি করানো হয়।

ডা. জান্নাতের এক আত্মীয় জানায়, এই সময় হাসপাতালের পরিচালক জান্নাতকে ছুটি দিতেও অস্বীকৃতি জানান। এছাড়া ওই হাসপাতালের একজন নার্সের করোনার উপসর্গ দেখা দিলেও পরিচালক তার টেস্টের রেজাল্ট না আসা পর্যন্ত ডিউটি করতে বলেছেন। ওই নার্স ডা. জান্নাতের সংস্পর্শে কাজ করেছিলেন। পরে ওই নার্স করোনা আক্রান্ত বলে রেজাল্ট এসেছে। অথচ এর মধ্যে তিনি অনেক রোগীকেও দেখেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একজন মেডিকেল অফিসার বলেন, ডা জেসমিন আক্তার, ডা ওয়াহিদা জাহান ও ডা ফারহানা আহামেদ এই তিন জন সিনিয়ার মেডিকেল অফিসার গত দুই মাসে মাত্র ৭/৮ দিন হাসপাতালে এসেছিলেন। শুধুমাত্র সকালে। তাও শুধু উপস্থিতির খাতায় স্বাক্ষর করতে। আবাসিক চিকিৎসক ডা. কামারুজ্জামান মো. আলীর প্রতিদিন আসা বাধ্যতামুলক এমনকি তার ইভনিং রাউন্ড দেয়ার নিয়ম থাকলেও তিনি গত দুই মাসে মাত্র ছয়দিন শুধুমাত্র সকালে উপস্থিত ছিলেন। পরামর্শকদের ডা. ইসারাত জাহান, ডা. হাবিবুর রাহমান (শিশু মেডিসিন), ডা. হামিদা খাতুন (প্যাথলজি), ডা. নিশাত পারভিন (রেডিওলজি) নিয়মিত উপস্থিতি না থাকায় হাসপাতালের এক্সরে ও প্যাথলজি পরীক্ষাও বন্ধ ছিল। এভাবে হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। ডিজিটাল ফিংগারপ্রিন্ট উপস্থিতি এখন বন্ধ, এই সু্যোগে রেজিস্ট্রার খাতায় এক দিন এসে পুরো সপ্তাহের উপস্থিতির স্বাক্ষর করে যাচ্ছেন তারা। হাসপাতালের পরিচালকের প্রচ্ছন্ন সম্মতিতেই তারা এসব করার সাহস পাচ্ছেন।

হাসপাতালের একজন নার্স বলেন, ডা. বিজয় কর্মকার, ডা. নিলারা সুলতানা, ডা. সুমাইয়া হোসেন, ডা. আলি হাসান ও ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস মিলে গত দুই মাস ধরে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যাবস্থা ধরে রেখেছেন। এখন ডা. জান্নাত অসুস্থ হয়ে গিয়ে শুধু চারজন মিলে ডা. জান্নাতের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনসহ পুরো হাসপাতালের চিকিৎসার ৮০ ভাগ দায়িত্ব পালন করছেন।

এই বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. আহমেদ কুদরতে খোদাকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App