×

জাতীয়

তাদের কারণেই আমি শান্তির মৃত্যু পেতে যাচ্ছি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২০, ০২:১৩ পিএম

তাদের কারণেই আমি শান্তির মৃত্যু পেতে যাচ্ছি
সিঙ্গাপুরের মৃত্যু পথযাত্রী প্রবাসী শিপইয়ার্ড কর্মী সিকদার রানা (৩৪)। পেটের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত মাসে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে (এসজিএইচ) ভর্তি হন। এসময় তার শরীরিক অবস্থার অবনতি হলে সে তার জীবনের শেষ সময়টুকু দেশে ফিরে তার সন্তান ও পরিবারের সাথে কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয়। প্রাথমিকভাবে ১৯ মে তিনি ফ্লাইটে যাওয়ার কথা থাকলেও ১৪ ই মে বাংলাদেশে লকডাউন বাড়ানোর সাথে সাথে ঢাকার সমস্ত ফ্লাইট বাতিল করা হয়। ফলে অনিশ্চয়তার মুখে পরে সিকদারের দেশে ফেরা। তবে তাঁর ডাক্তাররা ৩০ মে পর্যন্ত টিকতে পারবেন না বলে আশঙ্কা করছিলেন। সিঙ্গাপুর জাতীয় ক্যান্সার কেন্দ্রের সহায়ক ও উপশম যত্ন বিভাগের সিনিয়র পরামর্শক গত সপ্তাহে তার এসজিএইচ সহকর্মীদের কাছ থেকে সিকদারের দুর্দশার কথা শুনেছিলেন। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানেন যে, বাংলাদেশে একটি মেডিক্যাল ইকোভিয়েশন ফ্লাইটের জন্য প্রায় ৫৫ হাজার ডলার ব্যয় হবে এবং তা পরের মাসের প্রথমদিকে পাওয়া যেতে পারে।এসময় সিকদারের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছিল। তারা তাকে দ্রুত বাড়ি ফেরাতে চেষ্টা চালাচ্ছিল।এরই মধ্যে তিনি জানতে পারেন যে তার চিকিত্সা করা সম্ভব হচ্ছে না। এসময় তিনি আনেকটাই ভেঙে পরেন। ডাঃ গোহ স্ট্রেইট টাইমসকে বলেছেন "বাংলাদেশে লক ডাউন শিথিল হওয়া পর্যন্ত তার বেঁচে থাকার সম্ভবনা কম। তাই আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর একটি উপায় খুঁজছিলাম। পরে, গত বৃহস্পতিবার ডাঃ গোহকে দেশটির জনশক্তি মন্ত্রক, জাতীয় বাণিজ্য ইউনিয়ন কংগ্রেস এবং নিয়োগকারীরা সমর্থিত একটি অভিবাসী-শ্রমিক কল্যাণ সংস্থা, অভিবাসী শ্রমিক কেন্দ্রের (এমডাব্লুসি) কাছে পাঠায়। জাতীয় কাউন্সিল অফ সোসাল সার্ভিসের সভাপতি অনিতা ফেম এবং এমডাব্লুসিটির চেয়ারম্যান ইয়ে গুয়াত ক্লাং তাদের ব্যক্তিগত সক্ষমতা থেকে তাকে দেশে পাঠানোর ব্যয় ভার বহন করতে সম্মত হন। একই সাথে তারা সিকদারের জন্য একটি ফান্ড গঠনের জন্য উদ্যোগ গ্রহন করে এবং ৬০০০০ ডলার সংগ্রহ করে। গত শুক্রবার রাতে সিকদার ঢাকায় ফেরেন এবং সোমবার তিনি স্ত্রী, মা ও ছেলের সাথে বাড়িতে ঈদ উদযাপন করেছেন। সিকদার বলেন: এটি সম্ভবত আমার শেষ ঈদ। অবশেষে আমি আমার মায়ের খাবারের স্বাদ পেতে পেরেছি। মনে হয় আমি স্বর্গে আছি। আমি জানি না কত লোক এতে জড়িত ছিল আমাকে সহায়তা করা প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাই। তাদের কারণে আমি আমার ছেলের সাথে আছি এবং তাদের কারণেই আমি শান্তিপূর্ণ মৃত্যু পেতে যাচ্ছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App