×

সাহিত্য

৫০ মিনিটের ‘জাগো অমৃত পিয়াসী'

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২০, ০৭:৩৬ পিএম

৫০ মিনিটের ‘জাগো অমৃত পিয়াসী'

কাজী নজরুল ইসলামের ১২১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন

কথামালা, গান, কবিতা, আবৃত্তি ও নৃত্যের মধ্য দিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সোমবার (২৫ মে) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিটিভিসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে নজরুল জয়ন্তী উপলক্ষে নির্মিত বিশেষ অনুষ্ঠান ‘জাগো অমৃত পিয়াসী’ সম্প্রচারের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বাণী সম্প্রচার করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, বিদ্রোহী কবির জীবনাদর্শ অনুসরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শান্তিপূর্ণ, সুখী-সমৃদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, নজরুল যে অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন তারই প্রতিফলন আমরা পাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সংগ্রাম ও কর্মে। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে নজরুলকে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে আনা হয়। পরে তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, অসামান্য ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কবি নজরুলের আজীবন সাধনা ছিল সমাজের শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি এবং মানুষের সামাজিক মর্যাদার স্বীকৃতি অর্জন। তার সাহিত্যকর্মে উচ্চারিত হয়েছে পরাধীনতা, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের বাণী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নজরুলের ক্ষুরধার লেখনি যেমন ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলো, তেমনি তাঁর বাণী ও সুরের অমিয় ঝর্ণাধারা সিঞ্চিত করেছে বাঙালির হৃদয়কে। ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় কবির বলিষ্ঠ উচ্চারণ, ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরি, আর হাতে রণ-তূর্য’। নজরুল প্রকৃতই প্রেমের এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে মানবতার জয়গান গেয়েছেন, নারীর অধিকারকে করেছেন সমুন্নত। তিনিই প্রথম বাঙালি কবি যিনি ব্রিটিশ অধীনতা থেকে ভারতবর্ষকে মুক্ত করার জন্য স্বরাজের পরিবর্তে পরিপূর্ণ স্বাধীনতার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, নজরুল সকল জাতি ধর্ম ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছিলেন সাহসের প্রতীক। কবি নজরুল তার প্রত্যয়ী ও বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে এদেশের মানুষকে মুক্তি সংগ্রামে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করেছিলেন। তার সাহিত্যের বিচিত্রমুখী সৃষ্টিশীলতা আমাদের জাতীয় জীবনে এখনো প্রাসঙ্গিক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় কবির জীবনাদর্শ একই দর্শনের ধারাবাহিক রূপ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কবি নজরুলের সাহিত্য ও সংগীত শোষণ, বঞ্চনা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে মুক্তির দীক্ষাস্বরূপ। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি ও সাংস্কৃতিক সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি কাজী নজরুলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুভেচ্ছা বাণী দেন। কবি মুহম্মদ নুরুল হুদার উপস্থাপনায় নজরুল ইনস্টিটিউটের শিল্পীরা অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নৃত্যশিল্পী ওয়ার্দা রিহাবের নির্দেশনায় জনপ্রিয় নজরুল গীতি `শঙ্কাশূন্য লক্ষ কণ্ঠে বাজিছে শঙ্খ ঐ','সঙ্গ শরণ তীর্থযাত্রা- পথে এসো মোরা যাই', 'খর স্রোতজলে কাদা-গোলা বলে গ্রীবা নাড়ে তীরে জরদ্গব (যৌবন-জল-তরঙ্গ)' ও 'মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম, মোরা ঝর্ণার মত চঞ্চল' এর সাথে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউট এর নৃত্যশিল্পীবৃন্দ। এরপর যথাক্রমে শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল এর কণ্ঠে 'ওঠরে চাষী জগতবাসী, ধর কষে লাঙল', শিল্পী সালাউদ্দিন আহমেদ এর কণ্ঠে 'হে নামাজী! আমার ঘরে নামাজ পড় আজ' ও শিল্পী ইয়াকুব আলী খান এর কণ্ঠে 'নয়নে নিদ নাহি, নিশীথ প্রহর জাগি, একাকিনী গান গাহি' শীর্ষক একক নজরুল গীতি পরিবেশিত হয়। নজরুলের আরেকটি বিখ্যাত গান 'তোরা সব জয়ধ্বনি কর' সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন। এছাড়া চির নমো নমো বাংলাদেশ মম আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফ। অনুষ্ঠানে খিলখিল কাজী ও কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর রফিকুল ইসলামও শুভেচ্ছা বাণী দেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App