চৌগাছার শীর্ষসন্ত্রাসী শামীম গণপিটুনিতে আহত
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২০, ১২:৪৬ পিএম
চৌগাছার শীর্ষ সন্ত্রাসী শামীম কবির ওরফে কিলার শামীম গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রোববার (২৪ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে শামীম ওরফে কিলার শামীমের নেতৃত্বে একটি বাহিনী ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিনের ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার ও দুটি মটরসাইকেলে চড়ে চৌগাছা পৌরসভার কুটিপাড়া মোড়ে যুবলীগ নেতা মমিনের ওপর আক্রমণ করতে আসে। এসময় মমিনের লোকজন রুখে দাঁড়ালে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনায় দুইজন আহত হয়। আহত দুজনকেই প্রথমে চৌগাছা হাসপাতালে এবং পরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজিব বলেন ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
শামীম কবির ওরফে কিলার শামীম আলোচিত যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিল্লুর রহমান মিন্টু, শিশু সৌরভ হত্যাসহ ৬ টি হত্যা মামলাসহ ১৭ টি মামলার আসামি। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তালিকাভূক্ত শীর্ষ এ সন্ত্রাসী কিছুদিন আগে আদালতে আত্নসমর্পণ করে। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে নিজ গ্রামেই অবস্থান করছিল।
এদিকে শামীম ওরফে কিলার শামীমের গণপিটুনিতে আহত হওয়া এবং তার দখলে থাকা বিপুল অস্ত্র ভাণ্ডার উদ্ধার না হওয়া সব কিছু মিলিয়েই আতঙ্কিত উপজেলাবাসী। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যে কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন উপজেলাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো জানাযায়, ১৯৯৬ সালে সরকার পরিবর্তন হলে যশোরের সাতমাইলের মিয়া বাহিনী প্রধান মোখলেসুর রহমান নান্নু ওরফে কিলার নান্নুর তত্বাবধায়নের চৌগাছায় শামীম কবীর ওরফে কিলার শামীমের নেতৃত্বে বিশাল এক ক্যাডার বাহিনী গড়ে ওঠে। শামীম বাহিনী রাতকে দিন আর দিনকে রাত বানাতে থাকে। প্রতিনিয়ত তাদের অত্যাচারে উপজেলার মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। ১৯৯৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্যে দিনের বেলা চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মকবুল মেম্বরকে কুপিয়ে হত্যা করে তাদের বাড়ি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঐ একই বছর ১১ এপ্রিল খেলার ছলে বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ের গার্ড শহিদুল ইসলামকে হত্যা করে। শহিদুল ইসলামকে হত্যা করে তার লাশ থেকে নাড়িভুড়ি আলাদা করে বাওড়ের পানিতে ভাসিয়ে দেয়। ২০১২ সালে চাঁদার দাবিতে গরীবপুরের স্বপন সাহার চতুর্থ শ্রেণীর স্কুল ছাত্র সৌরভকে অপহরণ করে। সৌরভের পিতা চাঁদা না দেওয়ায় তাকে হত্যা করে।
২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সিংহঝুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিল্লুর রহমান মিন্টুকে প্রকাশ্য দিনের বেলা শতশত মানুষের সামনে গুলি করে হত্যা করে শামীম। এঘনায় তার সাথে যশোর সদরের মোখলেসুর রহমান নান্নু বেনাপোলের আমিরুল ইসলামসহ আরো কয়েকজনের নামে মামলা হয়।
মামলাটি বর্তমানে যশোর আদালতে বিচারাধীন আছে। এর আগে র্যাব সদ্যস্যরা শামীমকে অস্ত্রসহ আটক করে। সে মামলায় যশোর আদালতে তার ১৭ বছর কারাদণ্ড হয়। বর্তমানে মামলাটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন আছে।
শামীম ওরফে কিলার শামীম বেশ কিছুদিন আগে থেকে আবারো সক্রিয় হয়ে উপজেলার বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগ্রহ করেই গতকালের হামলা চালায় বলে জানাগেছে। মমিনের উপর হামলার সময় শামীমের সাথে থাকা সন্ত্রাসীদেরকে স্থানীয়রা চিনেছেন বলেও জানিয়েছের স্থানীয় কাউন্সিলর শাহিনুর রহমান শাহিন। পুলিশের সতর্ক অবস্থার কারণে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেই জানিয়েছেন ওসি রিফাত খান রাজীব।