কাজের লোক-ড্রাইভার থেকে এস আলম গ্রুপে করোনা!
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ মে ২০২০, ০৯:২৯ এএম
এস আলম গ্রুপে করোনা।
দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্প গ্রুপের অন্যতম এস আলম। ব্যাংকখাত থেকে শুরু খাদ্যপণ্য, সিমেন্ট, ইস্পাত, পরিবহন, শিপিং, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কৃষি, তেল, গ্যাসসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই গ্রুপের অধীনে। তিলে তিলে এসব প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান গড়ে তোলার কারিগর একজনই, তিনি সাইফুল আলম মাসুদ।
দেশের অর্থনীতির সমৃদ্ধিতে বৃহত্তর পরিসরে অবদান রাখা এই পরিবারের ৬ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অথচ সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরেই অবস্থান করছিলেন তারা। ঘর থেকে বের না হওয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগের।
গত রবিবার রাতে এই পরিবারের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে সাইফুল আলম মাসুদের ৫ ভাই ও এক ভাইয়ের স্ত্রীর করোনা পজিটিভ আসে। এমন সতর্কতার মধ্যেও তারা কিভাবে করোনায় আক্রান্ত হলেন, সবার মনেই উঁকি দিচ্ছে এই প্রশ্ন।
জানা গেছে, এস আলম পরিবারের করোনা আক্রান্ত সবাই সরকার ঘোষিত ২৫ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলাকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার সুগন্ধা আবাসিকের বাসাতেই ছিলেন।
এই পরিবারের সাত ভাই নিজেদের পরিবার নিয়েই থাকেন সুগন্ধা আবাসিকের ৭ তলা ওই ভবনে। এই পরিবারের ছায়া পিতৃতুল্য বড় ভাই সাইফুল আলম মাসুদই। ভাইয়ের আদরে থাকতেই এখনো একান্নবর্তী পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন সবাই মিলে। এখনো এই পরিবারের খাবার রান্না হয় এক রান্নাঘরের একই হাঁড়িতে। পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৩০ জনের বেশি। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে থাকা এই পরিবারের সদস্যদের করোনা আক্রান্ত হওয়া নিয়ে হিসেব মিলাতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরাও।
তবে এস আলমের পারিবারিক একটি সূত্র বলছে, পরিবারের বাজার সদাই করতে গৃহকর্মী, দারোয়ান এবং গাড়ির চালকদের ঘরের বাইরে যাতায়াত ছিল। তাদের সংস্পর্শে এসেই মূলত তারা করোনা শিকার।
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের ব্যক্তিগত সহকারী আকিজ উদ্দিন বলেন, ‘স্যাররা একান্নবর্তী পরিবার। সবার গৃহকর্মী ও গাড়ি চালক মিলে প্রায় অর্ধশত মানুষ ঘরে থাকেন। তাদের অনেকেই নিজেদের বাসা থেকে গিয়েও কাজ করেন। বাজার সদাই করেন কাজের লোকেরা। তাদের এই আসা যাওয়াতেই স্যারের পরিবারের সদস্যা আক্রান্ত হয়েছেন বলে আমাদের ধারণা।’
তিনি আরো বলেন, ‘আক্রান্তদের কারো কারো শরীরে হালকা জ্বর দেখা দেওয়ায় ১৬ মে পরিবারের ৬ সদস্য করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। পরদিন রাতে পাওয়া নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে সবার করোনা পজিটিভ আসে।’
জানা গেছে, তাঁদের কারো শরীরে জ্বর বা অন্য কোনো উপসর্গও নেই। সবাই এখন সুস্থ আছেন। তারা বাসাতেই আইসোলেশনে আছেন।