×

পুরনো খবর

সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ়ের আহ্বান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ মে ২০২০, ১০:৩৫ পিএম

আজ পশ্চিম আকাশে শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল ঈদ, না দেখা গেলে সোমবার ঈদ উদযাপিত হবে। বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। এক মাস কঠিন সংযম সাধনার পর এক অনাবিল আনন্দের মহাসম্মিলন ঘটে ঈদে। ঐক্যের পথে, কল্যাণের পথে, ত্যাগ ও তিতিক্ষার মূলমন্ত্রে দীক্ষিত করে ঈদুল ফিতর। বিশ্বজুড়ে মুসলিম সমাজে এ উৎসব আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হয়। তবে এবার ভিন্নভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে মাস্ক পরে আদায় করার জন্য অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এছাড়া মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পরের হাত মেলানো পরিহার করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে। প্রত্যাশা থাকবে, নিজেদের সুস্থতায় আমরা এই নির্দেশ মেনে চলব। বাঙালি মুসলিম জীবনে ঈদ শুধু ধর্মীয় উৎসব হিসেবে আসে না, এটা হয়ে পড়ে সর্বজনীন আনন্দ উদযাপনের উপলক্ষ, যার দৃষ্টান্ত বিশ্বে বিরল। এ দিনে সবাই সজ্জিত হন নতুন পোশাকে, সবার ঘরেই থাকে বিশেষ খাবার-দাবারের আয়োজন। পাড়া-মহল্লায় থাকে নানা আনন্দ আয়োজন। ঈদের আনন্দে সবার সমান অংশগ্রহণ থাকার কথা থাকলেও তা হয়ে ওঠে না বৈষম্যের কারণে। আমাদের দেশে দিন দিন ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়ছে। এ বৈষম্য যে কোনো সর্বজনীন উৎসবের আনন্দকে ক্ষুণœ করে। আমরা লক্ষ করি, একদিকে এক শ্রেণির মানুষ অঢেল সম্পদের মালিক আর আরেক শ্রেণি বিত্তহীন। বিত্তহীন অনেক পরিবারের সদস্যরা তিনবেলা ভালোমতো খেতে পর্যন্ত পান না আর বিত্তবানরা অপ্রয়োজনীয় ব্যয়বাহুল্যের মধ্য দিয়ে দৃষ্টিকটুভাবে অর্থ-বিত্তের প্রদর্শন ঘটান। ঈদুল ফিতরের সবচেয়ে উজ্জ্বল দিক হলো, সামর্থ্যবানদের দ্বারা ফিতরা সদকার মাধ্যমে গরিবের হক আদায় করা। ঈদের নামাজ আদায়ের আগেই ফিতরা দেয়ার নিয়ম। ফিতরার উদ্দেশ্য, দারিদ্র্যের কারণে যাতে কেউ আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়, তার নিশ্চয়তা বিধান করা। সচ্ছলরা সঠিক নিয়মে জাকাত-ফিতরা দান করলে দরিদ্ররাও ঈদের খুশির ভাগ পেতে পারে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়েছেন দেশের অধিকাংশ শ্রমজীবী মানুষ। কর্মহীন হয়ে পড়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। এ অবস্থায় তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় কম। সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের এই সংকটে এগিয়ে আসা জরুরি। বাংলাদেশে ঈদ উদযাপনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো যে যেখানেই অবস্থান করুন ঈদের সময় নিজ নিজ পরিবার-পরিজনের সান্নিধ্যে যাওয়া। সরকার এবার ঈদে যে যেখানে আছে সেখানে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। সরকারের এই নিষেধ অমান্য করে বিভিন্ন কৌশলে মানুষ ঘরমুখো হয়েছে। এতে করে সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে। সতর্কতা অবলম্বন করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সুস্থভাবে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হোক এই আমাদের কামনা। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App