×

সারাদেশ

আমফান আতংকে বেতাগীর নদীপাড়ের মানুষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২০, ০২:৫৭ পিএম

আমফান আতংকে বেতাগীর নদীপাড়ের মানুষ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ ক্রমাগত শক্তি বৃদ্ধি করে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এরই মধ্যে পায়রা এবং মংলা সমুদ্রবন্দরে ০৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। ঝুকিপূর্ণ উপকূলীয় জেলা বরগুনার অবস্থান পায়রা এবং মংলা সমুদ্রবন্দরের মধ্যখানে হওয়ায় এ জেলায় ছয় উপজেলার মানুষের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আমফানকে ঘিরে আতংক বিরাজ করছে। বিশেষকরে বিষখালী নদীর কোলঘেঁষে গড়ে ওঠা বেতাগী উপজেলার মানুষ রয়েছে চরম আতংকে। স্থানীয়রা জানান, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বরের ‘সিডর’ এর সেই ভয়াল থাবায় কথা স্মরণ করেন এই এলাকার মানুষ । বিশেষ করে বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি, কালিকাবাড়ি, বদনিখালি ও ছোট মোকামিয়া এলাকার প্রায় ১৩-১৫ গ্রাম খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেখানে সিডরে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। এরপর আইলা, রেশমীসহ আরও অনেক দূর্যোগের স্বীকার হয় বেতাগী। উপজেলার সরিষামুড়ি, কালিকাবাড়ি, গ্রামর্ধন, ক্যাওড়াবুনিয়া, ছোট মোকামিয়া, কেওয়াবুনিয়া, ঝোপখালী, বেতাগী বন্দর এলাকার মানুষগুলো ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার ঘূর্ণিঝড় আমফানের আগমন। এসব এলাকায় অনেক জায়গায় বেড়িবাঁধ ভেঙে বিলিন হয়ে গেছে সর্বনাশা বিষখালীর বুকে। তাই এখানকার মানুষগুলো সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে। পৌর শহরের মাদ্রাসা রোড এলাকার বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলীয় এ অঞ্চলের মানুষের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এবছর এমনিতেই করোনার প্রাদুর্ভাবে নিম্ন আয়ের মানুষর দিন কাটছে চরম উৎকণ্ঠায়। তার উপর হটাত এই ঘূর্ণিঝড় আমফান আসার খবরে তাদের ভিতর ভয়াভহ আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে ইতোমধ্যে মঙ্গলবার (১৯ মে) থেকে বিরূপ আবহাওয়া বিরাজ করছে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস মতে, বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ উপকূলের খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের জেলাগুলোতে আঘাত হানতে পারে “ঘূর্ণিঝড় আম্ফান”। স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বললে জানা যায়, এ উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষি নির্ভর। করোনার মারাত্মক আঘাত কাটিয়ে উঠার আগেই ঘূর্ণিঝড় আমফানের আগমন। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড় আমফান আসছে শুনে অবরুদ্ধ কৃষকরা তাদের ফসল নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রাজীব আহসান বলেন, দূর্যোগ মোকাবেলায় ইতিমধ্যে সব ধরণের প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলা জুড়ে আমাদের প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। সাধারণ মানুষকে নির্ধারিত আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বলা হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে সামাজিক দূরত্ব মেনেই আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে। প্রস্তত রাখা হয়েছে উপজেলার ১১৪ টি সাইক্লোন শেল্টার। ইতোমধ্যে নিম্ন অঞ্চলের লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানি এবং শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। সেহেরীর জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট’র নেতৃত্বে একটি টিম কাজ করছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় খোলা হয়েছে একটি নিয়ন্ত্রন কক্ষ। ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট, আনসার সদস্য, পুলিশসহ সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App