×

সারাদেশ

সন্ত্রাসীদের পক্ষেই সম্ভব বৌদ্ধ বিহারে আগুন দেয়া

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২০, ০৭:৪২ পিএম

সন্ত্রাসীদের পক্ষেই সম্ভব বৌদ্ধ বিহারে আগুন দেয়া
পাহাড়ের সাধারণ মানুষদের অত্যাচার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করতে জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা প্রতি আহবান জানিয়েছেন বিলাইছড়ি ধুপশীল আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র (বৌদ্ধ বিহার) এর অধ্যক্ষ ড. এফ দীপংকর মহাথের। তিনি বলেন, বৌদ্ধ বিহারে আগুন দিয়ে যারা এই ঘৃন্নিত কাজ করেছে তা কোন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী করতে পারে না। তারা কেউ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নয়। একজন বৌদ্ধ, একজন হিন্দু, একজন মুসলিম, একজন খ্রীষ্টান কখনোই ধমীয় প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয় না। তারা সন্ত্রাসী তাদের পক্ষেই সম্ভব বৌদ্ধ বিহারে আগুন দেয়া। সোমবার (১৮ মে) দুপুরে রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবে রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির ধুপশীল আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ ভাবনা কেন্দ্র জেএসএস (সন্তু গ্রুপ) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এই আহবান জানান। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শ্রীমৎ মহানামা ভিক্ষু, শ্রীমৎ মেখিয় ভিক্ষু, শ্রীমৎ জ্ঞাতিমিত্র ভিক্ষু, শ্রীমৎ প্রজ্ঞামিত্র ভিক্ষু। তিনি বলেন, এই বৌদ্ধ মন্দিরে এলাকার মানুষ আসে ধর্ম করতে কিন্তু ধর্মপ্রিয় আর্ন্তজাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র বৌদ্ধ বিহারটি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক দল জে এস এসের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এতে করে থাইল্যান্ড থেকে আনা অষ্টধাতুর বিশাল আকৃতি বুদ্ধমুর্তিসহ ছোট বড় বুদ্ধমুর্তি ও মন্দিরে থাকা আসবাবপত্র সর্ম্পূণ পুড়ে যায়। অধ্যক্ষ ড. এফ দীপংকর মহাথের আরো বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অত্যন্ত আন্তরিকতা, দক্ষতা ও সুশাসনের কারণে বাংলাদেশের জনসাধারণ তথা সমস্ত বৌদ্ধ জাতি শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসছে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক দল জে এস এসের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কারণে ধর্মপ্রাণ নিরীহ সাধারণ মানুষ নানা ভাবে হয়রানী ও অত্যাচারের শিকার। তিনি বলেন, আমাদের বাংলাদেশের অতীত ও বর্তমান পর্যন্ত আন্তধর্মীয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও পরস্পর পরস্পরের ধর্মের প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা ও গৌরব প্রদর্শন করা একটি চমৎকার ইতিহাস প্রচলিত আছে। ধুপশীল ধর্মপ্রিয় আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রটি ভিন্ন ধর্মের লোকজন কর্তৃক যদি ধ্বংস করা হত সেটা ভিন্ন বিষয়। তখন হয়ত অসংখ্য রিলহি ধার্মিক মানুসের চিত্ত আজ এত দুঃখ ভারাক্রান্ত হত না। কিন্তু বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে বৌদ্ধ হিসেবে যারা পরিচিতি সেই বৌদ্ধ নামধারী জে এস এস সন্ত্রাসী কর্তৃক উক্ত ভাবনা কেন্দ্রটি অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংস করা হয়। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে স্বধর্মীয়, স্বগোত্রিয় অধার্মিক বৌদ্ধ নামধারী জে এস এস সন্ত্রাসীদের ছোবল, অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে অসংখ্য নিরীহ সহজ সরল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষগুলো নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। তাদের অত্যাচার-নির্যাতনের পাশপাশি রেহায় পাচ্ছে না বৌদ্ধ বিহার পর্যন্ত। বিনা কারণে এই ভাবনা কেন্দ্র বৌদ্ধ বিহার, বুদ্ধমুর্তি পরিত্র ত্রিপিটকে এই অগ্নিসংযোগ কেন ? এটা কোন ধরনের অপরাধে মধ্যে পড়ে তা বিবেচনার দায়িত্ব দেশ, জাতি ও সমাজের উপর। তাই স্থানীয় রাজনৈতিক দল জে এস এসের প্রতি অনুরোধ সন্ত্রাসী কার্যক্রম, হানাহানি বন্ধ করে মৈত্রীপূর্ণ জীবন ও প্রত্যেক মানুষেরা যাতে নিজ নিজ ধর্ম শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিপালন ও প্রচার যেন করতে পারে এই ব্যাপারে দলের সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১৫ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ১০-১২ জনের সন্ত্রাসীদের একটি দল ধুপশীল আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ ভাবনা কেন্দ্র বৌদ্ধ মন্দিরে ঢুকে সেখানে অবস্থানরত সেবক কুচেন্দ্র তঞ্চঙ্গাকে মারধর করে বের করে দেয়। এসময় তারা মন্দিরের অবকাঠমোতে আগুন ধরিয়ে দিলে কাঠের মন্দিরটি পুরোপুরি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App