×

সম্পাদকীয়

সরকারের কর্মসূচি থাকা আবশ্যক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২০, ১০:০৮ পিএম

করোনা পরিস্থিতি-উত্তর বড় ধরনের সংকট ও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশের শ্রমবাজার। এরই মধ্যে সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবের মার্কেট সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার বিষয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে। এমতাবস্থায় সরকারের যথাযথ কর্মসূচি থাকা আবশ্যক; বিশেষ করে নতুন শ্রমবাজার তৈরিতে সরকারকে দৃষ্টি দিতে হবে। জানা গেছে, প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা সব মিলিয়ে প্রায় এক কোটি ২৮ লাখ। শুধু সৌদি আরব নয়, করোনার ধাক্কায় মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশসহ ইউরোপ, আমেরিকাতেও শ্রমবাজারে অশনি সংকেত দেখা দিয়েছে। অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সৌদি আরব থেকে করোনার কারণে সামনের বছরগুলোতে কাজ হারিয়ে দেশে ফিরতে পারেন অন্তত ১০ লাখ প্রবাসী কর্মী। মধ্যপাচ্য দেড় লাখ বাংলাদেশি কর্মীর ভিসা বাতিল করছে বলে খবর আসছে। ইতালিতে ২ লাখ ৬০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে ৭৫ হাজার অবৈধ। যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন ১০ লক্ষাধিক বাংলাদেশি। কাতারে রয়েছেন ৪ লাখ এবং কুয়েতে সাড়ে ৩ লাখ বাংলাদেশি। এ অবস্থায় গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বিদেশ থেকে ফিরেছেন প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশি। এর মধ্যে শুধু মার্চে দেশে ফেরা ২ লাখ শ্রমিকের মধ্যে লক্ষাধিকই চাকরিচ্যুত। এ অবস্থায় রেমিট্যান্সের ভবিষ্যৎ নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় বর্তমানে অন্তত ৪০ লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। অভ্যন্তরীণ চলাচল সীমিত করে দেয়ার কারণে ব্যাঘাত ঘটছে তাদের পেশাগত জীবনযাত্রায়ও। অচিরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে দেশের রেমিট্যান্স আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা খাতসংশ্লিষ্টদের। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরও দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি কর্মী গিয়েছিলেন সৌদি আরবে, প্রায় ৫৭ শতাংশ। তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানের দেশগুলোও মধ্যপ্রাচ্যের। দেশ দুটি হলো যথাক্রমে ওমান (১০ দশমিক ৩৮ শতাংশ) ও কাতার (৭ দশমিক ১৮ শতাংশ)। করোনা পরিস্থিতির কারণে শ্রমিকরা দেশে ফেরত আসায় সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসী বেকারদের জন্য আড়াই হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের কথা জানিয়ে বলেছেন, তারা কিন্তু রেমিট্যান্স পাঠায়। বিদেশে অনেক বাংলাদেশি বেকার হয়েছেন। দেশে ফিরে তাদের যাতে কষ্ট না হয় সে জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তবে এভাবে প্রণোদনা দিয়ে স্থায়ী সমাধান হবে না। বিকল্প বাজার খুঁজতে হবে এখন থেকেই। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম ক্ষেত্র হলো রেমিট্যান্স। জনশক্তি রপ্তানি এ ক্ষেত্রে বড় ভ‚মিকা পালন করছে। বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া। এ বিশাল বাজার থেকে সবচেয়ে বেশি কর্মীরা ফেরত আসছেন। আশার কথা, জাপানে নতুন বাজার সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। জাপানের পাশাপাশি অন্যান্য দেশও খুঁজে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App