×

সম্পাদকীয়

সাধারণ রোগীরা কোথায় যাবেন?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২০, ০৯:৫৬ পিএম

চলমান পরিস্থিতিতে সাধারণ রোগীদের ভোগান্তির দিন দিন প্রকট হয়ে উঠেছে। রোগীর কাছে আসছেন না চিকিৎসক, ফিরিয়ে দিচ্ছে হাসপাতাল। করোনা আতঙ্কের কারণে চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। অবহেলায় রোগী মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে কয়েকটি। প্রশ্ন হলো সাধারণ রোগীরা কোথায় যাবে? কোথায় মিলবে তাদের চিকিৎসাসেবা? আশার খবর হলো, সাধারণ (নন-কোভিড) রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। দেশের সব হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি অন্যান্য রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তিনটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনা অমান্য করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রচলিত বিধান অনুসারে লাইসেন্স বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। চরম সংকটে এই নির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে হাসপাতালগুলোর আন্তরিকতার দরকার পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও মানবিক আচরণ আমরা দেখতে চাই। দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ডায়ালাইসিসসহ চিকিৎসা গ্রহণ করা রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এ ভাইরাসের উপসর্গের সঙ্গে মিল না থাকলেও রোগী ভর্তি অথবা চিকিৎসাসেবা দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন চিকিৎসক, নার্স এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্য কোনো রোগের চিকিৎসা করাতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। হৃদরোগ কিংবা কিডনি রোগে ভুগলেও মিলছে না চিকিৎসা। এমন পরিস্থিতিতে অনেক রোগী এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছোটাছুটি করতেই প্রাণ হারাচ্ছেন। কিছুদিন আগে খোদ প্রধানমন্ত্রীকে এই নিয়ে কথা বলতে হয়েছে। চিকিৎসা না দিলে ডাক্তার কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। এরপরও তাদের টনক নড়ছে না এটা দুঃখজনক ব্যাপার। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য মতে, দেশে সরকারি হাসপাতাল রয়েছে ৬৫৪টি এবং এসব হাসপাতালে মোট শয্যার সংখ্যা ৫১ হাজার ৩১৬টি। আর বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে ৫ হাজার ৫৫টি, যেখানে মোট শয্যার সংখ্যা ৯০ হাজার ৫৮৭টি। বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে অনুমিত জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৪৬ লাখ। সেই হিসাবে প্রতি ১ হাজার ১৫৯ জন ব্যক্তির জন্য হাসপাতালে একটি শয্যা রয়েছে। দেশের চরম সংকটে এসব হাসপাতালের ভ‚মিকা কী তা প্রশ্ন জাগছে আমাদের মনে। চিকিৎসা পেশাটি রাষ্ট্রের অন্যান্য পেশার তুলনায় অনেক বেশি সম্মানের। এটা পেশা হলেও, চিকিৎসকরা মানুষের জীবন রক্ষায় কাজ করেন বলে এটি মানবসেবার একটি অংশও বটে। কিন্তু আজকাল এ পেশার চিকিৎসকের আচরণে মানবিকতার বলাই নেই বললে চলে। চিকিৎসকদের মাঝে নীতিনিষ্ঠা, মানবিকতা, সদাচার, কর্তব্যপরায়ণতা এসব গুণের বেশি জারি হওয়ার কথা। এ দেশের অনেক চিকিৎসক এমনটাই। ডেঙ্গু সমস্যায় গত বছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাত-দিন কাজ করে শত শত মানুষের জীবন রক্ষা করে কত না বাহবা পেয়েছিলেন। এজন্য অবশ্য কয়েকজন চিকিৎসকে জীবনও দিতে হয়েছে। দেশের এই সংকটে নিশ্চয় আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন। রোগীদের প্রতি মানবিক হবেন এমনটাই প্রত্যাশা রাখছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App