×

সরকার

রাজস্ব ধস ঠেকানোই বাজেটে মূল চ্যালেঞ্জ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ মে ২০২০, ১০:০৩ এএম

করোনা পরিস্থিতিতে লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো অবাস্তব মনে করেন অর্থনীতিবিদরা

বরাবরের মতো আগামী বাজেটেও উচ্চাবিলাসী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর)। চলতি অর্থবছরে অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য থাকার পরও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক পিছিয়ে এনবিআর। আর করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবিরতার মধ্যে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো অবাস্তব বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, অর্থনৈতিক স্থবিরতার মধ্যে এমন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নেহায়তই উচ্চাবিলাস। ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব ধস ঠেকানোই বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট প্রস্তাব করা হচ্ছে। এতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো। করোনা মহামারিতে এই উচ্চাবিলাসী লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চিন্তা অবাস্তব বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ ভোরের কাগজকে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে গতানুগতিক ধারায় চলছে জাতীয় বাজেট। অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে; বাজেটও বড় করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ানো হচ্ছে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা। আদৌ এনবিআর এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে কিনা তা বিবেচনায় নেয়া হয় না। একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করে এনবিআরের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হয় আদায় করার জন্য। আর বছর শেষে আদায় করতে না পারলে তা সংশোধন করা হয়। চলমান অর্থনৈতিক এই মন্দার মধ্যে এবারো রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে কথা হয় বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, আগামী বাজেটে রাজস্ব আহরণের গতি ধরে রাখা বা রাজস্ব আহরণের ধস ঠেকিয়ে রাখাই সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ করোনার কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্থবিরতা চলছে। আগামী বাজেটে ব্যক্তি করদাতা থেকে শুরু করে ভ্যাট, আমদানি সব পর্যায়ে ছাড় দিতে হবে। কারণ যারা কর দেবেন তারা নিজেরাই অস্থিত্ব সংকটে, সক্ষমতা না থাকলে কর দেবেন কীভাবে? তবে রাজস্ব আহরণের ধস ঠেকাতে আশার আলো হতে পারে- প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়ানো ও রাজস্ব আয়ের যেসব লিকেজ আছে তা বন্ধ করা। যেমন : যারা কর ফাঁকি দিয়েছেন বা যারা ভ্যাট আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দিচ্ছেন না তাদের বিষয়ে কঠোর হওয়া। এর সঙ্গে এনবিআরের অটোমেশন প্রোগ্রামগুলোকে আরো স্বয়ংক্রিয় করতে হবে। যাতে কারো ওপর নির্ভরশীল না হয়ে মানুষ কর দিতে পারে, বলেন এই অর্থনীতিবিদ।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আয়কর অধ্যাদেশ সংশোধন করা হয়। এতে দুর্যোগকালীন যারা আয়কর দিতে পারবেন না তাদের জরিমানা বা সুদারোপ করতে পারবে না বলে বলা হয়। এজন্য করদাতা বা এনবিআরের কারো দায় থাকবে না বলেও জানানো হয়। এছাড়া করোনাকালীন ভ্যাট ও আমদানি শুল্কেও ছাড় দিচ্ছে এনবিআর। এছাড়া আগামী বাজেটে করপোরেট কর কমানো থেকে বিভিন্ন খাতে কর অব্যাহতির সুযোগও বাড়ছে। এতে আরো সঙ্কুচিত হচ্ছে রাজস্ব আহরণের পরিধি। এই পরিস্থিতে বড় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন একেবারে অসম্ভব বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App