সম্পর্কের এক জোরালো প্রকাশভঙ্গি যেন যুগলবন্দি পোশাক। বেশ কয়েকবছর ধরেই ফ্যাশন জগতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে জুটি বেঁধে পোশাক পরার এই ট্রেন্ড। পরিবার-প্রিয়জনদের সাথে উৎসব-পার্বণে একই রকম পোশাক পরার ট্রেন্ড চলছে এবারের ঈদেও। এই করোনা সংকটেও ঈদের কেনাকাটায় এ ধরনের ডিজাইনে তৈরি দেশীয় ব্র্যান্ডের পোশাকে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।
ফ্যাশনে নতুন কিছু
একটা সময় যুগল পোশাক হতো দুই বোন বা দুই ভাইয়ের। অথবা যমজ বা পিঠাপিঠি ভাইবোন একই রকম পোশাক পরত, যেন দুজনের পোশাকি মিলটাও থাকে। এর ধারাবাহিকতায় এসেছে ‘যুগল পোশাক’। এরপর উৎসবে একটা সময়ে বাবা ছেলে বা মা মেয়ে মিলিয়ে পোশাক পরত। দম্পতিরা বাজার ঘুরে ঘুরে নিজেরা মিলিয়ে পোশাক কিনত, কিংবা দর্জির কাছে বানিয়ে নিত। এখন দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডের ডিজাইনাররা এ কাজ সহজ করে দিয়েছেন। এতো লক ডাউনের ভেতরও ঈদ উৎসবের জন্য থেমে নেই এধরনের পোশাক অনলাইনে অর্ডার করা।
এ ধরনের পোশাক তৈরির ক্ষেত্রে বেশি নজর রাখা হয়েছে রঙের ক্ষেত্রে। কারণ পোশাক বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে রঙ নজর কাড়ে।
মিল রেখে পোশাক
পাঞ্জাবির সাথে শাড়ি অথবা পাঞ্জাবি আর সালোয়ার কামিজের যুগলবন্দি, বাবা-ছেলের ম্যাচিং পাঞ্জাবি আর বাবা- ছেলে-মা-মেয়ের একই রকম পোশাকের ট্রেন্ড চলছে এবারের ঈদে। কখনও একই রকম কাপড় দিয়ে, কখনো বা রং মিলিয়ে আবার কখনও একই রকম কারুকাজ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এসব যুগল বা ম্যাচিং পোশাক।
ব্র্যান্ড ভেদে যুগল পোশাকের ক্ষেত্রে মেয়েদের জন্য রয়েছে সালোয়ার-কামিজ এবং শাড়ির পাশাপাশি কিছু কুর্তির আয়োজন। ছেলেদের জন্য আছে পাঞ্জাবি। বাজার ঘুরে দেখা গেল, এবারের যুগল পোশাকে আছে রঙ এবং নকশা এ দুইয়ের মেলবন্ধন। দু’জনের পোশাকে কখনও রঙবিন্যাস এক রেখে নকশায় আনা হয়েছে কিছু পরিবর্তন, আবার কখনও দেখা গেছে নকশা এক রেখে রঙের ক্ষেত্রে কিছু ভিন্নতা। রঙের ক্ষেত্রে ভিন্নতায় চোখে পড়েছে এক রঙের ভিন্ন শেডের ব্যবহার আবার কখনওবা রঙের সম্পূর্ণ বৈপরীত্য। সলিড কালারে নকশার বৈচিত্র্য এনেছেন অনেক নকশাকার। তবে, মাঝ বয়সী আর পরিবারের সবার কথা চিন্তা করে রং আর নকশায় পরিবর্তন আনা হয় প্রতিটি পোশাকে।
মোটিফ বা ডিজাইনের রকমফের
দেশীয় নকশার সঙ্গে মিল রেখে পাশ্চাত্য কাটিংয়ের মিশ্রণে তরুণদের জন্য তৈরি হচ্ছে যুগলবন্দিপোশাক। প্রথম দিকে এসব পোশাকে তরুণদের আগ্রহ বেশি থাকলেও এখন সব বয়সীর পছন্দের তালিকায় স্থান পেয়েছে যুগল পোশাক। মূলত: বিশেষ দিবসে অনেকেই পরতে চান একই ধরনের পোশাক। অধিকাংশ ফ্যাশন ব্র্যান্ডের অনলাইন স্টোর ও ফেসবুক পেজ ঘেঁটে দেখা গেছে এ ধরনের পোশাক তৈরির ক্ষেত্রে বেশি নজর রাখা হয়েছে রঙের ক্ষেত্রে। কারণ পোশাক বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে রঙ নজর কাড়ে। আর মোটিফের ক্ষেত্রে ছেলেমেয়ে দুজনের ক্ষেত্রে সব সময় এক মোটিফ ব্যবহার করা হয় না, ডিজাইন ভেদে কখনো নিয়ে আসা হয় কিছুটা ভিন্নতাও। তবে শাড়ির ক্ষেত্রে আঁচলের ডিজাইনে ভ্যালু এডিশনে গুরুত্ব দেয়া হয় বেশি। সমসাময়িক ফ্যাশন ট্রেন্ডের সাথে ফিউশনও থাকে কখনও কখনও। তবে জোড় পোশাকগুলো দাম সাশ্রয়ী করার জন্য ব্র্যান্ডগুলো পোশাকের ক্যানভাস ও ডিজাইনে কাট প্যাটার্নকে প্রাধান্য দিচ্ছে বেশি। পাশাপাশি মেশিন এম্ব্রয়ডারি, কাট ওয়ার্ক বা বল্ক প্রিন্টের ব্যবহারও থাকছে। উৎসব পার্বণে এখন যুগল পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। বয়স আর আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে ডিজাইনাররা তাই এসব পোশাক বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করছেন।
দু’জনের পোশাকে কখনও রঙবিন্যাস এক রেখে নকশায় আনা হয়েছে কিছু পরিবর্তন, আবার কখনও দেখা গেছে নকশা এক রেখে রঙের ক্ষেত্রে কিছু ভিন্নতা।
কোথায় পাবেন
যুগলবন্দী পোশাকের ট্রেন্ড চালু হবার পর কমবেশি অনেক রিটেইল স্টোর তাদের কালেকশনে যুক্ত করেছে এগুলো। তবে ডিজাইন-কাপড়ের মান এবং প্যাটার্ন সাতন্ত্র্যতায় গ্রহণযোগ্যতায় এগিয়ে যেকয়েকটি ব্র্যান্ডের জোড়া পোশাক তা হলো অঞ্জন’স, আড়ং, কে ক্রাফট, সেইলর, রঙ বাংলাদেশ, ইয়োলো, নয়ের ক্লোদিং, লা রিভ অন্যতম।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।