×

সম্পাদকীয়

স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ও জীবন-জীবিকার বিষয় গুরুত্ব পাক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২০, ০৫:৫৯ পিএম

সম্প্রতি দৃশ্যমান হয়ে ওঠা করোনার আঘাত সবশেষে কোথায় পৌঁছে তা আমাদের অজানা। এমতাবস্থায় আগামী ১১ জুন জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আলোকে অর্থমন্ত্রীর জন্য আসন্ন বাজেট প্রণয়ন একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। বাজেটে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং কর্মসংস্থানের মতো খাতগুলোতে। করোনার জন্য দেয়া হতে পারে পৃথক বিশেষ বরাদ্দ। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ মোট জাতীয় বাজেটের ৪.৯২ শতাংশ এবং এটি জিডিপির ০.৮৯ শতাংশ। সেই হিসাবে এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে জনপ্রতি বরাদ্দের পরিমাণ বছরে এক হাজার ৪২৭.৭৭ টাকা। আসন্ন বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। সবক্ষেত্রে কর ছাড় দিয়ে একটি স্বস্তিদায়ক বাজে তৈরির প্রয়াস নেয়া হয়েছে। বাজেটে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিও সামনে রাখা হবে। করোনা ভাইরাসের কারণে হঠাৎ চাকরি হারানো লাখ লাখ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা কীভাবে কম খরচে নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়টিও ভাবছে সরকার। এজন্য এরই মধ্যে করোনা মোকাবিলায় কৃষি খাতে প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেটে শারীরিক নিরাপত্তার কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকাও বাজেট থেকে ব্যয় করা হবে। যা অভ্যন্তরীণ বা সামষ্টিক মোট উৎপাদনের ৩ দশমিক ৫ শতাংশের সমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা সংকট উত্তরণ ও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যে খাতভিত্তিক প্রণোদনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমরা সবাই জানি, জাতীয় বাজেটের দুটি প্রধান দিক হলো আয় ও ব্যয়। আয় না করে ব্যয় হলে ধারদেনায় জড়াতে হয় সরকারকে। এজন্য সরকারের আয় বা রাজস্ব আহরণ বাজেট বা অর্থনীতির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগামী বাজেট প্রণয়ন করতে গিয়ে অর্থ বিভাগের বড় চিন্তা রাজস্ব সংগ্রহ নিয়ে। চলতি অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও এনবিআরবহিভর্‚ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ অনুমান করছে, জুন শেষে সরকার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব কম পাবে। এদিকে রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় বাড়বে বাজেট ঘাটতিও। আমদানি খাত থেকেই সরকারের সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আসে। তবে এ সময়ের রপ্তানি চিত্র আরো নেতিবাচক হওয়ায় সার্বিক উৎপাদন খাতের দুরবস্থারই ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এ অবস্থায় বছর শেষে রাজস্ব প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন তো দূরের কথা, শেষ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে। সরকারকে বিষয়টিও মাথায় নিতে হবে। করোনা ভাইরাস থমকে দিয়েছে দেশের অর্থনীতির চাকা। করোনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আগামী বাজেটটি করা উচিত। বিশেষ করে মানুষের জীবন, জীবিকা ও পুনর্বাসনের বিষয় বাজেটে থাকা উচিত বলে মনে করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App