×

অর্থনীতি

বিপণিবিতানগুলো খোলা রাখার বিপক্ষে ৯৩ শতাংশ মানুষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২০, ০৪:৫৪ পিএম

বিপণিবিতানগুলো খোলা রাখার বিপক্ষে ৯৩ শতাংশ মানুষ

ড. ফাহমিদা খাতুন

অনলাইন জরিপে ৯৩ শতাংশ বর্তমান প্রেক্ষাপটে শপিংমল না খোলার এবং ৯৬ শতাংশ শপিংমলে না যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এক ফেসবুক জরিপের এ তথ্য তুলে ধরেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)। শনিবার (৯ মে) আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের জন্য সিপিডির সুপারিশমালা উপস্থাপনের আগে ফেসবুক জরিপের এই ফলাফল জানান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। সিপিডি’র বাজেট সুপারিশমালা এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলায় এ যাবৎকালে বাংলাদেশ সরকারগৃহীত বিভিন্ন নীতি সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সিপিডি’র মতামত তুলে ধরার জন্য “কোভিড-১৯-বর্তমান প্রেক্ষাপট ও বাজেট ২০২০-২১” শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিং-এর আয়োজন করা হয়। বাজেট প্রস্তাবনাগুলো উত্থাপন করেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো তৌফিক ইলাহী। এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান, খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ফাহমিদা খাতুন জানান, করোনা ভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতিতে শপিংমল খোলার বিরুদ্ধে মত দেয়ার পাশাপাশি জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৯৬ শতাংশ উত্তরদাতাই জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে দেশে শপিংমল খুলে দেয়া হলেও তারা যাবেন না। ড. ফাহমিদা জানান, জরিপের শপিংমল খুলে দেয়া উচিত হবে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তর দেন ২ হাজার ২৬০ জন। এই উত্তরদাতাদের মধ্যে ২ হাজার ১০০ জনই ‘না’ সূচক জবাব দেন। ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দেন ১৬০ জন। আর শপিংমল খোলা হলেও যাবেন কিনা- এ প্রশ্নের উত্তর দেন ১ হাজার ৪৭ জন। এদের মধ্যে ১ হাজার জন ‘না’ সূচক এবং ৪৭ জন ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দেন। মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু প্রতিদিনই উদ্বেগজনক হারে বাড়লেও আগামী ১০ মে থেকে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে সরকার। যদিও দেশের সবচেয়ে বড় শপিংমল বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স ও যমুনা ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছে, চলমান এ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে রমজানে তারা শপিংমল খুলবেন না। ফাহমিদা বলেন, জীবন ও জীবিকা দুটোই প্রয়োজন আছে। তবে জীবন যদি না থাকে, সেই জীবিকা দিয়ে কী প্রয়োজন। তিনি বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেট হতে যাচ্ছে সম্পূর্ণ ভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। বাংলাদেশ কখনোই এ ধরনের অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে পড়েনি। সেজন্য এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। সুতরাং, এবারের বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে অনেক ধরনের চাপ, সমস্যা, চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হতে হবে। তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে সারাবিশ্বের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। সেখানে সাপ্লাই চেন, চাহিদার ওপর চাপ পড়েছে। যার কারণে বিশ্ব অর্থনীতি একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। দেশের ভেতরেও অর্থনীতির অনেক খাত বিচ্ছিন্ন ও বন্ধ রয়েছে। যার কারণে অর্থনীতির ওপর আরেকটা চাপ পড়েছে। সুপারিশে এবারের বাজেটে অর্থের সংস্থান বাড়াতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর সুপারিশ করেছে সিপিডি । প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, সরকারের প্রশাসনিক ব্যয় (যেমন: গাড়ির পিছনে ব্যয়, ইউটিলিটি ব্যয়, অফিসের কাগজপত্র, আপ্যায়ন ইত্যাদি) অন্তত ৫০ শতাংশ কমানো যেতে পারে। পাশাপাশি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে এমন উৎপাদনশীল ব্যয়কে আসছে বাজেটে গুরুত্ব দিতে হবে। দরিদ্র মানুষের হাতে টাকা দিতে হবে, প্রণদোনা নিশ্চিত করতে হবে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের, এক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব পাবে ছোটরা এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে নতুন বাজেটে। সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি'র বাজেট প্রস্তাবনাগুলো হচ্ছে- করপোরেট কর কমাতে সাবধানী হওয়া, প্রণোদনা দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা, করমুক্ত আয়ের সীমা ৩.৫ লাখ টাকা করা, এসএমই'র টার্নওভার ট্যাক্সের সীমা বাড়িয়ে ১ কোটি টাকা করা, করের হার না বাড়িয়ে ফাঁকি বন্ধে কঠোর হওয়া, বাজেট ঘাটতি মেটাতে বিদেশি অর্থায়নের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া, করোনার হটস্পট গুলোতে কারখানা খোলার ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া, কালো টাকা সাদার সুযোগ না দেয়া, অর্থপাচার বন্ধ করা, তেলের দাম কম থাকায় যে মুনাফা আসবে তা দরিদ্র মানুষের হাতে দেয়া এতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা চাঙ্গা থাকবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App