×

জাতীয়

শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২০, ০৮:৫০ পিএম

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব গৌতম বুদ্ধের জন্মোৎসব শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা বুধবার (৬ মে)। গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিজ্ঞান ও মহাপরিনির্বাণ লাভ এই তিন ঘটনার স্মৃতি বিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বিশ্বের সব স্থানে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছেই বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত।

বৌদ্ধ ধর্মমতে, খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন। ৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই দিনে তিনি সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন।  আবার ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্বলাভের মধ্য দিয়েই জগতে বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তিত হয়। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছেই বুদ্ধপূর্ণিমা সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব।

তবে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে সরকার ঘোষিত লকডাউনের আওতায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে দেশের সকল অঞ্চলের শীর্ষ বৌদ্ধ সংগঠনগুলো আলোচনা সাপেক্ষে, বিশেষ করে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন, বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভা, পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ-বাংলাদেশ, বনভন্তে শিষ্য সংঘসহ সকল বিহার, প্যাগোডায় কোন রকম শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমার আনুষ্ঠানিক কর্মসূচী পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুধু বৌদ্ধ বিহারে অবস্থানরত ভিক্ষুসংঘরা বিহারে ধর্মীয় অনুষ্ঠান, পূজা, বন্দনাসহ ধর্মীয়কার্য সমাধা করবেন। ভক্তবৃন্দ, উপাসক-উপাসিকাগণ নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করে ধর্মীয় কার্য প্রতিপালন করবেন।

বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় বলেছেন, আমরা নিজ নিজ বাড়িতে ধর্মীয় কার্য সম্পাদন করে আমাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও প্রিয় মাতৃভূমিকে করোনাভাইরাস মুক্ত রাখবো। ভগবান বুদ্ধের আহবান অনুযায়ী আমরা করোনাকালিন হতদরিদ্র মানুষের পাশে দান হস্ত প্রসারিত করবো। সেই সাথে দেশের সার্বিক মঙ্গল ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য কামনা করবো যেন তিনি দেশকে আরও অধিক সেবা দিতে পারেন। বুদ্ধপূর্ণিমার দিনে বৌদ্ধরা বুদ্ধপূজা-সহ পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ, সমবেত প্রার্থনা এবং নানাবিধ মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

তাঁরা বুদ্ধানুস্মৃতি ও সংঘানুস্মৃতি ভাবনা করে। বিবিধ পূজা ও আচার-অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিবিধ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। বৌদ্ধবিহারগুলিতে বুদ্ধের মহাজীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা-সহ ধর্মীয় সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার এ উৎসবটি অনারম্বর ভাবে উদযাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন বৌদ্ধ ধর্মীয় সংগঠনগুলো। শুধু বুদ্ধপূজা, মহাসংঘদান এর মত আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ থাকবে বলে এই ধর্মাবলম্বীরা জানিয়েছেন।

এ উপলক্ষে মঙ্গলবার এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, প্রাচীনকাল থেকে বাংলার মাটি ও মানুষের সাথে বৌদ্ধদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা ও কৃষ্টি গভীরভাবে মিশে আছে। গৌতম বুদ্ধ স্থান-কাল-পাত্রের ঊর্ধ্বে ওঠে পৃথিবীর সব জীবের কল্যাণ ও সুখ কামনা করেন। পৃথিবীকে সুখী ও শান্তিপূর্ণ করে গড়ে তোলার জন্য তিনি নিরন্তর প্রয়াস চালান। ‘অহিংস পরম ধর্ম’ বুদ্ধের এই অমিয় বাণী আজও সমাজের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। আজকের এই অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বোধিলাভ এবং মহাপ্রয়াণের স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়সহ দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা সকলের জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক’- এ কামনা করে তিনি আজ মঙ্গলবার এক বাণীতে আশা প্রকাশ করে বলেন, এ দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় গৌতম বুদ্ধের আদর্শ ধারণ করে জ্ঞান, মেধা, কর্মদক্ষতা ও কৃতিত্বে নিজেদের আরও ঊর্ধ্বে তুলে ধরবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App