এফবিসিসিআইর প্রস্তাবে বিশেষ উদ্যোগ
nakib
প্রকাশ: ০৫ মে ২০২০, ১০:৪৬ এএম
নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ আবেদন নেয়া থেকে বিতরণ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে যথাসাধ্য সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঋণ বিতরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আহ্বানও জানানো হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা দেয়ার প্রক্রিয়া সহজীকরণ সম্পর্কিত এফবিসিসিআইয়ের (ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি) প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে এ বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল সোমবার এফবিসিসিআইয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া দুই মাসের সুদ স্থগিত করায় ব্যবসায়ী মহল বিশেষভাবে উপকৃত হবে বলেও উল্লেখ করেছে এফবিসিসিআই।
বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সব ধরনের ঋণ বা বিনিয়োগের ওপর ১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে আরোপিত/আরোপযোগ্য সুদ/মুনাফা ‘সুদবিহীন ব্লকড হিসেবে’ স্থানান্তর করতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্লকড হিসেবে স্থানান্তরিত সুদ/মুনাফা সংশ্লিষ্ট ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতার নিকট হতে আদায় করা যাবে না এবং এরূপ সুদ/মুনাফা ব্যাংকের আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে না।
গতকাল এফবিসিসিআইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রস্তাবনা পেশ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ
ফজলে ফাহিম। তিনি সব গণমাধ্যমের জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার বিষয়টির ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া এফবিসিসিআই এই ঋণ বা বিনিয়োগ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত থাকবে এবং কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে সম্ভাব্য সার্বিক সহযোগিতা করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে বলেও আশ্বাস দেন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম।
এ বিষয়ে ফাহিম বলেন, চলতি মূলধন ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা যাদের জন্য প্রযোজ্য তাদের মধ্যে সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো এবং ব্যাংকারদের সঙ্গে সম্পর্ক অন্যদের তুলনায় অনেক কম। ফলে এসব উদ্যোক্তার ক্ষেত্রে যদি স্বাভাবিক অবস্থার মানদণ্ড নিরীক্ষা, আর্থিক বিবরণী, আইসিআরআরএস পর্যালোচনাপূর্বক উদ্যোক্তা নির্বাচন করা হয় তাহলে অনেক উদ্যোক্তা যোগ্যতা হারাবে এবং ঋণ ও বিনিয়োগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হবে। অন্যদিকে ঋণ ও বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ ও চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় না হলে তার ফলাফলও কাক্সিক্ষত হবে না।
মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিতকরণের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ঘোষিত বিভিন্ন খাতে আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ঋণ বা বিনিয়োগ ও অন্যান্য সুবিধাদি তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক সাবলীলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক পুনঃঅর্থায়ন হিসেবে ইতোমধ্যেই ৭০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তÍফা কামালকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
প্রস্তাবনায় সিএমএসএমই প্রতিষ্ঠান যেমন- ট্রেড, ফ্যাক্টরি, দোকান, ডিলার, খুচরা বিক্রেতা, পরিবেশক, ফার্মেসি, রেস্টুরেন্ট, পেট্রোল পাম্প, ট্রাভেল/ট্যুরিজম/রিসোর্ট, পরিবহন, ফ্যাশন হাউস, বিউটি পার্লার, নারী উদ্যোক্তা, সেলুনসহ, ক্ষুদ্র কুটির ও মাঝারি শিল্পের সদস্য প্রতিষ্ঠানের জন্য এই ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা জেলা চেম্বারের পরামর্শের ভিত্তিতে দেয়া এবং প্রয়োজনে রিকভারির সময়ও জেলা চেম্বার ও এসোসিয়েশনের সহায়তা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ/বিনিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে যথাযথ সহযোগিতা না করলে তা এফবিসিসিআইকে অবগত করার আহ্বানও জানান তিনি। এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটিও তদারকি করবে এফবিসিসিআই।