×

জাতীয়

চাহিদার অভাবে বন্ধ হচ্ছে বিশেষ পার্সেল ট্রেন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২০, ০৯:১১ পিএম

চাহিদার অভাবে বন্ধ হচ্ছে বিশেষ পার্সেল ট্রেন

চালু হওয়ার তিনদিনের মধ্যেই চাহিদা না থাকায় বন্ধ ঘোষণা করা হলো তিনটির মধ্যে দুটি পার্সেল ট্রেন সার্ভিস। তিনটি ট্রেনের মধ্যে একটি ঢাকা-খুলনা রুটে চালানোর সিদ্ধান্ত থাকলেও গত শুক্রবার (১ মে) চালুর প্রথমদিন থেকে রবিবার (৩মে) পর্যন্ত ট্রেনটিতে কোন মালামাল পরিবহনের অর্ডান না পাওয়ায় একবারও যাত্রা করতে পারেনি। তা ছাড়া ট্রেনটির ইঞ্জিনেও সমস্যা দেখা যায়। অপর দিকে ঢাকা চট্টগ্রাম ঢাকা রুটের পার্সেল ট্রেনটি তিনদিন চললেও কাল সোমবার (৪ মে ) থেকে ট্রেন আর চলবে না বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। মাত্র তিনদিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেল সদ্য চালু হওয়া পণ্যবাহী ট্রেনের এই বিশেষ সার্ভিস।

তবে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে চলাচলকারী পার্সেল ট্রেনটি আপাতত বন্ধ না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান। তিনি বলেন, আমরা পণ্য সেবা দেবার জন্য তিনটি রুটে পার্সেল ট্রেন চালু করি। খুলনা রুটে এ তিন দিনে কোন চাহিদা ছিল না, যার ফলে ট্রেন চলাচল করে নি । আবার চট্টগ্রাম ঢাকা চট্টগ্রাম রুটে যে মালামাল আসছে তাতে ট্রেনের তেলের খরচও হচ্ছে না। লোকসান হচ্ছে সেকারণে এ রুটে পার্সেল ট্রেনটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে ঢাকা ময়মনসিংহ রুটে ট্রেনটি আরো দু একদিন চালিয়ে দেখা হবে বলে জানান ডিজি।

করোনার এই সময় খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১ মে থেকে চালু করা হয় পার্সেল এক্সপ্রেস ট্রেন। এই ট্রেনের মাধ্যমে প্রান্তিক চাষিরা তাদের উৎপাদিত পণ্য কোনো মধ্যসত্ত্বভোগী ছাড়াই সরাসরি ঢাকায় বিক্রি করতে পারবেন। এতে একদিকে যেমন কৃষকরা ন্যায্য দাম পাবেন অন্যদিকে খাদ্য সংকটও কাটবে এমন উদ্দেশ্য থেকে চালু হলেও তিনদিনের মাথায় বন্ধ হয়ে গেল পার্সেল এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম ৩৪৬ কিলোমিটার রেলপথ। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পৌঁছাতে তেল খরচ হয় প্রায় ৬০০ লিটার। এভাবে আপ-ডাউনে তেল পুড়ে প্রায় ১২০০ লিটার। রেলের ইঞ্জিনে ব্যবহৃত তেল সাধারণ ডিজেল নয় ইঞ্জিন কার্যকর রাখতে এখানে ব্যবহার করা হয় হাই পারফরমেন্স (এইচপি) ডিজেল। এই ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৭০-৭২ টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের তেল খরচ বাবদ গুণতে হয় ৮৪-৮৬ হাজার টাকা।

আর একটি পার্সেল এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে ট্রেন পরিচালক ২ জন, রানিং পার্সেল ক্লার্ক ১ জন, লোকমাস্টার ও সহ-লোকমাস্টার ২ জন ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ৭-৮ জন সদস্য থাকে। এতে মোট স্টাফ থাকে অন্তত ১৩-১৪ জন। রেলের নিয়ম অনুযায়ী, রেল কর্মচারীদের মাইলেজ ও আর এনবির সদস্যদের টিএ প্রদান করা হয়। এই ১৩-১৪ জন কর্মচারীকে যাওয়া আসা বাবদ দিতে হয় ১৮-২০ থেকে হাজার টাকা। তেল খরচ ও রেলওয়ে কর্মচারীদের মাইলেজ দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের পার্সেল ট্রেনে আপ ডাউনে খরচ হয় ১ লাখেরও বেশি। কিন্তু এই ট্রেন থেকে প্রতিদিন আয় হয়েছে মাত্র ১০-১২ হাজার টাকা।

রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিটি পার্সেল এক্সপ্রেস ট্রেনে আপ ডাউনে লোকসান হচ্ছে ৮০-৯০ হাজার টাকা। তাই এটা বন্ধ করা হয়েছে। এই লাগেজ ট্রেনে বগি থাকে ১৯-১২টি আর প্রতি বগিতে ২৩০-২৪০ টন পণ্য পরিবহন করা সম্ভব। কিন্তু সেই পরিমাণ পণ্যের সিকি ভাগও পাওয়া যায়নি এই কয়দিনে। আর উদ্দেশ্য ছিল কৃষিপণ্য পরিবহনের। কিন্তু তিনদিনে চট্টগ্রাম থেকে একদিনেও সামান্য পরিমাণও তা পাওয়া যায়নি। তাছাড়া খুলনায়ও চাহিদা নেই, এমতাবস্থায় ট্রেনদুটি বন্ধ না করে উপায় ছিল না। তবে কাল-পরশু দু দিন দেখে চাহিদা না থাকলে ঢাকা ময়মনসিংহ রুটের পার্সেল ট্রেনটিও বন্ধ করা হতে পারে বলে জানান রেলের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App