×

সারাদেশ

চাঁদাবাজির মামলায় হয়রানি কৃষকদের, গ্রেপ্তার চেয়ারম্যান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২০, ০৪:১৬ পিএম

চাঁদাবাজির মামলায় হয়রানি কৃষকদের, গ্রেপ্তার চেয়ারম্যান

ছবি: প্রতিনিধি

শরীয়তপুরে সরকারী খাল খনন নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে বিরোধের জেরে চেয়ারম্যানসহ ওই কৃষকদের চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে হেনেস্থার অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে ওই চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোর্পদ করেছে পুলিশ। খাল খননের নামে কৃষকদের আবাদি জমির ফসলের ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবাদ করায় মিথ্যা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার চেয়ারম্যানের মুক্তি ও মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানান কৃষকরা।

সরেজমিনে গেলে স্থানীরা জানায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের “কীর্তিনাশা নদী থেকে দাদপুর মাদ্রাসা হয়ে তুলাতলা কাটাখালি খাল পর্যন্ত খালটি” খননের জন্য শহিদ ব্রাদার্স নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। সাব কন্ট্রাক্টর হিসেবে মতিউর রহমান মামুন খাল খনন করে খননকৃত মাটি কৃষকের ফসলী জমিতে ফেলে ট্রাক ভর্তি করে ইটভাটায় বিক্রি করে। এ নিয়ে খাল সংলগ্ন জমির মালিক ও কৃষকদের সঙ্গে ঠিকাদারের লোকজনের বাকবিতণ্ডা হয়।

এরপর কৃষকরা ফসলাদির ক্ষতি হওয়ায় স্থানীয় চেয়ারম্যার আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। চেয়ারম্যান কৃষকদের ফসলের ক্ষয়ক্ষতি ও মাটি বিক্রি বন্ধের জন্য প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরে জেলা প্রশাসককের নিকট আবেদন করেন। এতে চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হাওলদার প্রতিবাদ করা কৃষদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে সাব-ঠিকাদার মামুন বাদি হয়ে পালং মডেল থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ে করেন।

ওই মামলায় গত ২৭ এপ্রিল সোমবার চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হাওলাদারকে আটক করে আদালতে সোর্পদ করে পালং মডেল থানা পুলিশ। মামলার অন্য আসামীরা পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

কৃষক নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, সরকারী খাল সরকার খনন করবে এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু দেখেন ফসলের ভিতরে কিভাবে মাটি ফেলে ফসল নষ্ট করছে। আর এই ফসলে মাধ্যে ট্রাক চালিয়ে কিভাবে আমাদের ক্ষতি করছে। এর প্রতিবাদ করায় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতেছে। এদেশে মানুষের কাছে জানানে চেয়ারম্যান কেমন মানুষ ? আমরা চেয়ারম্যানের মুক্তি চাই আর মিথ্যা মামলা দায়ের কারীদের বিচার চাই।

দক্ষিণ ভাষানচর গ্রামের খাদিজা আক্তার, হেলেনা বেগম, সাফিয়া বেগম, ইউনুস হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন ও বাবুল হোসেন ফকির জানান, আমরা গরিব মানুষ কৃষি কাজ করে খাই। সরকারী খাল খননে আমাদের কোন আপত্তি নাই। কিন্তু খাল খননের নামে আমাদের ফসলী জমিতে মাটি ফেলে ব্যপক ক্ষতি সাধন করে। এরপর ট্রাকে করে ফসলি জমির উপর দিয়ে ফসল নষ্ট করে ঠিকাদার মাটি বিক্রি করছে। এর প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যানকে চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে আটক করেছে। আমরা মিথ্যা মামলার বিচার চাই।

সাব-ঠিকাদার মতিউর রহমান মামুন বলেন, আমি খালের মাটি নিলামে কিনে নিয়েছি। কৃষকের জমি নষ্ট হয়েছে এমন কথা আমার জানা নাই। আমি যখন নিলামের টাকা রাজস্ব খাতে জমা দিয়ে মাটি আনতে গিয়েছি তখন চেয়ারম্যান আমার লোকের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। মাটি আনতে বাধা দিয়েছে। তাই আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম উদ্দিন বলেন, খালকাটা নিয়ে একটি চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। চেয়ারম্যানকে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুর রহমান শেখ বলেন, মাটি নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তাসহ একটি কমিটি মাটির মূল্য নির্ধারণ করে নিলাম করেছে। শুনেছি চেয়ারম্যানকে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App