×

সম্পাদকীয়

দ্রুত প্রতিকারের পদক্ষেপ নিন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ মে ২০২০, ১০:২৬ পিএম

নমুনা পরীক্ষার নামে ভোগান্তির খবর প্রতিদিন খবরের কাগজে আমরা দেখছি। নির্দিষ্ট হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব, পিপিই ও এন নাইনটি ফাইভ মাস্কের অভাব এসব তো আছেই। এখানেই ভোগান্তির শেষ নয়; নমুনা পরীক্ষায় ভুল রিপোর্টও আসছে। সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, আইইডিসিআরে প্রায় তিন হাজার নমুনা আটকে রয়েছে। এমন অসংখ্য অভিযোগ কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় সরকার নির্ধারিত হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে। উদ্বেগজনক হলো, কেবল রাজধানীতেই নয়; চট্টগ্রাম ও রাজশাহীসহ দেশের অন্যান্য হাসপাতালেও একই ধরনের অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হাসপাতালের এমন চিত্র অনভিপ্রেত ও অনাকাক্সিক্ষত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রাজধানীর ১০টি হাসপাতালকে নির্ধারণ করেছে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য। হাসপাতালগুলো হচ্ছে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতাল, রিজেন্ট হাসপাতাল উত্তরা ও মিরপুর, রাজারবাগ হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল এবং কাঁচপুর ব্রিজ সংলগ্ন সাজেদা ফাউন্ডেশন। এসব হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা বলছেন, এ হাসপাতালগুলো নির্ধারণ করা হলেও রাজধানীর দুটি মাত্র হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা হচ্ছে। বাকিগুলো বহির্বিভাগে করোনা উপসর্গ সর্দি, জ¦র, কাশি নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে। তাদের এখনো রোগী ভর্তি করানোর মতো প্রস্তুতি নেই। শুধু তাই নয়, যে দুটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া করা হচ্ছে সেগুলোতেও নেই পর্যাপ্ত জনবল, নার্স ও ইকুইপমেন্ট। নেই রোগীদের অক্সিজেনের ব্যবস্থা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবস্থা জটিল হলে কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন দিতে হয়। দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থায় অক্সিজেন সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আইইডিসিআরের বাইরে হাতেগোনা আরো কয়েকটি প্রতিতষ্ঠানে নমুনা পরীক্ষার সুযোগ থাকলেও সেগুলোতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে রোগীদের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রতিদিন তিনশ করে মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর বিপরীতে নমুনা পরীক্ষার জন্য জড়ো হন কয়েক হাজার মানুষ। গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়িয়ে নমুনা দেয়ার কারণেও আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার ফলে আক্রান্ত নন, এমন ব্যক্তিও সংক্রমিত হতে পারেন। নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে এভাবেই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। ডাক্তার-নার্স ও চিকিৎসকরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাদের সুরক্ষা সরঞ্জাম সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে, নইলে এ রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। চীনের অভিজ্ঞতা ও পদক্ষেপ থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশকে আরো সতর্ক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। হাসপাতালগুলোতে যে অব্যবস্থাপনা আমরা দেখতে পারছি তা দ্রুত নিরসন করতে হবে। আইসোলেশন ইউনিট মহামারি ঠেকানোর জন্য অনিবার্য একটি বিষয়। কয়টি হাসপাতালে আইনোলেশন ইউনিট রয়েছে। এখনো সময় আছে, যেসব প্রস্তুতিতে ঘাটতি রয়েছে তা দ্রুত দূর করতে সরকারকে আরো উদ্যোগী হতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App