×

জাতীয়

বেতন নিয়ে গড়িমসি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২০, ১০:২৭ এএম

বেতন নিয়ে গড়িমসি

ফাইল ছবি।

আগামী ২ মে থেকে সব কারখানা পুরোদমে ফের উৎপাদনে যাবে। ইতোমধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বেশ কিছু পোশাক কারখানা চালু করেছেন মালিকরা। যেসব শ্রমিক কাজে অংশ নিচ্ছেন তাদের মে মাসের পূর্ণ বেতন ও ঈদ বোনাস অনেকটা নিশ্চিত। কিন্তু যারা গ্রামে অবস্থান করছেন তাদের এপ্রিল ও মে মাসের বেতন ও ঈদুল ফিতরের উৎসব ভাতা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। আর মার্চ মাসের বেতনও অনেকেই পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে করোনা ভাইরাস মহামারির বিস্তার ঠেকাতে চলমান লকডাউনের মধ্যে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এপ্রিল মাসে যেসব শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে পারেননি তারা বেতনভাতার ৬০ শতাংশ পাবেন বলে জানিয়েছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। অন্যদিকে ঢাকার বাইরে অবস্থানরত পোশাক শ্রমিকদের বেতন পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৮ মার্চ থেকে দেশের সব পোশাক কারখানা ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। গত ৫ এপ্রিল কারখানা খুললেও বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা শুরু হলে ওইদিন গভীর রাতে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে গত ১১ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সরকার সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ালে বেশিরভাগ কারখানা সাধারণ ছুটির পরিবর্তে লে-অফ ঘোষণা করে।

সরকারের টাস্কফোর্স কমিটির সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে গত ২৫ এপ্রিল থেকে পোশাক কারখানা খুলতে শুরু করে। এর মধ্যে গত রবিবার ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের কিছু কারখানা, ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিল আশুলিয়া, সাভার, ধামরাই ও মানিকগঞ্জের কারখানা, ৩০ এপ্রিল রূপগঞ্জ, নরসিংদী, কাঁচপুর এলাকা, ২ ও ৩ মে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ এলাকার কারখানা চালু করা হবে।

কারখানা খোলার ক্ষেত্রে শুরুতে উৎপাদন ক্ষমতার ৩০ শতাংশ চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হবে। টাস্কফোর্সেরও ওই বৈঠকে গ্রামে অবস্থান করা শ্রমিকদের ঢাকায় আনা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিষয়টি প্রশাসন ও কারখানা মালিকদের চিঠির মাধ্যমে অবহিত করে পোশাক কারখানা মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। কিন্তু ওই চিঠিতে গ্রামে থাকা শ্রমিকদের বেতন প্রক্রিয়ার বিষয়ে কোনো কিছু বলা হয়নি। তাই বিষয়টি নিয়ে এখনো দ্বিধায় আছেন শ্রমিকরা। এজন্যই অসহনীয় ভোগান্তি ও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের হাজার হাজার শ্রমিক গত ২৫ মার্চ থেকে কর্মস্থলে ছুটে আসছেন।

এ বিষয়টি সুরাহা করতে গত মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরের শ্রম ভবনে শ্রমিক-মালিকদের নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। বৈঠকে মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সব শ্রমিকই আগে-পরে বেতন পাবেন। এপ্রিল মাসে লে-অফ ও বন্ধ থাকা কারখানার শ্রমিকদের মোট বেতন ৬০ ভাগ দেয়া হবে। আর এপ্রিল মাসে যেসব কারখানা যে কয়েকদিন চালু ছিল সে কদিনের শতভাগ বেতন তারা পাবেন। মাসের অবশিষ্ট দিনগুলোর ৬০ ভাগ বেতনও তাদের দেয়া হবে। এ সময় শ্রমিক নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, অন্যায়-অযাচিতভাবে কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই করা হচ্ছে। এটি বন্ধ করতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের আগ পর্যন্ত আর ছাঁটাই হবে না বলে মালিক প্রতিনিধিরা অঙ্গীকার করেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিজিএমইএ-বিকেএমইএ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, শুধু ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিকদের নিয়েই পোশাক কারখানা চালু করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ঢাকার বাইরে থেকে কোনো শ্রমিক আসতে পারবেন না। কারখানা মালিকরা বলেছেন, তাদের ওপর সরকারি যে বিধিনিষেধ রয়েছে, সে হিসেবে গত মার্চ মাসের বেতন পুরোটাই তারা দিয়ে দেবেন। তারা প্রায় ৯৭ শতাংশ বা এর বেশি বেতন দিয়ে দিয়েছেন বলেও আমাদের জানিয়েছেন। এপ্রিল মাসের বেতন সরকার যেভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং তাদের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, সে অনুযায়ী দেবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App