×

অর্থনীতি

পোশাকশ্রমিকরা এপ্রিলে ৬০ ভাগ বেতন পাবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২০, ০২:০১ এএম

করোনাভাইরাসের প্রভাবে এপ্রিল মাসে বস্ত্র ও পোশাক খাতের লে-অফ বা বন্ধ থাকা কারখানার শ্রমিকরা ৬০ ভাগ বেতন পাবে। আর যেসব কারখানায় অল্পকিছু দিন কাজ হয়েছে, যেসব শ্রমিকরা ওই কর্মদিবসের পুরো অর্থ পাবেন। একইসঙ্গে ঈদের আগে আর কোন ছাঁটাই হবে না।

আজ বুধবার শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক

মঙ্গলবার বিকেলে বিজয়নগরের শ্রম ভবনে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের নেতৃত্বে ত্রিপক্ষীয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ও সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সংসদ সদস্য ও সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সংসদ সদস্য ও বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান ও জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আনোয়ার উল আলম পারভেজ।

অন্যদিকে শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, শ্রমিক নেতা ডা. ওয়াজেদ প্রমুখ।

বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকের শুরুতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের বিষয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে মার্চ ও এপ্রিল মাসের বেতন পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়। মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সব শ্রমিকই আগে-পরে বেতন পাবে। এপ্রিল মাসে লে-অফ ও বন্ধ থাকা কারখানার শ্রমিকদের মোট বেতন ৬০ ভাগ দেয়া হবে। আর যে কতোদিন কারখানা চালু ছিল সে ক'দিনের শতভাগ বেতন পাবে।

আর শ্রমিক নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, অন্যায়-অযাচিতভাবে কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই করা হচ্ছে। এটি বন্ধ করতে হবে। এর প্রেক্ষিতে মালিক প্রতিনিধিরা ঈদের আগ পর্যন্ত আর ছাটাই হবে না বলে অঙ্গীকার করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ সিদ্ধান্ত একটি অমানবিক সিদ্ধান্ত। শ্রমিকরা মাসে কত টাকা বেতন পায়? বাসা ভাড়া, বাকির দোকান, ঔষধপত্রসহ পরিবারের অন্যান্য খরচ কিভাবে মেটাবে? শ্রমিক সংশ্লিষ্ট কারো সঙ্গে আলোচনা করে শ্রম মন্ত্রণালয় ও মালিকরা এক এক সময় এক একটি সিদ্ধান্ত নেয় যা কখনোই শ্রমিকদের কল্যাণে আসে না।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিজিএমইএ-বিকেএমইএ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, শুধুমাত্র ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিকদের নিয়েই পোশাক কারখানা চালু করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ঢাকার বাইরে থেকে কোনো শ্রমিক আসতে পারবেন না। বৈঠকে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক। এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (পোশাক কারখানার মালিকরা) প্রধানমন্ত্রীর কাছে ওয়াদা করেছেন যে জনস্বার্থে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কারখানা চালু করবেন। করোনাভাইরাসে যেন আরও অনেকে আক্রান্ত না হন, তাই (ঢাকার) বাইরে থেকে কোনো শ্রমিক আনবেন না। ঢাকায় যেসব শ্রমিক অবস্থান করছেন তাদের দিয়েই তারা কারখানা চালু করবেন। সে ভাবেই তারা কারখানা খুলছেন।

কারখানা মালিকদের প্রতি ইঙ্গিত করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা বলেছেন যে তাদের ওপর সরকারি যে বিধি নিষেধ রয়েছে, সে হিসেবে গত মার্চ মাসের বেতন পুরোটাই তারা দিয়ে দেবেন। তারা প্রায় ৯৭ শতাংশ বা এর বেশি বেতন দিয়ে দিয়েছেন বলেও আমাদের জানিয়েছেন। এপ্রিল মাসের বেতন সরকার যেভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং তাদের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, সে অনুযায়ী দেবেন। তারা এটি আমাকে নিশ্চিত করে গেছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, শ্রমিকরা কীভাবে (কারখানায়) আসবেন, কীভাবে যাবেন, কীভাবে থাকবেন- সেগুলো নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তারা যে পরীক্ষাগার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেগুলো তরান্বিত করতে বলেছি আমরা। শ্রমিকরা যদি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হন, তাহলে তাদের সুরক্ষার জন্য তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছে, সেটাও আমরা শুনেছি। বিদেশের অর্ডার রয়েছে বলে কিছু কারখানা খোলা দরকার মনে করছেন মালিকরা। তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাক্রমে কারখানা চালু করেছেন বলেও সাংবাদিকদের জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App