×

আন্তর্জাতিক

যা রটে তা কি বটে?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২০, ১১:২২ এএম

যা রটে তা কি বটে?

কিম জং-উন

‘কোরিয়ান পিপলস রেভোল্যুশনারি আর্মি’র ৮৮তম বার্ষিকী ছিল গত শনিবার। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে দিনটি উদযাপনের অনুষ্ঠানে কিম জং-উনকে দেখা যায়নি। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল ছিল উত্তর কোরিয়ার সূর্য দিবস বা ‘ডে অব দ্য সান’– যা কিম জং-উনের পিতামহ এবং উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং-এর জন্মদিন। কিন্তু সেদিনের অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন না কিম জং-উন। ফলে তার কী হয়েছে, তা নিয়ে ব্যাপক গুজব ছড়াচ্ছে চারদিকে। এরই মধ্যে খবর পাওয়া গেছে যে, চীন এমন একটি দল উত্তর কোরিয়ায় পাঠিয়েছে–যাতে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা আছেন। ফলে কিমের অসুস্থতার গুঞ্জন আরও জোরালো হচ্ছে। এসব খবরের সত্যতা কতটা, তা জানতে বিবিসির সংবাদদাতা লিজ ডুসেট কথা বলেছেন অ্যানা ফিফিল্ডের সঙ্গে, যিনি মার্কিন দৈনিক দি ওয়াশিংটন পোস্টর বেজিং ব্যুরোর প্রধান। কিম জং-উনকে নিয়ে একটি বইও লিখেছেন তিনি। গুজবের দেশ কোরিয়া গত সপ্তাহের শেষ দিকেই দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকেও খবর পাওয়া গেছে যে, কিম জং-উনের স্বাস্থ্য নিয়ে কিছু একটা ঘটেছে। তবে অ্যানা ফিফিল্ড বলছেন, উত্তর কোরিয়া এমন একটি দেশ যেখান থেকে সব সময় গুজব আসছে। তার ভাষায়, ‘সেখানকার কোনো সামরিক কর্মকর্তা মারা গেছেন বলে হয়তো দক্ষিণ কোরিয়ায় খবর বের হলো–আর তারপরই দেখা গেল সেই কর্মকর্তা দিব্যি জীবিত হেঁটে-চলে বেড়াচ্ছেন। তাই এসব গুজব নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব। উত্তর কোরিয়া এ ক্ষেত্রে একটা ব্ল্যাক হোলের মতো। তবে এটা বলতেই হবে যে, কিম জং-উনকে নিয়ে সম্প্রতি একের পর এক গুজব বের হচ্ছে এবং তা আসছে একাধিক সূত্র থেকে। এ থেকে মনে হচ্ছে যে, উত্তর কোরিয়ায় হয়তো সত্যি কিছু একটা ঘটেছে।’ অ্যানা ফিফিল্ড বলছেন, এমন মনে করার কারণ-উপরোক্ত দুটি অনুষ্ঠানে কিম জং-উনের অনুপস্থিতি। কারণ এটা খুবই অস্বাভাবিক। তবে ঠিক কী ঘটেছে তা এখনো অজানা। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্স একটি রিপোর্টে বলেছে, কিম পরিবারের একটি অবকাশযাপন কেন্দ্রে কিছুদিন আগে এমন একটি ট্রেন দেখা গেছে–যা ওই পরিবার ব্যবহার করে। উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলের ওই অবকাশযাপন কেন্দ্রটি কিম জং-উনের খুবই প্রিয় বলে জানা যায়। অসুস্থতা নাকি স্রেফ ছুটি? ‘ফলে এর অর্থ হতে পারে এই যে, তিনি হয়তো সেখানে কোনো অসুস্থতা থেকে সেরে ওঠার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন’, বলেন অ্যানা ফিফিল্ড। তিনি এও বলেন, ‘অবশ্য এর এমন অর্থও হতে পারে যে, কিম জং-উন সেখানে সি-বিচে ছুটি কাটাচ্ছেন। অথবা হয়তো সেখানে কোনো উপগ্রহ ব্যবস্থা স্থানান্তর করা হচ্ছে–যা তারা প্রায়ই করে থাকেন। ফলে আসলেই ঠিক কী হচ্ছে- তা বলা কঠিন।’ এদিকে কিম জং-উনকে সবশেষ প্রকাশ্যে দেখা যায় গত ১১ এপ্রিল। যারা সেই ছবি দেখেছেন তারা বলছেন, তাকে দেখে তিনি ঠিক সুস্থ আছেন বলে মনে হচ্ছে না। কিম এখন অনেক মোটা হয়ে গেছেন। তার জীবনযাপনও ঠিক স্বাস্থ্যসম্মত বলে মনে করা হয় না। অ্যানা ফিফিল্ড জানান, সেই ছবি তিনিও দেখেছেন এবং কিম জং-উনকে নিয়ে গুজব ছড়ানোর এটাও একটা কারণ। অ্যানার কথায়, ‘তার বয়স মাত্র ৩৬, সে তুলনায় তার ওজন অত্যন্ত বেশি। তিনি সর্বক্ষণ ধূমপান করেন। এমন কী তার স্ত্রীও বলেছেন যে, তিনি কিছুতেই কিমের সিগারেট খাওয়া বন্ধ করাতে পারছেন না। ফলে তাকে এখন এমন কারও মতোই দেখায়, যার যেকোনো সময় হৃদরোগের মতো সমস্যা হতে পারে।’ যা রটে তা কি বটে? এ কারণে মনে করা হচ্ছে, এসব গুজবে হযতো কিছুটা সত্যতা রয়েছে। যেমন-এক খবরে বলা হয় যে, কিম জং-উনের রক্তনালীতে স্টেন্ট বা রিং পরানো হয়েছে। এদিকে বিশ্বব্যাপী যে করোনাভাইরাস মহামারি চলছে, তা নিয়ে উত্তর কোরিয়া বলেছে, সেখানে কেউ আক্রান্ত হয়নি। তবে এ বিষয়ে অ্যানা ফিফিল্ড বলেন, ‘সংখ্যায় কম হলেও উত্তর কোরিয়ায় কিছু লোক হয়তো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হযে থাকতে পারেন। এমন মনে করার কারণও আছে। উত্তর কোরিয়ার কিছু জেনারেলকে কিমের আশপাশে থাকার সময় মাস্ক পরতে দেখা গেছে। ফলে তার অসুস্থতার গুজবের পেছনে অনেক কারণই থাকতে পারে।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App