×

স্বাস্থ্য

টিকাদান বিঘ্নিত হওয়ায় শিশুদের স্বাস্থ্য হুমকিতে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২০, ০১:৫৬ পিএম

টিকাদান বিঘ্নিত হওয়ায় শিশুদের স্বাস্থ্য হুমকিতে

ইউনিসেফ

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বিশ্বে শিশুদের নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে শিশুরা যদি তাদের জীবন রক্ষাকারী টিকা না পায় তাহলে এই অঞ্চল আরও একটি স্বাস্থ্যজনিত জরুরি অবস্থার মুখোমুখি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)।

মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবিৃতিতে এ সতর্ক বার্তা দেয় শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। একই সঙ্গে যেসব স্থানে টিকাদান কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে, সেসব স্থানে কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণের আসার পরপরই টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য ইউনিসেফ সরকারগুলোর প্রতি জোরালোভাবে আহ্বান জানায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইউনিসেফ টিকাদান থেকে একেবারে বাদ পড়া অথবা আংশিকভাবে টিকা পাওয়া শিশুদের প্রায় এক চতুর্থাংশ বা প্রায় ৪৫ লাখ শিশু দক্ষিণ এশিয়ায় বাস করে। এই শিশুদের প্রায় সবাই, বা ৯৭ শতাংশ ভারত, পাকিস্তান বা আফগানিস্তানে বসবাস করে। এমনকি কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের আগেও দক্ষিণ এশিয়ার ৪৫ লাখ শিশু নিয়মিত টিকা থেকে বাদ পড়েছে। করোনা মোকাবিলার অংশ হিসেবে লকডাউন কার্যকর থাকা অবস্থায় অভিভাবকরাও তাদের বাচ্চাদের রুটিন টিকাদানের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেগে অনাগ্রহী। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নেপালের বিভিন্ন অঞ্চলে বিচ্ছিন্নভাবে হাম ও ডিপথেরিয়াসহ টিকা প্রতিরোধী রোগ ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। বিশ্বের মধ্যে স্থানীয়ভাবে পোলিও সংক্রমণ দেখা দেয়া দুটি দেশ- আফগানিস্তান ও পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলেরই দেশ।

বিবৃতিতে ইউনিসেফ দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক কার্যালয়ের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা পল রাটার বলেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও ফ্লাইট বাতিল হওয়ার কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় এই অঞ্চলের কিছু দেশে ভ্যাকসিনের মজুদও বিপজ্জনক মাত্রায় কমে গেছে। এছাড়া ভ্যাকসিনের উৎপাদন ব্যবস্থাও বিঘ্নিত হয়েছে, যা অতিরিক্ত ঘাটতি তৈরি করছে। লাখ লাখ শিশুকে সাধারণত যেসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেয়া হয় সেগুলো বন্ধ রয়েছে এবং টিকাদানের বিস্তুৃত কার্যক্রমও স্থগিত রয়েছে, যা চ্যালেঞ্জ বাড়িয়ে দিয়েছে।

পল রাটার বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সামনের সারিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীরা যথাযথ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, বিশেষ করে তাদের হাত ধুচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত টিকাদান থেকে বিরত থাকার কোনো কারণ নেই। প্রকৃতপক্ষে টিকাদান অব্যাহত রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই অঞ্চলজুড়ে জাতীয় গণ টিকাদান কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও নেপাল তাদের জাতীয় হাম ও রুবেলার টিকাদান কর্মসূচি স্থগিত করেছে এবং পাকিস্তান ও আফগানিস্তান তাদের পোলিও টিকাদান কার্যক্রম স্থগিত করেছে। বাংলাদেশে স্থগিত হওয়া হাম ও রুবেলা টিকাদান কার্যক্রমের লক্ষ্য হচ্ছে ৯ মাস থেকে ৯ বছরের মোট ৩ কোটি ৪০ লাখ শিশুকে টিকা দেয়া।

ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক পরামর্শগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন নিয়মিত টিকাদান অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্দেশনা জারি করেছে। স্থায়ী এবং বিস্তৃত পরিসরে অস্থায়ী উভয় ধরনের কেন্দ্রের মাধ্যমে অপরিহার্য সেবা হিসেবে নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যা রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে লড়াই করে। তবে, বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর বিস্তারের কারণে টিকাদান কার্যক্রমের সংখ্যা বেশ কমে এসেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App