×

জাতীয়

সরকারের ‘একলা চলো’ নীতির কারণে জনগণ ঝুঁকিতে পড়েছে’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২০, ০৪:৩৫ পিএম

সরকারের ‘একলা চলো’ নীতির কারণে জনগণ ঝুঁকিতে পড়েছে’
সরকারের ‘একলা চলো’ নীতির কারণেই জনগন করোনাভাইরাসের ‘প্রচণ্ড ঝুঁকি’র মধ্যে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ক্ষতিগ্রস্থ নেতাকর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঈদ উপহার দেওয়ার সময় তিনি এ অভিযোগ করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করবার জন্য যে সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়ার কথা ছিলো সেই উদ্যোগ নিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এককথায় তারা(সরকার) করোনাভাইরাসকে মোকাবিলা করতে গিয়ে পুরোপুরিভাবে ব্যর্থতার পরিচায় দিয়েছেন। সেই একলা চলো নীতি তাদের সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থার যে নীতি, সেই নীতির কারণেই আজকে জনগন প্রচণ্ড রকমের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে যে, সত্য কথাটি জানতে আমরা জানতে পারছি না, ইনফরমেশনগুলো আমরা পাচ্ছি না। যে কথাগুলো সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে বাস্তবতার কতটুকু মিল আছে তা সম্পর্কে সকল জনগনের মধ্যে ইতিমধ্যে প্রশ্ন এসে গেছে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা দেখছি যে, করোনাভাইরাসকে মোকাবিলা করার জন্য এই সরকারের আন্তরিক হয়ে যেভাবে এগিয়ে আসার কথা ছিলো সেটা তারা আসতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা প্রথম থেকে লক্ষ্য করেছি যে, তাদের মধ্যে প্রচন্ড রকমের উদাসীনতা ছিলো, অবহেলা ছিলো। যেটা রিজভী সাহেব বলেছেন যে, তারা অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলো। আমরা জানি কি কাজে ব্যস্ত ছিলো। তারা এটাকে প্রথম দিকে গুরুত্ব দেয়নি। যখন ঘাড়ের মধ্যে এসে পড়ে গেছে তখন এটাকে সামাল দেওয়ার মতো শক্তি তাদের ছিলো না। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে প্রমাণিত হয়েছে যে, তাদের যে শাসনব্যবস্থা সেটা কতটা ভঙ্গুর। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে গেছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আছে বলেই মনে করা যায় না। সাধারণ রোগীরা যাদের ক্যান্সার হয়েছে,যাদের হয়ত লাঞ্চ ক্যান্সার বা টিবি আছে বা যাদের এপেন্ডিসাইটিস রয়েছে তারা কোনো চিকিতসা পায় না। এটা বাস্তবতার কথা বলছি। করোনাভাইরাস মোকা্বলিায় জনসচেতনা সৃষ্টিসহ দলের বিভিন্ন কার্য্ক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা করোনা সংক্রামণ শুরু হওয়ার আগেই জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য লিফলেট বিলি করেছি, মাস্ক বিতরণ করেছি। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ড্যাব চিকিতসক-স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য পিপিই দিয়েছি, হটলাইন চালু করেছে রোগীর পরামর্শ দেয়ার জন্য। আমরা ৮৭ হাজার কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম এটা বিবেচনা করা হোক।” বিএনপি মহাসচিব বলেন, যেদিন আমরা প্যাকেজ ঘোষণা করি ওইদিন সরকারি দলের কয়েকজন নেতা আমাদেরকে যাচ্ছে-তাই তিরস্কার করেছে। অথচ তার পরের দিনই প্রধানমন্ত্রী আবার ৭৩ হাজার কোটি টাকার একটা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। পরে অবশ্য এটাকে ৯৫ হাজার কোটি টাকা করেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ৯৫ হাজার কোটি টাকার যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন তার মধ্যে ৭৭ হাজার কোটি প্রণোদনা ব্যাংক ঋণ। মাত্র ১৬ হাজার কোটি টাকা সরকারের বাজেট ও সরকারি কোষাগার থেকে যাচ্ছে।এসব আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। এর জবাবও সরকার দিচ্ছে না। সরকারের প্রতি আহবান রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন এটা এখন রাজনৈতিক বির্তকের সময় নয়, এটা এখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সময় নয়। অহংকার এবং আত্মম্ভরিতা বাদ দিয়ে আসুন সমগ্র জাতিকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করি, ঐক্যবদ্ধ করে সমগ্র জাতিকে করোনাভাইসের যে আগ্রাসন সেই আগ্রাসন মোকাবিলা করার জন্য আমরা চেষ্টা করি। সেই উদ্যোগ আপনারা গ্রহন করুন।” তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের যে, সরকার সেটা করছেন না, করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি না। কারণ জনগনের কাছে তাদের জবাবদিহিতা নেই। ছাত্র দলের নিহত তিন পরিবার যথাক্রমে নুর আলম, নুরজ্জামান, ও মাহবুবুর রহমান বাপ্পীর পরিবারের হাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঈদ উপহার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব। সারাদেশে গুম-খুন-নির্যাতনে নিহত সহাস্রাধিক নেতা-কর্মীর পরিবারের কাছে এই উপহার পৌঁছিয়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি। দলের নির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা রিয়াজ উদ্দিন নসু, ইশরাক হোসেন, আমিনুল ইসলাম, আতিকুর রহমান রুমন, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াসীন আলী, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, নাজমুল হাসান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের শায়রুল কবির খান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App