×

জাতীয়

১০ টাকা কেজি দরের চাল যায় কই!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২০, ০৭:১২ পিএম

১০ টাকা কেজি দরের চাল যায় কই!

ফাইল ছবি

১০ টাকা কেজি দরের চাল যায় কই!

অভিযুক্ত ডিলার

দেড় শতাধিক সুবিধাভোগীর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরের ৩০ কেজি করে চাল না দিয়ে আত্মসাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ডিলার হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে। অথচ তালিকায় ৫৬০ জনের নাম থাকলেও ট্যাগ অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে ৫ বছর ধরে চাল আত্মসাত করছেন ডিলার। এর প্রতিকার চেয়ে বৃহস্পতিবার গজারিয়ার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের ২২ জন ভুক্তভোগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভূমিহীন, কৃষি শ্রমিক, দিনমজুর, ভিক্ষুকসহ দুস্থ প্রত্যেক কার্ডধারী পরিবার সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর, মার্চ ও এপ্রিল মাসে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল পাবেন। ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয় ও ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে সরকারি গুদামে চাল সংকট হলে কর্মসূচিটি স্থগিত করা হয় এবং ২০১৮ সালের মার্চ থেকে আবারও শুরু হয়। সে হিসেবে চলতি এপ্রিল পর্যন্ত ১৭ মাসে দেড় শতাধিক মানুষের ২৪ লক্ষাধিক টাকার ৭৫ মেট্রিক টনের বেশি চাল আত্মসাৎ করেছেন এই ডিলার।

বাউশি গ্রামের ছবিয়া, কায়ছার, স্বপ্নাসহ কয়েকজন জানান, নদীভাঙনের শিকার এসব মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থায় ২০১৬ সালেই সাক্ষর করে কার্ড জমা নিয়েছেন ডিলার হামিদুর রহমান। কার্ড জমা নেয়ার কারণ জানতে চাইলে ডিলার বলেছেন, অফিস থেকে নাম কেটে দেয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে ওই তালিকায় নাম আছে বলে জানতে পারেন এসব সুবিধাবঞ্চিতরা। বিষয়টি জানতে পেরে ডিলার হামিদুর রহমান কার্ডধারীদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরাই।

[caption id="attachment_216874" align="aligncenter" width="300"] অভিযুক্ত ডিলার[/caption]

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) জমা দেয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এসব ভুক্তভোগীরা কোন চাল পাননি। তাই শুরু থেকেই এ পর্যন্ত সব চাল পাওয়ার দাবি করেছেন ইউএনওর কাছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই তালিকা প্রকাশ হলে বিষয়টি জানতে পারেন এসব মানুষ।

অভিযোগ অস্বীকার করে ডিলার মো. হামিদুর রহমান বলেন, যারা অভিযোগ দিয়েছেন তাদের নাম অফিস থেকে কেটে পরিবর্তন করা হয়েছে। সংশোধন করে তিনবার এই তালিকা হয়েছে। তাদের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়নি।

ফুলছড়ি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মো. আলাউদ্দিন বসুনিয়া বলেন, আমার কর্মএলাকা সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়। আমি এখানে অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।

উপজেলা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সভাপতি ও ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু রায়হান দোলন বলেন, আমার কাছে কিছু ভিডিও ফুটেজ এসেছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত ডিলারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জহিরুল ইসলাম বিকেলে বলেন, আমরা জানি নিয়মানুযায়ীই সব হচ্ছে। প্রমাণ পেলে আমরা ডিলারের বিরুদ্ধে মামলা করবো। এর সাথে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App