×

জাতীয়

পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে দায়িত্বহীন আচরণ নয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২০, ০৬:৩৩ পিএম

সকালে সীমিত আকারে কারখানা খোলা রাখার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর, আবার বিকেলে ‘সারাদেশ ঝঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর-এহেন দ্বায়িত্বজ্ঞানহীন ঘোষণা করে পোষাক শ্রমিকদের নিয়ে দায়িত্বহীন আচরণ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সেই সাথে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সমন্বয়হীনতায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন জোটের নেতারা।

শুক্রবার বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ ও কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বাসদ এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী, কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক আজ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় যেখানে দরকার দেশের সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক শক্তি, বিশেষজ্ঞ, ব্যক্তি-গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করে সমন্বিত জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা সেখানে সরকার একদিকে দলীয় সংকীর্ণতা ও একগুয়েমী মনোভাবের দ্বারা পরিচালিত হয়ে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবেলায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। অন্যদিকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সমন্বয়হীনতা ও অস্থিরতার চিত্রও প্রকাশিত হচ্ছে। গত বৃহষ্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ঢাকা বিভাগীয় বিভিন্ন জেলার প্রশাসনের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন সীমিত আকারে কারখানা চালু রাখা যাবে। আর বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংক্রমণ রোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী ঘোষণা করলেন ‘সারাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, যদি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঘোষণা অনুযায়ী ‘সারাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ’ হয় তাহলে কারখানা কিভাবে চালু রাখবে? আর সরকারের এহেন সমন্বয়হীনতা ও অস্থিরতার সুযোগে স্বার্থান্বেষী মুনাফালোভী ‘পোশাক কারখানার মালিকদের’ সংগঠন বিজিএমইএ এর সভাপতি রুবানা হক ২৬ এপ্রিল তারিখ থেকে পোশাক কারখানা চালু রাখতে শ্রমিকদের ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ শিল্পাঞ্চলে পরিবহনের জন্য বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান বরাবর বাস চেয়ে চিঠি দিয়েছেন এবং তার অনুলিপি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর পাঠিয়েছেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে সরকার ও মালিকদের দায়িত্বহীন আচরণের জন্য গত ২৬ মার্চ তারিখ তারা একবার নানা সমস্যা-সংকট মোকাবেলা করে বাড়ি গিয়েছিল আবার ৫ এপ্রিল কারখানা খুলবে বলে তাদেরকে পরিবহন বন্ধের মধ্যেও ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ শিল্পাঞ্চলে ফিরতে বাধ্য করে। যাতে করে ঐ পোষাক শ্রমিকদের মাঝে ও সারাদেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়েছে। উপরন্তু পোশাক মালিকেরা এখনও পর্যন্ত সকল শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ না করায় শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে এবং বিভিন্ন জায়গায় বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করতে বাধ্য হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে পোষাক শ্রমিকদের মার্চ মাসের বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধ এবং আগামী ৩ মাসের বেতন প্রতি মাসে শ্রমিকের ব্যাংক একাউন্টে প্রদানের দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি যখন বাড়ছে এবং সংক্রমণের ৪র্থ ধাপে দেশ পৌঁছেছে তখন ২৬ এপ্রিল তারিখ থেকে পোশাক কারখানা চালুর সরকার ও মালিকদের ঘোষণা গোটা দেশকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলবে। ফলে সরকারকে এহেন বিপদজনক সিদ্ধান্ত বাতিল করে কারখানা এখনই চালু না করার দাবি জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App