×

আন্তর্জাতিক

করোনা ভাইরাস আবিষ্কারক স্কুল ছেড়ে যাওয়া এক নারী!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২০, ১০:২৮ এএম

করোনা ভাইরাস আবিষ্কারক স্কুল ছেড়ে যাওয়া এক নারী!

ড. আলমিডা

মানবদেহে সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম করোনা ভাইরাস প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন যে নারী তিনি স্কটল্যান্ডের একজন বাসচালকের মেয়ে, স্কুল ছেড়েছিলেন ১৬ বছর বয়সে। ভাইরাস ইমেজিংয়ের পথিকৃৎ জুন আলমিডার কাজ নভেল করোনা ভাইরাস মহামারির এই সময়ে আবার আলোচনায় এসেছে। কোভিড-১৯ রোগের জন্য দায়ী নভেল করোনা ভাইরাস একটি নতুন ভাইরাস। তবে ১৯৬৪ সালে লন্ডনের সেন্ট টমাস হাসপাতালে নিজের ল্যাবরেটরিতে ড. আলমিডা যে ধরনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত করেছিলেন এটা সেই একই ধরনের একটি ভাইরাস। এই ভাইরোলোজিস্টের জন্ম ১৯৩০ সালের ৫ অক্টোবর জুন হার্টে এবং তিনি বেড়ে ওঠেন গ্লাসগোর উত্তরপূর্বে আলেকজান্দ্রা পার্কের কাছে একটি বড় ফ্ল্যাট বাড়িতে, যেখানে অনেক পরিবারের বসবাস ছিল। সামান্য কিছু লেখাপড়ার পরই স্কুল ছাড়েন জুন আলমিডা। তবে তিনি কাজ পেয়ে যান গ্লাসগো রয়েল ইনফারম্যারির হিসটোপ্যাথোলোজিতে ল্যাবরেটোরি টেকনিশিয়ান পদে। পরে পেশাগত উৎকর্ষতার জন্য লন্ডনে চলে যান জুন আলমিডা এবং ১৯৫৪ সালে বিয়ে করেন ভেনেজুয়েলার আর্টিস্ট এনরিকস আলমিডাকে। মেডিকেল লেখক জর্জ উইনটারের তথ্য মতে, ছোট মেয়েকে নিয়ে এই দম্পতি পাড়ি জমিয়েছিলেন কানাডার টরন্টোতে। অন্টারিও ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে একটি ইলেকট্রন মাইক্রোসকোপ দিয়ে অসাধারণ দক্ষতা অর্জন করেন ড. আলমিডা। এন্টিবডি ব্যবহার করে ভাইরাসকে আরো ভালোভাবে দেখতে পাওয়ার একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেন তিনি। বিবিসি রেডিও স্কটল্যান্ডের ড্রাইভটাইম অনুষ্ঠানে উইনটার বলেন, যুক্তরাজ্য তার (জুন আলমিডা) মেধার স্বীকৃতি দেয় এবং লন্ডনের সেন্ট টমাস হসপিটাল মেডিকেল স্কুলে কাজ করার জন্য ১৯৬৪ সালে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। চলতি মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে এই হাসপাতালেই তার চিকিৎসা হয়। জুন আলমিডা লন্ডনে ফিরে ড. ডেভিড টেরেলের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ শুরু করেন, যিনি উইল্টশায়ারের সলসবারিতে সাধারণ সর্দি-ঠাণ্ডা (কমন কোল্ড) নিয়ে গবেষণা করছিলেন। এই গবেষণায় তার টিম সাধারণ ঠাণ্ডার সঙ্গে সম্পর্কিত কয়েকটি ভাইরাস খুঁজে পান, তবে সবগুলো পাননি। আবার ভলান্টিয়ারদের মধ্যে ঠাণ্ডার উপসর্গ ছড়িয়ে দিতে পারলেও সেল কালচারে ওই ভাইরাস আনতে পারছিলেন না। এরপর তারা ওই সব নমুনা জুন আলমিডার কাছে পাঠান। তখন তিনি নমুনাগুলোতে ভাইরাস পার্টিকেল দেখতে পান। সেগুলোকে তিনি বর্ণনা করেন, ইনফ্লুয়েজা ভাইরাসের মতো তবে পুরোপুরি এক নয়। তার শনাক্ত করা এই ভাইরাসই প্রথম ?হিউম্যান করোনা ভাইরাস হিসেবে পরিচিতি পায়। এই প্রতিষ্ঠান ছাড়ার পর আলমিডা ইয়োগা শেখানো শুরু করেন। তবে আশির দশকের শেষ দিকে আবার ভাইরোলোজিতে ফিরে আসেন পরামর্শক হিসেবে এবং এইচআইভি ভাইরাসের ছবি তুলতে সহায়তা করেন তিনি। ৭৭ বছর বয়সে ২০০৭ সালে মারা যান জুন আলমিডা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App