×

জাতীয়

চিনে ফেলার আতঙ্কে করো সঙ্গে মিশতেনও না!

Icon

nakib

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২০, ০৪:৫৩ পিএম

চিনে ফেলার আতঙ্কে করো সঙ্গে মিশতেনও না!

বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদ।

চোরের মন পুলিশ পুলিশ তাই বাড়ির মূল দরজায় সব সময় তালা লাগানো থাকতো। বাইরের কাউকে বাড়িতে ঢুকতেও দেয়া হতো না। পাছে কেউ চিনে ফেলে এমন আতঙ্ক গ্রাস করে রাখতো রাতদিন। এভাবেই ২৩ বছর কলকাতায় আত্মগোপনে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর খুনি আব্দুল মাজেদ। বিবাহিত আর তিন সন্তানের বাবা পরিচয় গোপন করে মাজেদ বিয়েও করেছিলেন কর্ম বয়সী এক নারীকে। মাজেদের স্ত্রী সেলিনা বেগম পুলিশকে বলেন, ‘ব্যাগের মতো তার অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিসে কাউকে হাত দিতে দিত না মাজেদ। মহল্লায় খুব একটা মেলামেশা করতো না মাজেদ। কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের বেডফোর্ড লেনের বাসিন্দারা মাজেদকে শিক্ষক তথা মাস্টারমশাই হিসেবেই জানতেন। তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে পাস করেছেন। টিউশন পড়িয়ে সংসার চালাতেন। প্রথমে তালতলায় ভাড়া বাড়িতে একাই থাকতেন, পরে চলে এসেছেন পার্ক স্ট্রিটে। এটাই ছিল সাদামাটা ধারণা। কেউ স্বপ্নেও ধারণা করতে পারেননি শান্ত মুখচোরা স্বভাবের এই মাস্টার মশাইই ছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি। গত ৭ এপ্রিল ঢাকার মিরপুরে গ্রেপ্তার করার পর সংবাদমাধ্যমে মাজেদের ছবি দেখে বেডফোর্ড লেনের বাসিন্দাদের চোখ চড়কগাছ। তারা মাজেদকে চিনতেন ‘আলী আহমেদ ওরফে ইংরেজির মাস্টারমশাই’ হিসেবে। আর তিনিই কিনা বঙ্গবন্ধুর খুনি! গত ১১ এপ্রিল রাত ১২টা ১ মিনেটে খুনি মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর হতবাক পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দারা। যারা তাকে কখনো উচ্চৈঃস্বরে কথাও বলতে শোনেননি, হিংসা-বিবাদ তো দূরের কথা লোকটা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও পড়তেন নিয়ম করে। সেই কিনা একজন ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত খুনি। কলকাতার দৈনিক বর্তমান পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাজেদ গত ২২ ফেব্রুয়ারি কলকাতার পিজি হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট আনতে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর ফেরেননি। কলকাতায় মাজেদের স্ত্রী পার্ক স্ট্রিট থানায় ডায়েরি করেন। এরপর পিজি হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটেও মাজেদের খোঁজ পায়নি পুলিশ। তবে মাজেদের ভাড়া বাড়ি থেকে একটি ব্যাগ পায়। সেই ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে সিম কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড, ভারতীয় পাসপোর্ট এবং এক নারীসহ তিন শিশুর ছবি পায়। মাজেদ ২০১১ সালে তার থেকে ৩২ বছরের ছোট সেলিনা বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের ছয় বছরের এক মেয়েও আছে। কিছুদিন ধরেই মাজেদের শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না। গত জানুয়ারি মাসে কলকাতায় পিজি হাসপাতালে তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করান। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট আনতে গিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান মাজেদ। ভয়ংকর ঘাতক মাজেদ ভারতে লুকিয়ে থাকতে পারেন এমন দাবি বাংলাদেশ বিভিন্ন সময় ভারতের কাছে তুলেছে। ভারত এ বিষয়ে বাংলাদেশের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য চেয়েছিল। গত ৭ এপ্রিল ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছিল, পলাতক ঘাতক আব্দুল মাজেদ হঠাৎ কীভাবে দেশে এলো? জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছিলেন, হয়তো করোনার ভয়ে চলে এসেছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App