×

সাহিত্য

উৎকণ্ঠা আর শংকায় কাটছে সময়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২০, ০৯:৫০ পিএম

উৎকণ্ঠা আর শংকায় কাটছে সময়

প্রকাশক, ফরিদ আহমেদ

উৎকণ্ঠা আর শংকায় কাটছে সময়

ফরিদ আহমেদ, প্রকাশক

বিশেষ সাক্ষাৎকার ফরিদ আহমেদ, প্রকাশক, সময় প্রকাশন
দেশের স্বনামধন্য প্রকাশক ফরিদ আহমেদ তারুণ্যে ভরপুর একজন প্রাগ্রসর ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ও সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী। ‘বই সময়ের প্রতিধ্বনি’ এই স্লোগানে ১৯৮৮ সালে তার হাত ধরে যাত্রা শুরু করে ‘সময় প্রকাশন’। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রগতির অভিযাত্রায়, নতুন ধাঁচের বৈচিত্র্যময় এবং ভিন্নস্বাদের সৃষ্টিশীল বই প্রকাশ করে মহৎ চিত্তের প্রতিধ্বনি তুলে সময়ের দাবি মিটিয়ে চলেছে ‘সময়’। প্রগতিশীল সমাজ গঠনের প্রত্যয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর পেছনে একজন সৃজনশীল ফরিদ আহমেদের প্রতিভার সঙ্গে ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমই সফলতার সজীব ফসল তুলতে সহায়তা করেছে। ব্যস্ত এই প্রকাশক নেতার করোনাকাল কেমন কাটছে জানতে চাইলে ভোরের কাগজকে তিনি বললেন,
ভালো বলার কোনো সুযোগ নেই। কিছুটা বিরক্তি, কিছুটা উৎকণ্ঠা, শংকা আর কিছুটা এলোমেলো ভাবনার মধ্য দিয়ে কাটছে সময়টা।
স্ফ্যাসিফিকলি বলবেন কীভাবে সময় কাটছে? এর জবাবে ফরিদ আহমেদ আরো বলেন,
এরকম অখণ্ড অবসর এর আগে কবে পেয়েছিলাম মনে নেই। অসামাজিক বলে পরিচিত সার্কেলে আমার দুর্নাম আছে। এই অবসরে সেই দুর্নাম ঘুচাবার কিছুটা চেষ্টা করছি। প্রকাশক সহকর্মী থেকে শুরু করে পরিচিতি বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজনদের ফোনে খোঁজ খবর নিচ্ছি। লকডাউন শুরুর আগে কিছু কাজ অফিস থেকে নিয়ে এসেছিলাম সেগুলো করছি। সংগঠনের কিছু কাজ চিঠিপত্র লেখালেখি ইত্যাদি করছি। আমার সময় কাজের মধ্য দিয়েই কেটে যাচ্ছে। সময়ের খুব অপচয় হচ্ছে না।
জানতে চাই আগের সময়ের চেয়ে এখনকার সময়ের কোনো হেরফের কি হচ্ছে না? প্রকাশক ফরিদ বলেন,
দুপুরের ঘুম নিয়ে খুব বিড়ম্বনায় আছি। বাসায় থাকার ফলে দুপুরে ভাত খাবার পরই একটু বিশ্রামের জন্য বিছানায় যাই আর ঘুমিয়ে পড়ি। দুপুরের এই এক দেড় ঘণ্টা ঘুমের রেশে রাতে ঠিকমতো ঘুম আসে না। আর রাতে ঘুম ভালো হয় না বলে পরদিন দুপুরে ঘুম আসে, এই ঘুমের ফলে আবারো সেই রাতে ঘুম ভালো হয় না- এরকম একটা চক্রে পড়ে গেছি। যা থেকে বের হতে পারছি না।
এই অখণ্ড অবসরে নিশ্চয়ই কিছু পড়ছেন? কী পড়ছেন? পড়ায় মন বসাতে পারছেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে বিশিষ্ট এই প্রকাশক বললেন,
আমি ফেইসবুকে মাঝে মধ্যে পোস্ট দিয়ে সবাইকে বই পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। যদিও আবদ্ধ মানসিক অবস্থায় বইয়ে মন বসতে চায় না। তবে অনেক মানুষের মানসিক শক্তি অনেক বেশি থাকে। আমি খুব বেশি অবসর পাচ্ছি না- এটা আগেই বলেছি। আমার কাজগুলো তিনটি ভাগ করে নিয়ে করছি। ফোনে অন্যের খোঁজ নেয়া, ফাইল ওয়ার্ক এবং চিঠি বা অন্য কিছু লেখালেখি অর্থাৎ ল্যাপটপে সময় দেয়া, বইপড়া, ফেইসবুক দেখা, ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাটি ইত্যাদি।
পড়ার ফাঁকে ফাঁকে কী প্রকাশনার কাজ করছেন? জানতে চাইলে ফরিদ আহমেদ বলেন,
বই পড়ার ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি বইমেলা ২০২০-এ সময় প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইগুলো প্রধান্য পাচ্ছে। কিছু বই প্রকাশের আগে ভালো করে পড়া হয়নি, আবার কিছু পাণ্ডুলিপি সময়ের অভাবে সম্পাদনা করা হয়নি বলে প্রকাশ পায়নি- এগুলো একটু নাড়াচাড়া করছি। এই পড়াকে আমি বলি ‘পাবলিশার্স রিডিং’। মনোযোগটা পুরোপুরি দেয়াই যাচ্ছে না।
[caption id="attachment_214058" align="alignnone" width="720"] ফরিদ আহমেদ, প্রকাশক[/caption] আপনার কি মনে হয় এটা প্রকৃতির প্রতিশোধ? ফরিদ আহমেদ বলেন,
হতে পারে। প্রতিশোধ কি না জানি না, তবে প্রকৃতি ডিজব্যালেন্স হলে এমন হতেই পারে। যা বহু বছর ধরে আমরা করে আসছি। মানুষের স্বেচ্ছাচারিতায় প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। ভারসাম্য নষ্ট হলে যে কোনো ধরনের বিপর্যয় ঘটতেই পারে। এর থেকে উত্তরণের পথ হচ্ছে- যে কোনো সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলা উচিৎ।
সংকট থেকে উত্তরণের উপায় কী? এমন প্রশ্নে ফরিদ আহমেদ বললেন,
বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্যও আমাদের তাই করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে সবার কাছে আমার একটাই আবেদন- বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রচারিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। মনোবল হারাবেন না। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেই আমাদের স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সচল করতে হবে দেশের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App