×

জাতীয়

স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরলে মুজিববর্ষের কর্মসূচি চলবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২০, ১০:১৫ এএম

স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরলে মুজিববর্ষের কর্মসূচি চলবে

ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী

বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারির পরিপ্রেক্ষিতে বছরজুড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও মুজিববর্ষের বিশাল কর্মযজ্ঞের ব্যাপক পুনর্বিন্যাস করা হবে বলে জানিয়েছেন জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। তিনি বলেন, সবকিছুই পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। বর্তমান এই পরিস্থিতি কতদিন থাকবে আমরা কেউই তা জানি না। এটি এখনই আন্দাজ করা সম্ভবও নয়। তাই দেশের অন্যান্য কর্মসূচির মতোই মুজিববর্ষের কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর আমাদের কর্মসূচিগুলো চলমান থাকবে।

এছাড়া মুজিববর্ষের কর্মসূচি একদিনের নয়, বছরব্যাপী। সময় ও প্রয়োজনমাফিক আমরা কর্মসূচিগুলো পুনর্বিন্যাস করে নেব। গতকাল মঙ্গলবার ভোরের কাগজকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকারে দেশ-বিদেশে মুজিববর্ষের কর্মসূচি পালন, বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো প্রসঙ্গে কথা বলেন ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে মুজিববর্ষের চলমান কর্মসূচি স্থগিত রয়েছে।

পরবর্তীতে কীভাবে এই কর্মসূচিগুলোর সমন্বয় করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে কামাল চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে মুজিববর্ষ উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। তাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ দেয়ার কথা ছিল। মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ভুটানের রাজা জিগমে খেসার ওয়ানচুকসহ আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র থেকে শুরু করে অনেক বিদেশি অতিথির আসার কথা ছিল। কিন্তু বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস নিয়ে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, এর প্রভাবে আক্রান্ত দেশসমূহের সরকার প্রধানরা তাদের নানা কর্মসূচি বাতিল করেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হওয়ায় প্যারেড গ্রাউন্ডে বড় পরিসরে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানটিও আর হয়নি। তিনি বলেন, করোনার কারণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস করেছি আমরা। সীমিত পরিসরে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা হয়। টেলিভিশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা উদ্বোধন করেছি। অনুষ্ঠানে যেসব অতিথি উপস্থিত হতে পারেননি তাদের বক্তৃতা আমরা প্যাকেজ প্রোগ্রামের মাধ্যমে তুলে ধরেছি। বছরজুড়ে চলমান মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে কিছু সংযোজন-বিয়োজন আসবে। পরিস্থিতিমাফিক অনুষ্ঠান সাজানো হবে।

বিদেশ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের যোগ দেয়া প্রসঙ্গে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা বিভিন্ন সেক্টরে বিশে^র গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। করোনার কারণে এখন গোটা বিশ^ই প্রায় অচল। করোনার প্রভাব থেকে মুক্তি পেয়ে পৃথিবী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার পর আমরাও আমাদের অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস করব। তখন অনেক অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং নিশ্চয়ই তারাও আসবেন। কারণ অনেকেই জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আসতে আগ্রহী।

বিশে^র বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন, এটিও বছরব্যাপী কর্মসূচির অংশ। আমাদের দূতাবাসগুলো নানান কর্মসূচিতে অনুষ্ঠানমালা সাজিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশই করোনার ছোবলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তারা আগে তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠুক। এরপর পরিস্থিতি অনুযায়ী আমাদের পুনর্বিন্যস্ত কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের দূতাবাসগুলো অনুরূপ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবে।

প্রসঙ্গত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে সরকারের দুটি কমিটি দায়িত্ব পালন করছে। গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সভাপতি করে ১০২ সদস্যবিশিষ্ট ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি’ ও জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে সভাপতি করে ৬১ সদস্যবিশিষ্ট ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App