×

সাহিত্য

ঘরবন্দী সময় কাটছে লেখালেখি-বইপড়ায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২০, ১০:৩০ পিএম

ঘরবন্দী সময় কাটছে লেখালেখি-বইপড়ায়

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান (উপরে), কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, কবি মাকিদ হায়দার ও কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী (নিচে)

ঘরবন্দী সময় কাটছে লেখালেখি-বইপড়ায়

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান

ঘরবন্দী সময় কাটছে লেখালেখি-বইপড়ায়

অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান

ঘরবন্দী সময় কাটছে লেখালেখি-বইপড়ায়

কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী

ঘরবন্দী সময় কাটছে লেখালেখি-বইপড়ায়

কবি মাকিদ হায়দার

ঘরবন্দী সময় কাটছে লেখালেখি-বইপড়ায়

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন

করোনার ধাক্কায় উৎকণ্ঠা নিয়ে বিপর্যস্ত ও অনিশ্চিত জীবনযাপন করছেন দেশের সতের কোটি মানুষ। এ আতঙ্কের বাইরে নেই লেখক বুদ্ধিজীবীরাও। হাজারো ব্যস্ততার মাঝে সময় কাটলেও এখন সবকিছু বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে করোনা আতঙ্কের জেরে। ফলে সময় কাটছে না লেখক বুদ্ধিজীবীদের। কেউ কেউ বাড়িতে বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। কেউবা সময় কাটাচ্ছেন লেখালেখি করে, পছন্দের বই পড়ে।

[caption id="attachment_213310" align="aligncenter" width="750"] জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান[/caption] জানতে চাইলে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ভোরের কাগজকে বলেন, শরীরটা খুব একটা সুস্থ নয়, তারপরও সভা সেমিনারে অতিথি হওয়ার জন্য বিভিন্ন জনের অনুরোধ উপেক্ষা করা যেতো না। কিন্তু এখন সভা সেমিনারে অংশ নিতে হচ্ছে না। অধিকাংশ সময়ই খবরের কাগজ পড়ে এবং ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই কাটাচ্ছি। তিনি বলেন, এ এক অন্য ধরণের অখণ্ড অবসর। যে অবসর দুঃশ্চিন্তা নিয়ে কাটছে। কারণ পৃথিবী এখন কঠিন সময় পার করছে। এটা কবে যে কাটিয়ে উঠবে তা-ও বলা যাচ্ছে না। এ মুহূর্তে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। [caption id="attachment_213311" align="aligncenter" width="900"] অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান[/caption]

লেখালেখি এবং বই পড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফোকলোরবিদ ও বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ওপর বিভিন্ন বই পড়ছি। তার মধ্যে নীতিশ সেনগুপ্তর লেখা ‘ল্যান্ড অব টু রীভার্স: অ্যা হিস্ট্রি অব বেঙ্গল ফ্রম দ্যা মহাভারত টু মুজিব’ অর্থাৎ মহাভারত থেকে মুজিব। এই বইটা খুব আনন্দের সঙ্গে পড়ছি। বাঙালিদের মধ্যে ওই একজন লোকই একটু বিস্তারে লিখেছেন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। মহাভারত থেকে মুজিব ওই নামটাতেই বোঝা যায় কতো বড়ো একটা প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

[caption id="attachment_213312" align="aligncenter" width="768"] কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী[/caption]

শামসুজ্জামান খান আরো বললেন, আরেকটা বই পড়ছি, যেটা বাংলা একাডেমির জন্য মূলত রিভিউ করছি। বইয়ের নাম নাইবা বললাম। উনবিংশ শতাব্দির বেঙ্গল। বাঙালি মুসলমানের যে চিন্তা চেতনা বিশেষকরে আদালত খান, ফোর্ড ইউলিয়াম পর্যায়ের একমাত্র বাঙালি মুসলমান অধ্যাপক আদালত খান। তার জীবন, কর্ম, পারিবারিক ইতিহাস নিয়ে লেখা। বেশ চমৎকার। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ওপর বিভিন্ন বই নিয়ে ১টা ৪০ মিনিটে চ্যানেল আইতে আমি আর হাবিবুল্লাহ সিরাজীর আলোচনায় একটা অনুষ্ঠান হয়। সেসব বইগুলো পড়ছি।

[caption id="attachment_213313" align="alignleft" width="300"] কবি মাকিদ হায়দার[/caption]

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, প্রতিদিন অফিসে এতো ব্যস্ততার মধ্যে থাকতাম, সময় কীভাবে ফুরিয়ে যেত বুঝতেই পারতাম না। আর এখন সময় থমকে আছে! তবু এই অবসরে বেশ কিছু কবিতা লেখা হয়েছে। একজন প্রকাশককে কথা দিয়েছিলাম ‘ছোটদের বঙ্গবন্ধু’র পাণ্ডুলিপি দেব। সেটা এখন তৈরি করছি। টেলিভিশনে, খবরের কাগজে প্রতিদিনের করোনার আপডেট জানার চেষ্টা করছি। গভীর রাতে সিনেমাও দেখছি। বই পড়ছি। একদম বসে নেই।

করোনার ধাক্কায় ‘গৃহবন্দী’ হয়ে আছেন সদ্য বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি মাকিদ হায়দার। বললেন, এ অবস্থায় ছাদে গিয়ে আকাশের তারা গুনছি। এমন পরিস্থিতিতে কোনো লেখা মাথায় আসছে না। শিল্প তো আর গায়ের জোরে হচ্ছে না। তবে পড়ছি রবীন্দ্রনাথের ‘ছিন্ন পত্রাবলী’। রবীন্দ্রনাথ তার ভাতিজি ইন্দিরা দেবীকে ১৪৫টা চিঠি লিখেছিলেন। আর ‘ছিন্নপত্র’ হচ্ছে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের রবীন্দ্রনাথের ভ্রমণ কাহিনি। এসব বই একাধিকবার পড়া হয়েছে। আবারও পড়ছি। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘দর্পণ’ পড়ছি। এছাড়া বাসার ছাদে গিয়ে বাগান পরিচর্যা করছি, পানি দিচ্ছি। যেখানে লাউ, কুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, জালি, করলা, গাছ লাগিয়েছি। ফলের গাছও আছে কলাগাছ, পেয়ারা, লিচু, আম গাছ, লেবুগাছ, কমলা গাছ।

করোনার অবসরে ‘বধ্যভূমিতে বসন্ত বাতাস’ নামে উপন্যাস লিখছেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। জানতে চাইলে বলেন, তিরিশ লক্ষ শহীদের শেষ নিঃশ্বাসটা স্বাধীনতার বসন্ত বাতাস। এটাকে কেন্দ্র করেই লিখছি। কীভাবে গণহত্যা গণকবর এসব উঠে আসবে এ উপন্যাসে। এ ছাড়া টেবিলের ওপর অনেকগুলো বই। তার মধ্য থেকে পড়ছি কলকাতা থেকে কেনা একটি বই। নাম হচ্ছে ‘ফিদেল ক্যাস্ট্রো’। লেখক বিপুল রঞ্জন সরকার। আরেকটা বই অন্নদাশংকর রায়ের নির্বাচিত রচনা। এটা বেশ বড়ো বই, পড়তে অনেক সময় লাগবে।

[caption id="attachment_213314" align="aligncenter" width="660"] কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন[/caption]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App