×

সারাদেশ

বরিশালে অবাধে চলছে জাটকা নিধন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২০, ০২:৪৯ পিএম

বরিশালে অবাধে চলছে জাটকা নিধন

বরিশালে বাজারে চাপিলা মাছের নামে বিক্রি হচ্ছে জাটকা

বরিশালের নদ-নদীতে অবাধে শিকার হচ্ছে ইলিশের পোনা। নিশেধাজ্ঞা অমান্য করে এ অঞ্চলের জেলেরা মাছ শিকার করলেও তা নজরে আসছে না প্রশাসনের। করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের মাঠ কর্মকর্তারা মনোযোগী থাকায় নদ-নদীতে অভিযান বন্ধ থাকার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন জেলেরা। বরিশালের হিজলা মেহেন্দিগঞ্জের মেঘনা, কালাবদর, লতা, ভোলা ও বরিশাল সদর উপজেলার অংশের মেঘনা ও তেতুলিয়া, বরিশালের কীর্তনখোলা, বানরীপাড়া-উজিরপুরের সন্ধ্যা, মুলাদীর আড়িয়ালখাসহ এখানকার সবকটি নদীতে এখন অবাধে চলছে ইলিশের পোনা নিধন। আর এসব মাছ বরিশাল নগরীসহ সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে। তিন থেকে চার আকৃতির ইলিশের পোনা চাপিলা নামে বিক্রি করা হচ্ছে প্রকাশ্যে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের মাঠ কর্মকর্তারা এখন বেশি মনোযোগী থাকায় নদ-নদীতে অভিযান বন্ধ রয়েছে। এ সুযোগে ব্যাপকহারে ইলিশের পোনা আহরণ করে চাপিলা নামে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। এর সঙ্গে মৎস্য অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা ও নৌ পুলিশের উৎকোচ বাণিজ্যেরও অভিযোগ রয়েছে। জেলেরা দাবি করছেন, দাদন ব্যবসায়ী মহাজনদের চাপের মুখে তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশের পোনা নিধনে বাধ্য হচ্ছেন। মৎস্য অধিদপ্তর এ তথ্য স্বীকার করে জানিয়েছে, করোনার কারণে অভিযান ব্যাহত হওয়ার সুযোগ নিচ্ছেন জেলে ও ইলিশ ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) নগরীর নতুনবাজার-সংলগ্ন স্থানে এক ব্যক্তিকে দেখা গেল কয়েকটি ঝাঁকাভর্তি ছোট মাছ বিক্রি করতে। ওই মাছ বিক্রেতার দাবি, এগুলো চাপিলা প্রজাতির মাছ। তবে আশপাশের পথচারীরা নিশ্চিত করেন, এ মাছগুলো ইলিশের পোনা। নগরীর সবগুলো কাঁচাবাজারে তিন থেকে চার আকৃতির ইলিশের পোনা চাপিলা নাম দিয়ে বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি মাছ বিক্রি করা হচ্ছে ২০০ টাকা দরে। বরিশাল মৎস্য কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস বলেন, এ অঞ্চলের নদ-নদীতে চাপিলা খুব কম পরিমাণে পাওয়া যায়, যা ধরা পড়ছে তার মধ্যে ইলিশের পোনা বেশি। বরিশাল নগরীর কাউনিয়া থানা পুলিশ নগরীর উপকণ্ঠে তালতলী বাজার থেকে গতসপ্তাহে আট ব্যারেল ইলিশের পোনা উদ্ধার করেছে। করোনার কারণে জাটকা নিধন বন্ধে প্রশাসনের অভিযান সীমিত। বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জাটকা (১০ রকম আকৃতির ইলিশ) রক্ষায় তা নিধনে ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা চলছে। এর পাশাপাশি দেশের পাঁচটি ইলিশ অভয়াশ্রমে গত ১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে সব ধরনের মাছ নিধনে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা, যা শেষ হবে আগামী ৩০ এপ্রিল। নিষেধাজ্ঞা পালনে কার্ডধারী প্রত্যেক জেলেকে চার মাস ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরই মধ্যে দুই মাসের বরাদ্দ বিতরণ চলমান রয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, জাটকা পাচারের অন্যতম রুট নগরীর উপকণ্ঠ তালতলি এবং মেঘনাতীরের উপজেলা হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ এ দুই উপজেলায় নৌ পুলিশ এবং মৎস্য কর্মকর্তাদের যোগসাজশে মেঘনায় ব্যাপকহারে ইলিশের পোনা নিধন হচ্ছে। হিজলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অনিল চন্দ্র দাস বলেন, করোনার কারণে কারও তো ঘরের বাইরে বের হওয়ার কথা নয়। করোনা আতঙ্কে অভিযান অনেকটা শিথিল হওয়ায় সুযোগ নিচ্ছে একটি শ্রেণি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App