×

সারাদেশ

‘সামাজিক দূরত্ব’ অমান্য করায় বাড়ছে জনসমাগম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২০, ০১:০৪ পিএম

করোনা আতঙ্কে সারাদেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। বন্ধ গণপরিবহন, ট্রেন, বিমান। বন্ধ রয়েছে সরকারি অফিস, আদালত, বেসরকারি অফিসের কার্যক্রমও। করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়েছে। বেসামরিক প্রশাসনের সহযোগিতার জন্য নামানো হয়েছে সেনা। আর এসবই করা হয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করোনা সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে। তবে গত দুদিন থেকেই সিলেটে সামাজিক দূরত্ব না মেনে ঘরের বাইরে আসছে অসংখ্য মানুষ।

বুধবার (১ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অবাধে চলছে রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা। মোড়ে মোড়ে বাড়ছে জনসমাগম। সরকারি নির্দেশনাকে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না কেউ। নগরীর আম্বরখানা পয়েন্টে দেখা যায়, যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে শ’দুয়েক সিএনজি অটোরিকশা। দুদিন আগেও যেখানে উপজেলার সঙ্গে একরকম বিচ্ছিন্ন ছিল সিলেট নগরী, সেখানে এখন অবাধে চলছে যান ও জন চলাচল। আম্বরখানা থেকে সালুটিকর, কোম্পানীগঞ্জ, টিলাগড়ের পথে অনেকটা স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলাচল করছে অটোরিকশা। একই অবস্থা নগরীর মদিনা মার্কেট, তালতলা, বন্দরবাজার, কদমতলী, হুমায়ুন রশিদ চত্বর এলাকাতেও। নগরীর আখালিয়া এলাকায় দেখা যায়, খোলা রয়েছে রেস্টুরেন্ট, চা স্টল।

সরকারি নির্দেশনা মতে, জরুরি সেবাসহ নিত্যপণ্য আর ফার্মেসি খোলা থাকার কথা থাকলেও সেই নির্দেশনা অমান্য করেই খোলা রয়েছে বিভিন্ন মিষ্টির দোকান, কনফেকশনারি, স্টেশনারি এমনকি হার্ডওয়ারের দোকানও। আর এসব দোকান খোলা থাকার কারণে নগরীতে বাড়ছে জনসাধারণের আনাগোনাও। এর ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ ব্যাপারে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক হিমাংশু লাল রায় ভোরের কাগজকে বলেন, সিলেটে গণপরিবহন বলতে কিছু নেই। সিএনজিগুলোই গণপরিবহনের ভ‚মিকায়। এমন অবস্থায় এক সিএনজিতে গাদাগাদি করে ৪/৫ জন লোক যাতায়াত করলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকবেই। কারণ আপনি জানেনও না আপনার পাশের যাত্রী করোনা বহন করছেন কিনা, এক্ষেত্রে সিএনজিতে একাধিক যাত্রী পরিবহন এড়িয়ে চলতে হবে। তিনি এক্ষেত্রে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দেন।

তিনি আরো বলেন, শুধু যানবাহনের ক্ষেত্রেই নয়, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে নিত্যপণ্যের দোকান আর কাঁচাবাজারের ক্ষেত্রেও। কোনোভাবেই এটি অমান্য করা উচিত নয়। এতে ঝুঁকি থেকেই যাবে। তবে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে, নিত্যপণ্যের দোকান কিংবা কাঁচাবাজারে সামাজিক দূরত্ব মানার ব্যাপারে অনীহা থাকলেও এদিকে নজর দিচ্ছে না প্রশাসন।

এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপকমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, আমরা এসএমপির পক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য নগরজুড়ে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। প্রয়োজন ছাড়া যাতে কেউ বাইরে না যান সে ব্যাপারে সচেতন করার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তারপরও গত দুদিন থেকে নগরীতে জনসমাগম বাড়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। পুলিশের টহল দলগুলো যেখানেই জনসমাগম দেখছে, সেখানেই লোকজনকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার অনুরোধ জানাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, সিএনজি স্ট্যান্ডগুলোতে হঠাৎ করেই ভিড় বাড়ছে; এটাও আমাদের নজরদারিতে আছে। আমরা ইতোমধ্যেই মালিক-চালকদের সঙ্গে কথা বলেছি, এরপরও যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয় তাহলে পুলিশ কঠোর হবে। এছাড়া অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান ছাড়া অন্য কোনো দোকান খোলা পেলেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে সিএনজি চালকদের ভাষ্য, বাধ্য হয়েই তারা ঘর থেকে বেরিয়েছেন। পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা পেলে তারাও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App