×

রাজধানী

রাজধানীতে সীমিত পরিমাণে খোলা হোটেল-রেস্তোরাঁ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২০, ১০:৪৪ এএম

রাজধানীতে সীমিত পরিমাণে খোলা হোটেল-রেস্তোরাঁ

অর্ধেক ঝাপ ফেলে রাখা হয়েছে হোটেলের। ছবি: ভোরের কাগজ।

করোনা ভাইরাসের প্রকোপ রোধে সরকারি নির্দেশে রাজধানীসহ পুরো দেশ লকডাউন রয়েছে। তবে এ আপৎকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বেকারির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখা যাবে বলা হলেও পুলিশ তা বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে কী খোলা রাখা যাবে, আর কী যাবে না- গত শনিবার তা স্পষ্ট করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির ঘোষণা অনুযায়ী, হোটেল ও বেকারি খোলা থাকবে। তবে এসব প্রতিষ্ঠানে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। এছাড়াও তারা নিয়ম মেনে খাবার দোকান খুললেও টহলরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা তা ফের বন্ধ করে দিচ্ছেন।

রাজধানী মৌচাক মোড়ে অবস্থিত মা রাঁধুনী হোটেলের ব্যবস্থাপক মানিক ভোরের কাগজকে জানান, তারা হোটেল খুললেও টহলরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা বন্ধ করে দিতে বলেন। পরে হোটেল খোলা রাখার বিষয়ে ডিএমপির নির্দেশনার কথা বললে তা জানা নেই বলে জানান। ম

গবাজার টেস্টি ট্রিটের বেকারি খোলা হলেও তা বন্ধ করে দেন টহরলত সেনা সদস্যরা। ওই বেকারিতে কর্মরত শাহীন জানান, বন্ধ করে দিতে বলায় তারা সব খাবার ফেরত দিয়েছেন।

একই চিত্র দেখা যায় রামপুরা কাঁচাবাজার সংলগ্ন আবু সাঈদ রেস্তোরাঁয়। তবে রামপুরা ডিআইটি রোডের আল কাদেরিয়া রেস্টুরেন্ট খোলা দেখে ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, প্রতিটি খাবার টেবিলে লেখা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে বসুন। একজন বের হলে তারপর প্রবেশ করুন। সে সময় ভোরের কাগজের সঙ্গে কথা হয় রেস্টুরেন্টটির স্বত্বাধিকারী ইফতেখার আমিনের সঙ্গে। তিনি জানান, ডিএমপির নির্দেশনা পেয়ে তারা রেস্টুরেন্ট খুলেছেন। তবে বসে খাওয়াকে নিরুৎসাহিত করতে তারা পার্সেল দিচ্ছেন। আবার অনলাইনে অর্ডার পেলে তাও সরবরাহ করছেন। তবে এর সঙ্গে রয়েছে শ্রমিক সংকটও। আগে এখানে ৩০ জনের মতো লোক কাজ করলেও এখন কাজ করছে ৫-৭ জন।

এদিকে সরেজমিন রাজধানীর মগবাজারের নিরিবিলি হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, নিউ স্টার হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে জাফরান রেস্তোরাঁ, ভর্তা ভাত রেস্তোরাঁ, ক্যাফে ডি তাজ রেস্তোরাঁ, তোপখানার ক্যাফে ঝিল, ক্যাফে বৈশাখী রেস্তোরাঁ, বৈশাখী রেস্টুরেন্ট, পশ্চিম আগারগাঁওয়ের কাঁচা লংকা রেস্টুরেন্ট ও কলাপাতা রেস্টুরেন্টসহ ঢাকার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ দেখা যায়।

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির হিসাব অনুযায়ী, দেশব্যাপী প্রায় ২৫ হাজার হোটেল ও রেস্তোরাঁ রয়েছে। এর ভেতর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় সাড়ে ৪ হাজার ও উত্তর সিটি করপোরেশনে রয়েছে সাড়ে ৩ হাজার হোটেল ও রেস্তোরাঁ। এর মাধ্যমে প্রায় আড়াই লাখ লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার রুহুল আমিন ভোরের কাগজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও মন্ত্রিপরিষদের ঘোষণা অনুযায়ী, খাবারের দোকানগুলো নিয়ম মেনে খোলা রাখার কথা বলা হয়েছিল। সেই মোতাবেক আমরা ২৪-২৬ মার্চ হোটেল ও রেস্তোরাঁ খোলা রেখেছিলাম। তবে এর মধ্যে পুলিশের লোকেরা কর্মচারীদের মারধর ও জরিমানা করাসহ হোটেল বন্ধ করে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, একে তো সব বন্ধ আর ভয় পেয়ে হোটেল শ্রমিকরা সব বাড়ি চলে যায়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় সবকিছু। তবে গত শনিবার ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা অনুযায়ী, স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখার কথা জানালে আমরা দেশব্যাপী হোটেল ও রেস্তোরাঁ খোলা রাখতে বলেছি। শ্রমিক সংকটই এখন মুখ্য বিষয়। এছাড়াও এ কয়েকদিনে শতাধিক কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। তাই এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে স্বল্প সুদে সরকারকে ঋণ দিতেও অনুরোধ জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App