×

মুক্তচিন্তা

আজকের পরিস্থিতির জন্য মানুষই দায়ী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২০, ০৫:৫০ পিএম

বিশ্বজুড়ে করোনার আতঙ্কে মানুষ স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি হয়ে আছেন। সরকারের নির্দেশে এবং মানুষ তার নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদেই সবাই তাদের নিজ নিজ কর্মক্ষেত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেন দ্রুত গতিতে। বন্ধ করে দিয়েছে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত, দোকানপাট ও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এমনকি মানুষ চলাচলও বন্ধ রয়েছে রাস্তাঘাটে। নিস্তব্ধ আজ বিশ্বের অলিগলি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ দিচ্ছে এই ভয়াবহ ঘাতক ভাইরাস করোনায়। প্রতিদিন বিভিন্ন দেশের মৃতের তালিকা, আক্রান্তের তালিকা পড়ছি আর আতঙ্কে বাস করছি সব সময়। সরকারের পক্ষ থেকে বহু নির্দেশনা জারি করা হচ্ছে।

সাধারণ মানুষের অবাধ চলাচল ঠেকাতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে রাজধানীর প্রতিটি এলাকায়। সচেতন মানুষ ঘরে বসে সব সতর্কতা অবলম্বন করছে প্রাণঘাতী করোনার ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে। করোনা এক অদৃশ্য, অচেনা শত্রু যার মোকাবিলা সত্যিই দুরূহ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশনা দিচ্ছে, সচেতন মানুষ মেনে চলছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কর্মচারী, ব্যবসায়িক, মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ সব সচেতন ব্যক্তি নিজেদের স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখেছেন। তবুও যেন মানুষ মনে মনে সংশয় পোষণ করে মুক্তির অজানা পথে হাঁটছে। হয়তো ভাবছে, মুক্তি মিলবে তো।

পৃথিবী উল্টোপথে হাঁটছে। আমি বিস্মিত হচ্ছি এই ভেবে, অদৃশ্য এক ভাইরাসের ভয়ে আমরা নিজেদের ঘরবন্দি করেছি। আমি আরো বিস্মিত হচ্ছি এই ভেবে, মক্কা ও মদিনা শরিফের জামাত নিষিদ্ধ, মসজিদে জামাতে সালাত আদায় করা নিষিদ্ধ। সত্যিই এরপরও মানুষের বোধগম্য হয় না, এসব কিসের আলামত?

মানুষের হাতে আজ আর কোনো ক্ষমতা নেই। মানুষের অর্থবল প্রকৃতির কাছে নত। হাজার মানুষের প্রাণ নাশ হওয়ার পরেও এখনো করোনা প্রতিরোধক কোনো টিকার ব্যবস্থা করতে পারেননি বিশ্বের জ্ঞানী-বিজ্ঞানীরা। মুখে মুখে গুঞ্জন, সারাদেশে আর্থিক সংকট দেখা দেবে প্রবলভাবে। পিছিয়ে যাবে দেশ। এর বিস্তার প্রভাব পড়বে দেশের জনজীবনের ওপর। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সামাজিক সব ক্ষেত্রে বিরাট ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এই অনিশ্চিত জীবপথে দাঁড়িয়ে মানুষ মুক্তির প্রহর গুনছে প্রতিনিয়ত। কেউ জানে না এই মুক্তির পথ কতটা দীর্ঘ।

‘উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে’- এই পর্যন্ত যতগুলো ভাইরাস বিশ্বের বহু জীবনকে পরাজিত করেছে মৃত্যুর কাছে, তার অধিকাংশের উৎপত্তি স্থান হলো চীন। তাদের অসামাজিক ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে মাশুল দিতে হচ্ছে মানুষকে তাদের জীবন দিয়ে। তাদের বিকৃত মস্তিষ্কের কার্যকলাপে সারাদেশের মানুষ আজ ভোগান্তিতে। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে দাঁড়িয়ে মানুষ পিছিয়ে যাচ্ছে সব ক্ষেত্রে। এর আগেও আরো কয়েকটি ভাইরাসে মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সেসব ভাইরাসে অনেক মানুষ জীবন দিয়েছে। আর্থিক সংকটে ভুগিয়েছে মানুষকে। হয়তো এভাবেই একের পর এক ভাইরাস দেখা দেবে। ধীরে ধীরে পৃথিবী ধ্বংসের মুখে গিয়ে দাঁড়াবে। আর তার জন্য দায়ী মানুষ নিজেরাই।

মানুষ জাতি আজ মানুষকেই ধ্বংসের মুখে, হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। মানব সভ্যতাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে মানুষকেই সচেতন হতে হবে। যদিও জানি আমরা, বর্তমানে এক ভয়াবহ অনিশ্চিত জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে চলছি করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে। আমাদের এই দুঃসময়ে প্রয়োজন সবার একতা। হতে হবে সচেতন এবং সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাতে হবে মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। অবশ্যই সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। গুজবে কান না দিয়ে অসচেতনহীন ব্যক্তিদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিতে হবে। একাকী এসব দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব নয়।

কবি ও লেখক, ঢাকা।

[email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App