সিলেটে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত আইসিইউ নেই
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২০, ১০:২৩ এএম
পৃথিবীজুড়ে একপ্রকার তাণ্ডব চালাচ্ছে কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস। ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে প্রতিদিনিই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। স্বল্প ক্ষমতার বাংলাদেশও মুক্ত নয় এর ভয়ঙ্কর কালো থাবা থেকে। সীমিত ক্ষমতার সর্বোচ্চ প্রস্তুতিই এসময় প্রয়োজন। তবে করোনা বিস্তারে দেশের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা সিলেটে এখনো করোনা প্রতিরোধের প্রস্তুতি সন্তোষজনক নয়।
করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা কার্যক্রম জোরেশোরে চললেও সিলেটের চিকিৎসা-প্রস্তুতি এখনো নাজুক অবস্থাতেই রয়েছে। ডাক্তার-নার্সদের জন্য পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট) এসে পৌঁছালেও, এখনো করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যায়নি। ফলে সন্দেহভাজন কেউ হাসপাতালে ভর্তি হলে ঢাকাস্থ আইইডিসিআরের কর্মীদের প্রতীক্ষায় থাকতে হয় সিলেটের ডাক্তারদের। করোনা আক্রান্তদের আইসোলেশন ইউনিট হিসেবে ঘোষিত ১০০ শয্যার শহিদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত আইসিইউ সুবিধা। তাই আক্রান্ত কেউ ভর্তি হলেও নিশ্চিত করা যাবে না কাক্সিক্ষত চিকিৎসা সেবা। তবে এসব সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রস্তুতিকে পর্যাপ্তই বলছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম। আর সিভিল সার্জনের বক্তব্য, আপৎকালীন দেখা যাবে কী করা যায়।
সোমবার সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে সিলেটের করোনা প্রস্তুতির এমন চিত্র। এ সময় সিলেটের করোনা প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল, সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, চিকিৎসকদের পিপিই আসতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত যা এসেছে তা যথেষ্ট। তবে করোনা পরীক্ষার কোনো টেস্টিং কিট পাওয়া যায়নি। এছাড়া কিট দিয়ে পরীক্ষা শতভাগ নির্ভুল নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আইসোলেশন ইউনিটে আইসিইউ সুবিধা নিয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, এখনো কাউকে আইসিইউতে নেয়ার প্রয়োজন পড়েনি। তবে যদি কখনো এমন প্রয়োজন হয় তখন দেখা যাবে। প্রয়োজনে আপৎকালীন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাহায্য নেয়া হতে পারে বলে জানান তিনি।
এসময় জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম জানান, সিলেটের আরো দুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে তৈরি রাখা হয়েছে প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য। এছাড়া সিলেটের সব বেসরকারি হাসপাতালকেও যুক্ত করা হবে প্রয়োজনে।জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, আমরা সচেতনতার সৃষ্টির লক্ষ্যে জোর প্রচারণা চালাচ্ছি। ইতোমধ্যেই বিভাগীয় পর্যায় থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত মাল্টি সেক্টরাল কমিটি করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি বৈঠক করা হয়েছে প্রতিটি পর্যায়ে।
সচেতনতা বৃদ্ধিতে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এছাড়া কয়েকটি মোবাইল টিম করে প্রবাসীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতে কাজ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, জেলার প্রতিটি হাটবাজার ও সিলেট নগরীর বিপণিবিতানগুলোকে সন্ধ্যার পর নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান ব্যতীত বাকি দোকানপাট খোলা না রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। জনসমাগম যাতে কম হয় সেজন্য সভা সমাবেশ নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এছাড়া, সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে বিদেশ ফেরতদের।