×

জাতীয়

১০ দিনের ছুটিতে দেশ, বাড়ির টানে লোকারণ্য কমলাপুর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২০, ০৯:৪১ পিএম

১০ দিনের ছুটিতে দেশ, বাড়ির টানে লোকারণ্য কমলাপুর

১০ দিনের ছুটি পেয়ে বাড়ির পথে

করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে টানা ১০ দিনের ছুটি ঘোষনা করেছে সরকার। আর এ ছুটিতে পরিবার নিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য সোমবার (২৩মার্চ) সকাল থেকে কমলাপুর, বিমানবন্দর রেলস্টেশনসহ রাজধানীর সবকটি বাস টার্মিনাল ও সদরঘাটে বাড়ি ফেরার টিকেট কাটতে হাজারো মানুষের ভিড়। সরজমিন দেখা যায়, সকাল থেকে কমলাপুর রেল স্টেশনে হাজারো মানুষের ভিড়। বিকেলে সে ভিড় রুপ নেয় ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার ভিড়ে। প্রতিটি কাউন্টারে দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষ লম্বা লাইনে দাড়িয়ে টিকেটের অপেক্ষায়। এদিকে অগ্রিম প্রস্তুতি না থাকায় হিম সিম খেতে হচ্ছে রেলওয়েকে। রেল সর্বসাপেক্ষে ২৫-৩০ হাজার দুরপাল্লার টিকেট বিক্রি করলেও চাহিদা অন্ত ৫০ হাজার বলে মনে করছে রেলকতৃপক্ষ। সেকারণে সবাইকে টিকেট দেয়া সম্ভব হবে না বলে জানান স্টেশন মাস্টার।

সোমবার (২৩মার্চ) কমলাপুরে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষমান যাত্রী সরকারী কর্মী নাজিম উদ্দীন বলেন, আগামী ২৫ মার্চ কোন রকম অফিসে হাজিরা দিয়ে দেশের বাড়ি চট্টগ্রামে পরিবার সহ ফিরতে ২৫ মার্চের টিকেট কাটতে এসেছেন তিনি। কিন্তু এত মানুষের ভিড় যে টিকেট পাবেন কিনা তা নিয়ে তার সন্দেহ রয়েছে। যদি না পান পরের দিনের জন্য ট্রাই করবেন বলে জানান নাজিম উদ্দীন। আবার মহিলা কাউন্টারে দাড়ান সরকারী প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী নাজমা কাজল বলেন, মাকে নিয়ে জামালপুরযাবার জন্য তিনি দুপুর ১টায় চলে এসেছেন টিকেট কাটতে । বহু কষ্টে তিনি সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা নাগাদ টিকেট হাতে পেয়েছেন। তিনি ২৫ তারিখে ট্রেনে বাড়ি যেতে পারবেন বলে উল্লাস প্রকাশ করে বলেন, ঈদেও এত দিনের ছুটি হয়না। এবার করোনার আতঙ্ক থাকলেও বাড়িতে সবার সঙ্গে ১০ দিন কাটাতে পারবো ভেবে ভাল লাগছে। অনেকে আবার রাতে স্টেশনে থেকে পরের দিনের টিকেটের জন্য লাইনে দাড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান।

এদিকে সবাইকে টিকেট দেয়া সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন স্টেশন মাস্টার এন সি সাহা। সোমবার রাত সাড়ে ৮ টা নাগাদ তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, হঠাৎ সরকার টানা ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করার ট্রেনের টিকেট কাটতে বিকেল থেকে প্রচুর ভিড় হচ্ছে। সবারই ২৫ বা ২৬ তারিখ সকালের টিকেট চাই। এত ভিড় যে এটা ঈদের ছুটিকেও হার মানিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কিন্তু সকলকে টিকেট দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।

রেলসূত্রে জানা গেছে, এমনিতে প্রতিদিন কমলাপুর থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে মোট ১৩৬ টি ট্রেন আসা যাওয়া করে। এর মধ্যে আন্ত:নগর ট্রেনের সংখ্যা ৪৩ টি। প্রতিদিন মোট প্রায় ৭০-৭২ হাজার যাত্রী ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতয়াতকরে থাকে। এর মধ্যে অর্ধেক অর্থাৎ ৩৫ হাজারের মত টিকেট কাউন্টার থেকে দেয়া হয় আর অর্ধেক টিকেট অনলাইন ও ইটিকেটিং বা অ্যাপসের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। সেকারণে প্রতিদিন দুরপাল্লার ৪৩টি ট্রেনের জন্য মাত্র ৩০-৩৫ হাজার যাত্রীকে কাউন্টার থেকে টিকেট দেয়া সম্ভব হয়। আবার এর মধ্যে ৫-১০ শতাংশ সংরক্ষিত থাকে রেলকর্মী ও ভিভিআইপিদের জন্য। সেকারণে সবাইকে কাঙ্খিত টিকেট দেয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছে রেলকতৃপক্ষ। আবার গত কয়েকদিন যাবৎ বাস চলাচল কমে গেলেও গতকাল রাজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদসহ সব কটি বাস টার্মিনালে ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। সবাই ১০ দিনে টানা ছুটিতে ২৫ তারিখে বাড়ি ফেরার টিকেট প্রত্যাশী। অবার সদরঘাট লঞ্চ ঘাটেও একই চিত্র। সেখানেও অগ্রিম টিকেট কাটাার জন্য যাত্রীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে।

উল্লেখ্য, কাল মঙ্গল ও পরশু বুধবার অফিস-আদালত খোলা থাকলেও এরপর ছুটি দাঁড়াচ্ছে একটানা ১০ দিন। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ছুটি, তার পরের শুক্র-শনি দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকছে। এরপর পাঁচ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে আবার ৩ ও ৪ এপ্রিল শুক্রও শনিবার হওয়ায় সাপ্তাহিক ছুটি। সেকারণে ২৫ মার্চ অফিস করে টানা ১০ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারী চাকুরীজীবিরা। যা ঈদের ছুটিকেও হার মানিয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালের ঈদে মোট ৯দিন ছুটি ছিল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App