×

জাতীয়

নিত্যপণ্যের বাজার স্বাভাবিক রাখতে কঠোর সরকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২০, ১১:০৬ এএম

করোনা আতঙ্কে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পরিমাণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কেনাকাটা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মুদি দোকানি থেকে শুরু করে সুপারশপগুলো। সপ্তাহের ব্যবধানে সুপারশপগুলোতে বিক্রি বেড়েছে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। পাড়া মহল্লার মুদি দোকানগুলোর বিক্রি বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাড়িয়ে দিয়েছে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আলুর দাম। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশে অভিযানে নেমেছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। এই অভিযানের কারণে কিছুটা স্থিতিশীল নিত্যপণ্যের বাজার। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

মুদি দোকানি ও সুপারশপগুলোতে কথা বলে জানা গেছে, আতঙ্কিত হয়ে ভোক্তারা সবচেয়ে বেশি কিনছে চাল, ডাল, আটা, ময়দা, ডিম, সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মাছ-মাংস, গুঁড়োদুধ, সাবান, লিকুইড হ্যান্ডওয়াশের রিফিল। কেনাকাটার বাড়তি চাপের কারণে বেশিরভাগ পণ্যেরই দাম বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি অস্থিরতা তৈরি হয়েছে চালের বাজারে। প্রকারভেদে প্রতি কেজি চাল ২-৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। ফলে প্রতি কেজি মোটা চাল ৩৮-৪২ টাকা, মিনিকেট ৫২-৫৫ টাকা, নাজির ৫৬-৬৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এছাড়া এক হালি ডিমে ৪ টাকা বেড়ে ৩৬ টাকা, পেঁয়াজের কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়ে ৫০-৫৫ টাকা, খোলা আটায় ২-৪ টাকা বেড়ে ৩২ টাকা, গরুর মাংসে ৪০-৫০ টাকা বেড়ে ৫৭০-৫৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।

এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মুদি দোকানিরা খুবই সতর্ক। বিশেষ করে ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা। গতকাল রবিবার সকালে রাজধানীর বড় পেঁয়াজের আড়ত শ্যামবাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। একদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে প্রায় ২০-২৫ টাকা। চালের দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, মিলাররা গত বুধবার যে দামে চাল বিক্রি করেছে বৃহস্পতিবার তার চেয়ে বেশি দাম নিচ্ছে। কারওয়ান বাজারের বাদশা রাইস এজেন্সি বিক্রেতা শফিক জানান, একদিনের ব্যবধানে মিলাররা প্রতি বস্তায় ৫০-১০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ গত বুধবার খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, চালের কোনো সংকট নেই। ফলে যারা বেশি দামে চাল বিক্রি করবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যাত্রাবাড়ীর মুদি দোকানি আব্দুর কাউয়ুম ভোরের কাগজকে বলেন, দোকানে প্রতিদিন ১২-১৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়। কিন্তু করোনা আতঙ্কে বাড়তি কেনাকাটার কারণে গত ২-৩ দিন তার দোকানের বিক্রি ২০-২৫ হাজার টাকায় উঠেছে। এছাড়া যারা সপ্তাহে ৪-৫ কেজি চাল কিনতো, তারা এক থেকে দুই বস্তা (প্রতি বস্তা ৫০ কেজি) করে চাল কিনেছে। এক দুই কেজির জায়গায় পেঁয়াজ কিনেছে ৫-১০ কেজি। এ কারণে দ্রুত চাল ও পেঁয়াজের স্টক ফুরিয়েছে।

রামপুরা, সেগুনবাগিচা, কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানের মুদি দোকানিরা জানিয়েছেন, ক্রেতাদের বাড়তি কেনাকাটার কারণে গত দুই-তিনদিনে অনেকের বিক্রি দ্বিগুণ হয়েছে। একই অবস্থা সুপারশপের। রামপুরা ও সেগুনবাগিচা ও মগবাজারে কয়েকটি সুপারশপের আউটলেটের বিক্রয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিন সন্ধ্যার পর থেকে ক্রেতার চাপ বাড়তে শুরু করে। ভোগ্যপণ্যের কিছু আইটেম আছে যেগুলো দ্রুত বিক্রি শেষ হয়েছে। মাঝে মধ্যে চাপ সামাল দেয়া কষ্টসাধ্য হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App