×

পুরনো খবর

করোনার বিস্তার ঠেকানোর ব্যবস্থা নেই গণপরিবহনে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২০, ১০:০৫ এএম

করোনার বিস্তার ঠেকানোর ব্যবস্থা নেই গণপরিবহনে

গণপরিবহনে করোনা ঝুঁকি।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে গণপরিবহনে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও বাস্তবে সেগুলোর দেখা মিলছে না। করোনা আতঙ্কে দেশের সড়ক, নৌ ও রেলপথে যাত্রী কমেছে অনেক। কিন্তু এর মধ্যেও যারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন, তাদের নিরাপত্তা সচেতনতায় রয়েছে মারাত্মক ঘাটতি। যানবাহন জীবাণুমুক্ত করার নামেও চলছে দায়সারা কর্মকাণ্ড।

গত শুক্রবার দেশের প্রধান নদীবন্দর সদরঘাটে লঞ্চ মালিক ও বিআইডব্লিউটিএর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নৌপথে করোনার বিস্তার রোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এসবের মধ্যে ছিল লঞ্চে ওঠার আগে হাত ধুতে হবে যাত্রীদের। আর যাত্রী নামিয়ে দেয়ার পর প্রত্যেক নৌযানকে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। ঘাটে প্রবেশের সময়ই মেপে নেয়া হবে যাত্রীর তাপমাত্রা। কিন্তু বাস্তবে এসবের কোনোটিই ঠিকমতো বাস্তবায়িত হয়নি।

রবিবার সদরঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকটি গেট দিয়ে যাত্রী প্রবেশ করলেও একটি গেটে ২ জন কর্মী যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন এবং হাতে জীবাণুনাশক স্প্রে করে দিচ্ছেন। ওই কর্মীদের এপ্রোন, হ্যান্ডগ্লাভস- এমনকি মাস্ক ব্যবহার করতেও দেখা যায়নি। অন্যদিকে সকালে যাত্রী নামিয়ে কয়েকটি লঞ্চকে মাঝনদীতে ধোয়ামোছা করতে দেখা গেলেও প্রতিদিনের মতো নদীর পানিই ব্যবহার করতে দেখা গেছে তাদের। এমভি ফারহান লঞ্চের কর্মী সুমন জানান, ধোয়ার পর পানির সঙ্গে স্যাভলন মিশিয়ে তারা লঞ্চে ছিটিয়েছেন। লঞ্চের মালিকপক্ষ এমনটিই করতে বলেছে বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির জানান, নিয়মগুলো মানাতে তারা লঞ্চ মালিক ও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন ও প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে এখনো অনেকে সেভাবে সায় দিচ্ছেন না। ফলে কঠোর হওয়ার কথা ভাবছেন তারা। তবে যাত্রীদেরও এ বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক যাত্রী ঘাটে এসেই লঞ্চে উঠতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আমাদের যন্ত্রপাতি ও লোকবল কম। যাত্রীরা সহায়তা না করলে নিয়ম পালন করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে।

একই চিত্র দেখা গেছে সড়ক পরিবহনেও। সায়েদাবাদ থেকে গাজীপুরের চলাচলকারী তুরাগ পরিবহনের চালকের সহকারীকে মুখে মাস্ক লাগিয়ে থাকতে দেখা গেলেও যাত্রীদের গায়ে হাত দিয়েই বাসে তুলতে দেখা গেছে তাকে। কোথাও কোনো যানবাহনে জীবাণুনাশক স্প্রে করতে দেখা যায়নি। তবে সচেতনতা বাড়াতে পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কিছু লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্থানে।

গত ১৪ মার্চ এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সায়েদাবাদ, গুলিস্তান-টিবিসি রোড, ফুলবাড়িয়া ও মহাখালী বাস টার্মিনালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় অভিযান চালানোর কথা। এছাড়া প্রত্যেক গাড়ি জীবাণুনাশক দিয়ে পরিচ্ছন্ন করা, দূরপাল্লার গাড়ির টিকেট কাউন্টারে টিস্যু পেপার এবং হেক্সাজল বা সেনিটাইজার রাখা, যাত্রীদের ব্যবহারিত কম্বল ও সিট কভার প্রতিবার ধুয়ে ফেলাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয়। তবে সেগুলোর বাস্তবায়ন দেখা গেছে খুবই সামান্য।

এ বিষয়ে বিহঙ্গ পরিবহনের চালক হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন শত শত যাত্রী পরিবহন করি। কতবার বাস পরিষ্কার করব? মালিকরা তো আমাদের এমন বরাদ্দ দেয় না। হ্যান্ড স্যানিটাইজারও অনেক দাম। সরকার বিনা পয়সায় দিলে আমরা তা যাত্রীদের দিতে পারব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App