গোপনে নথিপত্র সংগ্রহ করে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রকৌশল অফিসের এক কর্মকর্তাকে শোকজের (কারণ দর্শানো) ও বদলির নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার (২২ মার্চ) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শোকজকৃত ঐ কর্মকর্তার নাম আনিছুর রহমান । তিনি প্রকৌশল অফিসের শাখা কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুলের সহকারী (পিএস) হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত। জানা যায়, শনিবার বেলা এগারটার দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল দপ্তরের নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগপত্রে তিনি লেখেন, শুক্রবার (২০ মার্চ) আনুমানিক সকাল ১০ টায় আমার অফিসের কর্মচারী মিন্টু শেখ অফিসের সামনে এসে দেখে যে, অফিসের দোতলার কলাপসিবল গেটটি বন্ধ, কিন্তু তালাবদ্ধ নাই। তখন সে ভয় পেয়ে ওপর উঠে দেখে গেট আটকানো কিন্তু তালা ভেতরের দিকে আছে। তখন সে গেটটি খুলে ভিতরে ঢুকে দেখে যে, আনিছুর রহমান ভিতরে টেবিলে বসে একটি ফাইল উল্টা-পাল্টা করছেন। তাকে দেখে আনিছ ভীত হয়ে উঠে। এসময় মিন্টু দেখতে পায় আনিছের রুমের দিক দিয়ে আমার রুমের স্লাইডিং দরজাটি খোলা (অথচ এটা লক করা ছিল)। লিখিত অভিযোগে টুটুল আরো জানান, ‘আনিছুর কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে আমার অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সংগ্রহ করে সেটার তথ্য বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ করে থাকেন। ইতিপূর্বে সে এ ধরনের কাজ করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার হাতেনাতে ধরাও পড়েছে। আমি অফিসে খুবই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমি আমার মোটরসাইকেলের চাবি আর ব্যাংকের চেক আনতে আমার অফিসে গিয়েছিলাম। চাবি এবং চেক নিয়ে আমি সেখান থেকে চলে আসি। আমি স্যারের কক্ষে ঢুকি নাই। কর্মচারী মিন্টু আর মোর্শেদ টুটুল স্যারের রুমে ঢুকেছিল ফ্রিজ থেকে কিছু খাদ্য সামগ্রী বের করতে।’ এদিকে এ ঘটনায় আনিছুর রহমানকে প্রকৌশল অফিস থেকে বদলি করে শেখ রাসেল হলে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফ বলেন, ‘প্রধান প্রকৌশলীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে বদলি এবং শোকজ করা হয়েছে। অতি দ্রুত শোকজের নোটিশের জবাব চাওয়া হয়েছে। শোকজের জবাবের ভিত্তিতে তার বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৭ টাকার মেগা উন্নয়ন প্রকল্পে পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে সম্প্রতি বিভিন্ন হুমকির সম্মুখিন হন ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল। যার প্রেক্ষিতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ইবি থেকে রিজাইন নেয়ার কথাও জানান তিনি। পরবর্তীতে গত ১৮ মার্চ জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ইবি থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন প্রধান প্রকৌশলী।